বুলগেরিয়ার প্রখ্যাত ভবিষ্যৎদ্রষ্টা বাবা ভাঙ্গাকে ঘিরে বহু বছর ধরে বিশ্বজুড়ে আগ্রহ ও কৌতূহল বিরাজ করছে। ‘বালকানের নস্ট্রাদামুস’ হিসেবে পরিচিত এই অন্ধ সাধকের নামের সঙ্গে বহু ভবিষ্যদ্বাণী জড়িয়ে আছে। যদিও অনেক ভবিষ্যদ্বাণীর প্রামাণ্য যাচাই করা যায় না, জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে এগুলো অতি প্রভাবশালী। বিশেষ করে ২০২৬ সালের সম্ভাব্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানা কল্পনাপ্রসূত কাহিনি তৈরি হয়েছে। চলুন জেনে নিই তার নামে সবচেয়ে আলোচিত ১০টি ভবিষ্যদ্বাণী:
১. তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইঙ্গিত
অনেক সূত্রের দাবি, বাবা ভাঙ্গা ২০২৬ সালে একটি বড় যুদ্ধের সম্ভাবনা উল্লেখ করেছেন। তবে কোন দেশ জড়াবে, কখন শুরু হবে বা কীভাবে ছড়িয়ে পড়বে—এসব বিষয়ে তার বক্তব্য অস্পষ্ট।
২. ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়
প্রচলিত ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, ২০২৬ সালে প্রবল ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাত এবং চরম আবহাওয়া বিশ্বের একাংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে নির্দিষ্ট পরিসংখ্যানের কোনো প্রামাণ্য উৎস নেই।
৩. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আধিপত্য
একটি ভবিষ্যদ্বাণীতে বলা হয়, ২০২৬ সালে এআই এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে যেখানে মানবজীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণে আসবে। এটি মূলত আধুনিক সমাজের উদ্বেগের প্রতিফলন।
৪. ভিনগ্রহবাসীর সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ
কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০২৬ সালে মানবজাতি প্রথমবারের মতো ভিনগ্রহের প্রাণের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। বিশাল মহাকাশযান পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে। তবে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
৫. রাশিয়া থেকে “নতুন বিশ্বনেতা”
অনেকে মনে করেন, বাবা ভাঙ্গা রাশিয়া বা রাশিয়ার কোনও অঞ্চল থেকে একজন শক্তিশালী নেতার উত্থান দেখেছেন, যাকে “বিশ্বের অধিপতি” বলা হয়। তবে পরিচয়, সময়কাল বা প্রেক্ষাপট অস্পষ্ট।
৬. অর্থনৈতিক বিপর্যয়
মিডিয়ার তথ্যমতে, তিনি ২০২৬ সালে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ধসের কথা বলেছিলেন যেমন মুদ্রাব্যবস্থা ভেঙে পড়া, ব্যাঙ্কিং সংকট, মূল্যস্ফীতি। তবে সরাসরি উদ্ধৃতি নেই।
৭. সোনার বাজারে অস্বাভাবিক ওঠানামা
ভাঙা সতর্ক করেছিলেন যে ২০২৬ সালে সোনার দাম অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করবে। কেউ বলেন দাম কমবে, কেউ বলেন আকাশছোঁয়া হবে। তবে যাচাইযোগ্য সূত্র নেই।
৮. জলবায়ু পরিবর্তনের বড় মোড়
২০২৬ সাল নাকি জলবায়ু বিপর্যয়ের মোড় পরিবর্তনের বছর হবে। বন্যা, খরা, তীব্র আবহাওয়া এবং বাস্তুতন্ত্রে বিপর্যয়। আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক সতর্কবার্তার সঙ্গে মিলিয়ে এটিকে ব্যাখ্যা করা হয়।
৯. এশিয়া ও চীনের প্রভাব
কিছু ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ২০২৬ সালে চীন বা অন্যান্য এশীয় শক্তি বিশ্বব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রভাব বিস্তার করবে, সম্ভবত তাইওয়ান ইস্যু বা দক্ষিণ চীন সাগরের প্রেক্ষাপটে।
১০. সামাজিক অস্থিরতা ও প্রযুক্তিগত বিপর্যয়
পরিবেশগত সংকট, স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিশ্বে অভিবাসন ও সামাজিক অশান্তির কথা বলা হয়। বহু বিচ্ছিন্ন বক্তব্য মিলিয়ে এই ভবিষ্যদ্বাণী তৈরি হয়েছে।
যদিও এসব ভবিষ্যদ্বাণী জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, অধিকাংশেরই নির্ভরযোগ্য উৎস নেই। তাই এগুলোকে গবেষণার বস্তু নয়, কৌতূহল ও লোককথার আলোকে দেখা উচিত।
সূত্র: জনকণ্ঠ