গত বছরের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট হলে আর টুইট করবেন না তিনি।
কেন?- তার উত্তর ছিল, “এটা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যায় না।”
কিন্তু এক বছরে আড়াই হাজারের বেশি টুইটের পর এখন তার পক্ষে ট্রাম্পের যুক্তি- আধুনিককালের প্রেসিডেন্টতো এমনই হবে।
এই উত্তরও টুইটারেই দেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার বছর পূর্তিতে তার টুইটারপ্রীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি, যাতে তার টুইটগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
ট্রাম্পের টুইটগুলোর ৩২ শতাংশই করা হয় সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টার মধ্যে। এই সময়ে তার পছন্দের টিভি শোগুলো প্রচার হয়।
সবচেয়ে বেশি ৩০৯টি টুইট করা হয় সকাল ৮টায়, সকাল ৭টায় করা টুইটের সংখ্যা সামান্য কম ৩০৫টি। সকাল ৯টায় করা টুইট সংখ্যা ২২৮টি, সকাল ৬টায় করা টুইট ২১৭টি।
দিনের বেলায় ৯টার পর থেকে ট্রাম্পের টুইট সংখ্যা কমতে দেখা যায়, তা আবার বাড়ে বিকাল ৪টা থেকে। এরপর সবচেয়ে বেশি টুইট হয় সন্ধ্যা ৬টায়, ১৫০টি।
রাত ১২টার পর টুইট সংখ্যা কমতে শুরু করলেও কোনো ঘণ্টায়ই বিরতি ছিল না। ট্রাম্পের কাছ থেকে সবচেয়ে কম টুইট এসেছে ভোররাত ৪টায়, ৫টি।
টুইটগুলোর মধ্যে ১ হাজার ২৩৮ টিতেই সমালোচার তীরে কাউকে বিদ্ধ করেছেন ট্রাম্প; কারও প্রশংসা করে টুইট হয়েছে ৫২৭টি।
এসব টুইটে সমালোচনার প্রধান লক্ষ্য ছিল সংবাদ মাধ্যম; ১৯৬টি টুইট করেছেন তার বহুল ব্যবহৃত ফেইক নিউজ লিখে, ১৪৭টি টুইটে নাম ধরে কোনো সংবাদ মাধ্যমকে আক্রমণ করেন তিনি।
গণমাধ্যমের উপর ট্রাম্পের টুইট আক্রমণ শিখরে উঠেছিল গত বছরের ২৮ মে, সেদিন সকালে ১২ মিনিটে ৬টি টুইট করেছিলেন তিনি। তার ঠিক আগেই গণমাধ্যমে খবর এসেছিল যে ট্রাম্পজামাতা জার্ড কুশনার রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেছিলেন।
সমালোচনামূলক ১০০টি টুইট পূর্বসূরি বারাক ওবামা, তারা স্বাস্থ্যনীতি ও তার কর্মকর্তাদের নিয়ে করেছেন ট্রাম্প; ৭৯টি টুইটের লক্ষ্যবস্তু ছিলেন তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন।
এত টুইটের মধ্যে প্রথম সাত মাসে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে নিয়ে ট্রাম্পের কোনো টুইট ছিল না, যা অনেককে অবাক করেছে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার সাত মাস পর উনকে নিয়ে প্রথম টুইটটি ছিল আবার প্রশংসাসূচক। তবে এক মাস পরই উনকে ‘পাগল’ বলে টুইট আসে ট্রাম্পের।
টুইটারে ট্রাম্পের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন টিভি চ্যানেল এমএসএনবিসির উপস্থাপক মিকা ব্রাজেজিনস্কিসহ অনেকে; ছাড় পাননি সাবেক রিপাবলিকান গভর্নর হলিউড তারকা আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারও।
তবে অবাক করারা মতো ব্যাপার হচ্ছে টু্ইটে ট্রাম্পের নিন্দার চেয়ে প্রশংসাই পেয়েছে বেশি মানুষ; ২৪০ জন ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সৌভাগ্য ঘটেছে।
সবচেয়ে বেশি ৭৯টি প্রশংসাসূচক টুইট ট্রাম্প করেছেন প্রতিরক্ষা বাহিনী কিংবা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে।
সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে ফক্স নিউজ পেয়েছে ট্রাম্পের প্রশংসা; ৩৫টি টুইট হয়েছে ফক্স নিউজের অনুষ্ঠান, আলোচক কিংবা উপস্থাপকদের প্রশংসায় ভাসিয়ে।
জামাতা কুশনারকে প্রশংসা করেও একটি টুইট করেন ট্রাম্প। টুইট করেন ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়েও। সূত্র : বিডিনিউজ
আপনার মতামত লিখুন :