ডেস্ক রিপোর্ট : জেরুজালেম নিয়ে নতুন করে আন্তর্জাতিক টানাপড়েন শুরুর প্রেক্ষাপটে মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির ডাকা বিশেষ সম্মেলনে যোগ দিতে ইস্তাম্বুলে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
আরব দেশগুলোর আহ্বান উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেয়ায় ওআইসির বর্তমান চেয়ার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোগান জোটের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের এই সম্মেলন ডেকেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গতকাল রোববার এক ঢাকায় এক ব্রিফিংয়ে জানান, বুধবারের ওই সম্মেলনে যোগ দিতে সোমবার (আজ) ঢাকা থেকে রওনা হবেন রাষ্ট্রপতি হামিদ।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এই সফরে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে থাকবেন। মূল সম্মেলনের আগে মঙ্গলবার সদস্য দেশগুলোর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বৈঠকে বসবেন।
মাহমুদ আলী বলেন, এই সম্মেলনের পরের সপ্তাহেই তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বাংলাদেশ সফরে আসছেন। এ কারণে রাষ্ট্রপতির ইস্তাম্বুল সফর বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুই দিনের সফরে ১৯ ডিসেম্বর ঢাকা পৌঁছাবেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী।
জেরুজালেম মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদি- সব ধর্মের অনুসারীদের কাছেই পবিত্র নগরী। ইসরাইল বরাবরই জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী বলে দাবি করে আসছে। অন্যদিকে পূর্ব জেরুজালেমকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী করতে চান ফিলিস্তিনের নেতারা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ৬ ডিসেম্বর এক ঘোষণায় জানান, জেরুজালেমকে তিনি ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করতে পররাষ্ট্র দফতরকে নির্দেশ দিচ্ছেন।
তার ওই ঘোষণার পর ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়ে যায়। ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেয় আরব ও ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশ এবং জাতিসংঘ।
বাংলাদেশের একই ধরনের অবস্থানের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার বলেন, আমেরিকার রাষ্ট্রপতি সুয়োমোটো যে ঘোষণা দিয়েছেন, আমার কাছে মনে হয় এটা ইসলামিক ওয়ার্ল্ডে কারো কাছে গ্রহণযোগ্য না। কারণ এখানে জাতিসংঘের রেজুলেশন রয়েছে। রেজুলেশন অনুযায়ী কিন্তু পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, জেরুজালেমের স্বীকৃতির বিষয়টি অবশ্যই জাতিসংঘের রেজুলেশনের কাঠামোর মধ্যে রাখতে হবে।
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর যে সীমানা ছিল, সে অনুযায়ী জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থানের বিষয়টিও ওই বিবৃতিতে তুলে ধরা হয়।
সূত্র : মানব কণ্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :