বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে তার আসনে গণঅধিকার পরিষদ কোনও প্রার্থী দেবে না বলে ঘোষণা করেছেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকাল ৫টায় দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠে গণঅধিকার পরিষদের আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই ঘোষণা দেন তিনি।
নুর বলেন, জামাতের আমির, ইসলামী আন্দোলনের আমিরসহ যে সমস্ত জাতীয় নেতৃবৃন্দ গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারের আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণে ভূমিকা রাখবেন, তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো যেন এসব জাতীয় নেতৃবৃন্দের এলাকায় প্রার্থী না দিয়ে নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করেন।
তিনি বলেন, চব্বিশের অভ্যুত্থানের আগে বিএনপি, জামায়াত, গণঅধিকার পরিষদসহ কেউ সভা সমাবেশ করতে পারেনি। এখন রাজনৈতিক দলগুলো সভা সমাবেশ করছে, কেউ কোনো বাধা দিচ্ছে না। জুলাই সনদ গণভোটে প্রতিষ্ঠিত হবে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হবে। যেখানে উচ্চকক্ষে ১০০ ও নিম্ন কক্ষে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনসহ ৩৫০ জন সদস্য হবে। প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে উচ্চ কক্ষের সদস্য হবে। জোট করলেও ভোট করতে হবে নিজ দলের প্রতীকে। বিভিন্ন স্থানে কিছু ঘটনা ঘটছে কিছু অসুস্থ মানসিকতার নেতৃবৃন্দের কারণে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, সরকার কৃষকের ফসল উৎপাদনের সময় এলসি ওপেন করায় কৃষক ন্যায্য মূল্য পান না, যা কৃষিকাজে তাদের আগ্রহ কমিয়ে দেয়। কৃষি প্রধান দেশ হয়েও আমাদেরকে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের জন্য ভারতের ওপর নির্ভর করতে হয়। ভারতের কারণে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এতে করে উত্তরের মানুষ প্রতিবছর বন্যায় ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আগামীতে পররাষ্ট্রনীতি শক্তিশালী করতে হবে। নতুন কৃষি নীতি করতে হবে।
তিনি বলেন, ৫০ বছরের পুরোনো রাজনীতি, দুর্নীতি আপনারা দেখেছেন। যারাই ক্ষমতায় গেছে সবাই একই পথে হেটেছে। তাই তরুণদের ভোট দিয়ে পরিবর্তন আনতে হবে। তরুণরাই পারবে আগামীর বাংলাদেশকে বদলে দিতে। এবারের রক্ত আমরা কোনোভাবেই বৃথা যেতে দেব না।
এ সময় চিনিকলসহ বন্ধ হয়ে যাওয়া সব কলকারখানা পুনরায় চালু করার দাবি জানান নুরুল হক নুর। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শহীদুল ইসলাম ফাহিম, হানিফ কান রাজিব, নির্বাহী সদস্য মো. কামাল প্রমুখ।
এর আগে, বেগম খালেদা জিয়ার আসনে কোনও প্রার্থী দেবে না বলে ঘোষণা দেয় চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি)। গত ৪ নভেম্বর এ ঘোষণা দেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার আসনে আমরা কোনো প্রার্থী দিচ্ছি না। তিনি প্রার্থী হয়েছেন, আমরা তাকে স্বাগত জানাই। তার আপসহীন ও লড়াকু নেতৃত্ব বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, এনসিপির কাছে সহযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াতে ইসলামী আমির, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু এবং গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুরসহ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। আমরা চাই, এই নেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে সংসদে প্রবেশ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনকে রাজনৈতিক পরিসরে আরও শক্তিশালী করুন।
প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর (সোমবার) ২৩৭ আসনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিএনপি। তালিকা অনুযায়ী, ফেনী-১, দিনাজপুর-৩ ও বগুড়া-৭ আসন থেকে লড়বেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।