ডেস্ক রিপোর্ট : জুলাই পরবর্তী রাজনীতি- কোন পথে বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার ০৩ আগস্ট রাজধানীর লেকশোর হোটেলের হলরুমে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংগঠন স্কুল অব লিডারশীপ (SOLE USA) এর উদ্যোগে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা হলো রাজনীতির নতুন বন্দোবস্ত। গণতন্ত্র হলো দেশের প্রতিটা নাগরিকের ভোটাধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, ব্যবসার অধিকার, সঠিকভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করা। শুধু ভোট দিবে আর ক্ষমতায় যাবে এটাই গণতন্ত্র না।
স্কুল অব লিডারশীপের এক্সিকিউটিভ মেম্বার ও ইয়ুথ ফোরামের প্রেসিডেন্ট এডভোকেট আমিনুল ইসলাম মুনীরের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট গোলাম রাব্বানী নয়ন।
সেসিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইংল্যান্ডের নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং স্কুল অব লিডারশীপের যুক্তরাজ্যের কনভেনার প্রফেসর ড. আলিয়ার হোসেন।
প্রফেসর আলিয়ার বলেন, এজেন্ডা টুয়েন্টি থার্টি এবং ইউএন গ্লোবাল কমপেক্টের সাথে ৩১ দফার তুলনা করেন। একইভাবে এটার সুযোগসহ ও সম্ভাবনা তুলে ধরেন। তিনি এথিক্যাল লিডারশীপ এবং স্ট্রাটেজিক রিক্রোটমেন্টের প্রতি গুরুত্বআরোপ করেন। যাতে করে দক্ষ নেতৃত্ব খুঁজে বের করা যায়।
স্কুল অব লিডারশীপের জয়েন্ট সেক্রেটারী ডাঃ গোলাম কাদের চৌধুরী নোবেলের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, হাসিনা পালিয়ে যাবার পর আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে লড়াই চলছে। যদি কৃতিত্ব নিয়ে লড়াই করেন তাহলে এদেশ এগুতে পারবে না। কৃতিত্ব নিয়ে পরে থাকলে দেশের মঙ্গল হবে না। মুক্তিযুদ্ধের পর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা যারযার কাজে ফিরে গেছে। তারা কৃতিত্ব নিয়ে লড়াই করেনি।
তিনি বলেন, যে সকল বিপ্লবোত্তর দেশ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রকৃয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে তারাই ভালো করেছে। যারাই ক্ষমতা আকরে ধরে ছিলো সে সব দেশে গৃহযুদ্ধে লেগে গেছে। দেশের সকল উইং ভেঙ্গে পরেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না। সরকার সবক্ষেত্রে সামলাতে ব্যর্থ। ব্যাবসা বানিজ্যের অবস্থা নড়বড়ে।
১ বছর অনেক বেশি সময় হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় দ্রুত নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর করা ছাড়া দেশের আর কোন উপায় নাই। গণতন্ত্র হলো দেশের প্রতিটা নাগরিকের ভোটাধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, ব্যবসার অধিকার, সঠিকভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করা। শুধু ভোট দিবে আর ক্ষমতায় যাবে এটাই গণতন্ত্র না।
আমির খসরু বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে সাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ বাড়াবে। স্কিল ডেভেলপমেন্টে কাজ করবে। দক্ষ শ্রমিক বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে। ১ কোটি বেকারকে চাকুরীর ব্যবস্থা করবো। যা আমাদের ৩১ দফায় ইতিমধ্যে আলোকপাত করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে লোক দেখানো বড় বড় মেগা প্রজেক্টের দরকার নাই। আগে জনগনের বেসিক বিষয়গুলো সমাধান জরুরি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করবে বলে ছাত্ররা ঘোষণা দিয়েছিলো। কিন্তু ১ বছর পর তা বাস্তবায়নের চিত্র পরিলক্ষিত হয়নি। কিন্তু বিএনপির ৩১ দফায় ইতিমধ্যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, হাসিনাকে মানুষজন ক্ষমতায় অমরত্ব দিয়েছিলেন। সে নিজেও ভেবেছিলো ক্ষমতা ছাড়া লাগবে না। কিন্তু তার বাজেভাবে পতন হয়েছে। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। পাশের দেশে বসে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। অনেক প্রতিবন্ধকতা সামনে। এসব চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করে সামনে আগাতে হবে। গণভবনকে হাসিনা স্বৈরাচারের আতুরঘর বানিয়ে রেখেছিলো। আমাদের ছেলেরা স্বৈরাচারের আতুরঘর ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ১৬ বছরের জুলুম অত্যাচার ও বাকস্বাধীনতা হরনের গণবিস্ফোরণ ছিলো জুলাই গণঅভ্যুত্থান। সুদীর্ঘ বঞ্চনার পর ছাত্র জনতা এ অভ্যুত্থাণ ঘটিয়েছে। দেশ অস্থিতিশীল পর্যায়ে চলে গেছে।
তরুণরা হতাশায় ভোগছে। জুলাই হয়েছে পরিবর্তনের জন্য। কিন্তু অভ্যূত্থান পরবর্তী সরকার তাদের চাহিদা পূরন করতে পারেনি। ভিপি নুরের উপর হামলার পর সরকারের উপদেষ্টারা বিচারের পদক্ষেপ না নিয়ে নিন্দা জানায়। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে অনেক সমস্যাার সমাধান হয়ে যাবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন, পাকিস্তান কনস্যুলার কামরান ডাঙ্গাল, সাবেক বিচারপতি আব্দুস সালাম মামুন, বিএনপির সহ: সাস্থ্য সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন, চাঁদপুর বিশ্ববিদ্যালের ভিসি প্রফেসর ড. পেয়ার আহমেদ, স্কুল অব লিডারশীপের কোষাধ্যক্ষ বিপু চৌধুরী, আইএমএফের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন পাটোয়ারী, স্কুল অব লিডারশীপের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মোঃ ফায়েজ কায়সার প্রমুখ।