মুসবা তিন্নি: [২] নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র হল পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক একটি সূত্র, যা বলে, ‘প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।’ এই তত্ত্ব প্রকৃতির একটি নির্দিষ্ট প্রতিসাম্যকে নির্দেশ করে, যেখানে দুটি পরস্পরবিরোধী শক্তি একে অপরের বিরুদ্ধে কাজ করে। সূত্র: ডেইলি মেইল, ইয়ন
[৩] তবে প্রকৃতির সর্বত্র এই তত্ত্ব সমানভাবে কাজ করে না। বিশেষ করে তরলে পদার্থের মধ্য দিয়ে চলাচলের ক্ষেত্রে এই সূত্র পুরোপুরি কাজ করে না। যেমন মানুষের শুক্রাণু। এটি লেজের সাহায্যে ঘন তরল পদার্থের মধ্য দিয়ে পথ করে নিয়ে এগিয়ে চলে। কিন্তু এই এগিয়ে চলার পথে শুক্রাণু নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র মেনে চলে না।
[৪] জাপানের কিয়োটো ইউনিভার্সিটির গণিতজ্ঞ কেন্তা ইশিমতো ও তার সহকর্মীরা গবেষণা করে দেখেন, শুক্রাণুসহ একই ধরনের চলৎশক্তিসম্পন্ন বস্তু বা অণুজীবগুলো কীভাবে মানুষের শরীরের ঘন তরলের ভেতর দিয়ে সাঁতার কাটে। বিশেষ করে, এসব ঘন তরলে সাঁতার কাটার ক্ষেত্রে এসব তরলের ঘনত্ব শুক্রাণুর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারত। অন্তত পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্ব তাই বলে। সে বিষয়টি জানতেই নানা প্রকার গবেষণা করেন তারা।
[৫] গবেষণায় তারা খুঁজে পান, শুক্রাণুর ফ্ল্যাজেলা বা লেজ তরলের সাথে মিথস্ক্রিয়া করার জন্য তাদের আকৃতি পরিবর্তন করে এজেন্টকে এগিয়ে দেয়। শুক্রাণু তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদ্ধতিটি নিউটনের গতির নিয়মকে অস্বীকার করে।
[৬] দলটি গবেষণার জন্য মানুষের শুক্রাণু কোষ এবং শেত্তলা (শ্যাওলা জাতীয় উদ্ভিদ) ব্যবহার করেন। এদের উভয়েরই ফ্ল্যাজেলা রয়েছে যা তাদের তরলের মধ্য দিয়ে চলতে সাহায্য করে, নিউ সায়েন্টিস্টে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে।
[৭] বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের কোষগুলো নিজের শক্তি নিজেই উৎপাদন করে। মানুষের শুক্রাণুর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ঘন আঠালো তরলের ভেতর দিয়ে চলাফেরার সময় শুক্রাণুও নিজের অভ্যন্তরীণ শক্তির সাহায্যে এগিয়ে যায়। এই প্রক্রিয়ায় শুক্রাণু একপ্রকার বল প্রয়োগ করেই এগিয়ে যায়। কিন্তু বিপরীতে সমান বল শুক্রাণুকে বাধা দেয় না। সম্পাদনা: এম খান
এমটি/এসএ