সাকিব আল হাসানকে আওয়ামী লীগে যোগ না দিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। রাজনীতিতে যোগ না দিলে টাইগার অলরাউন্ডার এখন সম্মানের সঙ্গে ঢাকার রাজপথে বিচরণ করতেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (৩ মে) ক্রীড়া সংগঠকদের নতুন সংগঠন বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এসব মন্তব্য করেন মেজর হাফিজ।
আওয়ামী লীগের হয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সাকিব। এরপরের গল্পটা সবার জানা।
রাজনীতিতে যোগ দেয়ার আগে অবশ্য পরামর্শ নেয়ার জন্য মেজর হাফিজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন সাকিব। তিনি টাইগার অলরাউন্ডারকে রাজনীতিতে না আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। অন্তত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যেন না জড়ান, সে সতর্ক বার্তাও দিয়েছিলেন।
সে দিনের স্মৃতিচারণ করে মেজর হাফিজ বলেন, ‘সাকিব আল হাসান আমার বাসায় এসেছিলেন একদিন। আমার পরিচিতি সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা তাকে আমার বাসায় নিয়ে এসেছিলেন। অনেক কথাবার্তার এক ফাঁকে তাকে একটা উপদেশ দিয়েছিলাম, যেটি সে গ্রহণ না করে বিপদে পড়েছে। তাকে বলেছিলাম, যা করো না করো আওয়ামীলীগ কখনো করবা না। সে এটা শুনে একটু বিমর্ষ হলো। তার ধারণা সে আওয়ামী লীগে গেলে মন্ত্রী হবে, অনেক কিছু হবে।’
হাফিজ যোগ করেন, ‘তাকে বলেছিলাম, জাতীয় দলে খেলা অবস্থায় রাজনীতিতে যোগ দেয়া এটি ঠিক আমার মনঃপুত হচ্ছে না। তোমার অনেক নাম রয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে তোমাকে দেখছি। তুমি রাজনীতিতে এখন যেও না। আর গেলেও এ দলটির (আওয়ামী লীগের) বেশিদিন আয়ু নেই। সে চুপচাপ থেকে খানিকক্ষণ পর চলে গেল। যদি সে আমার কথা শুনতো, এ ধরনের রাজনীতিতে না যেত। আজকে সে অনেক সম্মানের সঙ্গে ঢাকার রাজপথে বিচরণ করতে পারতো। এখন তো তার বাড়ি আসাই মুশকিল হবে।’
একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবালও। অনুষ্ঠানে বক্তব্যের ফাঁকে তামিমকেও সতর্ক বার্তা দিয়েছেন মেজর হাফিজ। পরামর্শ দিয়েছে সব জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদদের একজন পরামর্শদাতা রাখার।
তিনি বলেন, ‘এখানে আরও যারা তারকা ফুটবলার, ক্রিকেটার আছে। বিশেষ করে তামিম ইকবালকেও বলব। তামিমের যথেষ্ট নাম হয়েছে।প্রত্যেক জনপ্রিয় ক্রিকেটারের একজন পরামর্শদাতা দরকার। যে সব সময় তাকে লেভেল হেডেড রাখবে। তারা মাথা যেন বিগড়ে না যায়। অল্প বয়সে অর্থ সমাগমের কারণে তার যেন কোনো বদ অভ্যাস গড়ে না ওঠে। এক সময় সিনিয়র খেলোয়াড়রা জুনিয়র খেলোয়াড়দের পরামর্শ দিয়ে লাইনে রাখতে পারত। আমরা আমাদের সিনিয়রদের পরামর্শ নিতাম এবং মেনে চলার চেষ্টা করতাম।’
আওয়ামী লীগ সরকার অনেক তারকা ক্রীড়াবিদকে বিপদে ফেলেছে উল্লেখ করে মেজর হাফিজ বলেন, ‘এরা অনেক ক্রীড়াবিদকেও বিপদে ফেলেছে। এদেশের যারা তারকা ক্রীড়াবিদ, জাতীয় দলে খেলছে, যেমন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। এরা জাতীয় দলে খেলা অবস্থাতেই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছে। কেউ কেউ এমপি হয়েছে। তামিম যোগ দেয়নি। কিন্তু এদেরকে অনেকভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।’ উৎস: সময়নিউজটিভি ও সমকাল।