এক দেশে কী দুই সংবিধান থাকতে পারে এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। রোববার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট হলে জাতীয়তাবাদী আয়কর আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করছেন, সংবিধানের সমস্ত সংশোধনী প্রস্তাবগুলো-যেগুলো ঐক্যমতের ভিত্তিতে গৃহীত হবে বা ঐকমত্য হয়েছে, আর কিছু কিছু নোট অব ডিসেন্ট সহকারে হয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়ন এখনই করতে হবে, সেরকম একটি প্রচেষ্টা চলছে। আপনারা যেহেতু আইনজীবী, আপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখি-এক দেশে কী দুই সংবিধান থাকতে পারে? এখন যে সংবিধান বহাল আছে, এর ভিত্তিতেই তো এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, শপথ নিয়েছে। এই সংবিধানেই ভিত্তিতেই বাংলাদেশে বিচারবিভাগ পরিচালিত হচ্ছে, প্রশাসনসহ সমস্ত কিছু পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, যদি এই বিধানগুলো, যেগুলোতে আমরা ঐকমত্য হয়েছি পরিবর্তনের জন্য। সেটি যদি আজকেই পরিবর্তন হয়ে গেছে ধরা হয়, তাহলে তো সেটি পরিবর্তিত সংবিধানের অনুসারে রাষ্ট্র চলবে। তাহলে আপনাদের মধ্য কেউ যদি উপযুক্ত আদালতে গিয়ে চ্যালেঞ্জ করেন যে, বাংলাদেশের সংবিধান কী এখন পরিবর্তন হয়ে গেছে? আদালত কী বলবেন, কে করলো এই সংবিধান পরিবর্তন। কার অধিকার আছে এই সংবিধান পরিবর্তন করার। সেই প্রশ্ন আসবে।
সালাহউদ্দিন বলেন, সাংবিধানিক সংস্কারের কথা উঠছে। আমার জানা মতে, এই মুহূর্তেও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করছেন ঐকমত্য কমিশন। কিন্তু সংবিধানের সংস্কার কিংবা সংশোধনী যদি আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা সম্মত হই, সেটা বাস্তবায়নের জন্য তো উপযুক্ত ফোরাম জাতীয় সংসদ। আমরা সে কথা বলছি। বলছি, সংবিধান সংশোধনের বাইরে যেসমস্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো আমরা সবাই ঐক্যমতের ভিত্তিতে একমত হয়েছি, সেটি এখনই বাস্তবায়ন শুরু করা যায়, এই সরকারের স্বাধীনতা আছে- তারা অর্ডিন্যান্স জারি এবং নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সেটা বাস্তবায়ন করুক। প্রতিনিয়ত অধ্যাদেশ করছে।
তিনি বলেন, সেরকম একটা অধ্যাদেশের খসড়া আজকে (রোববার) দেখতে পেলাম, আরপিও বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ। তার মধ্যে কিছু সংশোধনী প্রস্তাব এনেছে। সেটি এখনো কেবিনেটের বিবেচনায় আছে। সেটা অধ্যাদেশ জারি হতে আরও কতদিন সময় লাগবে। কিন্তু আমার কাছে কিছু কিছু বিষয় অমূলক মনে হয়েছে, আমরা প্রস্তাব করেছি, এই সরকার উন্মোক্ত আছে, স্বাধীন আছে- অধ্যাদেশ জারির মধ্য দিয়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করুক। কিন্তু সেই সমস্ত সংষ্কার প্রস্তাব, যেগুলো ঐক্যমতের ভিত্তিতে গৃহীত হয়েছে, যেগুলো যৌক্তিক এবং যেগুলো গ্রহণযোগ্য- সেগুলো অধ্যাদেশ জারির মধ্য দিয়ে বাস্তবায়ন করুন।
২০২৬- এর ফেব্রুয়ারির রমজানের এক সপ্তাহ আগে অথবা তারও আগে নির্বাচন হবে উল্লেখ করে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, এ পথে যারাই কাঁটা বিছানোর চেষ্টা করবে বা বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে তাদের সকলের প্রতি নসিহত, আমরা এখন নির্বাচনী আবহের মধ্যে আছি, সারাদেশে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। অতিশিগগিরই তারেক রহমান দেশে প্রত্যাবর্তন করবেন। সেদিন দেশে নির্বাচনের সমস্ত কিছু প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে। বলছি না নির্বাচন হয়ে যাবে। তবে আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে সেদিন নির্বাচনের অর্ধেক কাজ সমাপ্ত করতে পারবো। সারা দেশে আমাদের নির্বাচনী প্রচারণা হয়ে যাবে। তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে হবে দেশে অবস্বরণীয় ঐতিহাসিক একটি ঘটনা।