রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) করা আবেদনে ছয়টি বিষয়ে ত্রুটি বা ঘাটতি পেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
প্রাথমিক যাচাইয়ের পর এই ছয় ত্রুটি সংশোধন করে আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে উপযুক্ত দলিল দাখিল করতে এনসিপিকে গত ১৭ জুলাই চিঠি দিয়েছে ইসি। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বরাবর চিঠিটি পাঠিয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নিবন্ধনের জন্য ইসিতে এনসিপিসহ ১৪৪টি দল আবেদন করেছে।
ইসির চিঠিতে ত্রুটিগুলো তুলে ধরে বলা হয়, ঠিকানাসহ দলের সব কার্যকর জেলা দপ্তরের তালিকা দেওয়া হয়নি; ঢাকা ও সিলেট জেলা দপ্তরের ভাড়া চুক্তিপত্রে দলের নাম উল্লেখ নেই; ঠিকানাসহ সব উপজেলা ও থানা দপ্তরের তালিকা দেওয়া হয়নি; এর মধ্যে ২৫টি উপজেলা বা থানায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটার (ন্যূনতম ২০০ জন) সদস্যের অন্তর্ভুক্তি পাওয়া যায়নি।
ইসির চিঠিতে আরও বলা হয়, এনসিপির আবেদনে তহবিলের পরিমাণ উল্লেখ নেই, আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত তহবিলের উৎসের বিবরণীতেও তহবিলের পরিমাণ উল্লেখ নেই এবং নিবন্ধনের বিষয়ে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তের অনুলিপির শেষ পৃষ্ঠায় স্বাক্ষর নেই।
ইসির চিঠি অনুযায়ী, দলের গঠনতন্ত্রে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা বা ক্ষেত্রমতো জেলা কমিটির সদস্যদের নিয়ে প্রস্তুত প্যানেল থেকে দলের কেন্দ্রীয় সংসদীয় বোর্ড সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করার বিধান রাখা হয়নি।
চিঠি আরও বলছে, কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা কার্যালয়ের ভাড়ার চুক্তিপত্রে দলের নাম উল্লেখ নেই। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলা কার্যালয়ের ভাড়ার চুক্তিপত্রে দলের নাম ও কার্যালয়ের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি।
এ ছাড়া দলের কোনো দলিল বা কার্যক্রম সংবিধান–পরিপন্থী নয় এবং দলে 'কোলাবোরেটর (স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার ১৯৭২' ও 'ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) অ্যাক্ট ১৯৭২'–এর অধীন দণ্ডিত কোনো ব্যক্তি নেই—এ ধরনের প্রত্যয়নপত্র আবেদনপত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি বলেও ইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) গত ১০ মার্চ থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু করে। প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত সময়সীমা ছিল ২০ এপ্রিল। তবে এনসিপিসহ ৪৬টি দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইসি এই সময়সীমা বাড়িয়ে ২২ জুন পর্যন্ত করে।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পেতে আইন ও বিধিমালায় নির্ধারণ করে দেওয়া বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। আবেদনের নির্ধারিত শর্তগুলো পূরণ করা হয়েছে কি না, তা প্রাথমিকভাবে যাচাই করেন ইসির কর্মকর্তারা।
আবেদনে তথ্যগত ঘাটতি বা ত্রুটি থাকলে সেগুলো পূরণের জন্য দলগুলোকে সাধারণত ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়। এরপর আবার আবেদন যাচাই–বাছাই করার পর যারা শর্ত পূরণ করে, তাদের সব তথ্য ঠিক আছে কি না, তা মাঠপর্যায়ে যাচাই করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার এনসিপিসহ আরও বেশ কিছু দলকে এই সংক্রান্ত চিঠি দেয় ইসি। উৎস: ডেইলি স্টার।