জহিরুল ইসলাম, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ তাহেরকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করেন।
এরপর আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ পড়ান লক্ষ্মীপুর দারুলউলুম কামিল মাদ্রাসার মোহাদ্দেস মাওলানা মহিউদ্দিন।
এতে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, লক্ষ্মীপুর-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শাহাজাহান কামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নূরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি,কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ। জানাজায় জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগসহ দলের নেতাকর্মীরা, বিভিন্ন রাজনীতিক দল, পেশাজীবি সংগঠন ও সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করে।
জানাজা শেষে মরহুম এম এ তাহেরকে পৌরসভার বাঞ্চানগর এলাকায় তার প্রতিষ্ঠিত মহিউস সুন্নাহ জালালি মাদ্রাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা এম এ তাহেরের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপিও শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এদিকে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা তাহেরের মৃত্যুতে লক্ষ্মীপুর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৩ দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এ তিনদিন জেলায় দলীয় সকল কার্যক্রম স্থগিত ও সকল নেতাকর্মীকে কালো ব্যাজ ধারণের জন্য ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকার পর শনিবার দুপুরে তাহের লক্ষ্মীপুরে নিজ বাসভবন পিংকি প্লাজায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দুইবারের মেয়র ও একবারের চেয়ারম্যান ছিলেন। সবশেষ তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে লক্ষ্মীপুর আওয়ামী লীগের সাহসী নেতা ছিলেন তাহের। রাজনৈতিক জীবনে ১৯৭২ ও ৭৪ সালে টানা দু’বার তাহের জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পায়। ১৯৭৬ সালে তিনি জেলা যুবলীগের দায়িত্ব পেয়ে সংগঠক হিসেবে দক্ষতার প্রমাণ দেয়।
এতে তাকে ১৯৮০ সালে লক্ষ্মীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮৪ সালে একই শাখার সভাপতি, ১৯৮৭ সালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে একাধিকবার তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে।
প্রতিনিধি/জেএ