শিরোনাম
◈ কিয়ের স্টারমারের সাক্ষাৎ না পাওয়া ও টিউলিপ বিতর্কে সাফ জবাব ◈ সচিবালয় অভিমুখে মিছিল: পুলিশের লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড, উত্তপ্ত প্রেস ক্লাব এলাকা ◈ কেউ চাকু‌রিজীবী, কেউ ব‌্যবসায়ী হ‌য়েও খে‌লেন বিশ্বম‌ঞ্চে, ক্লাব বিশ্বকা‌পে অকল্যান্ড সিটির গল্প ◈ গৌরনদীতে  বাসের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত-১ ◈ শেরপুরে যাত্রীবাহী বাসের সাথে মটরসাইকেলসংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই নিহত-১ ◈ কালীগঞ্জে সংঘর্ষে নিহত দুই কর্মী নিয়ে জামায়াত-বিএনপি ঠেলাঠেলী ◈ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সূচি প্রকাশ, অ‌স্ট্রেলিয়া খেল‌বে সর্বোচ্চ ম্যাচ, কম ম্যাচ বাংলাদেশের ◈ লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মসজিদ কমিটির সভাপতির মৃত্যু ◈ ঘোড়াশাল-পাঁচদোনা সড়কে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ১০ ◈ গাজীপুরে বিএনপি'র আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে দু’পক্ষের সংঘর্ষ

প্রকাশিত : ১৪ জুন, ২০২৫, ০৮:৪৭ রাত
আপডেট : ১৫ জুন, ২০২৫, ০৩:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বৃহৎ ইসলামি জোট শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখবে কি?

আওয়ার ইসলাম প্রতিবেদন: আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের ভোট একবাক্সে ফেলতে একটি বৃহৎ জোটের আলোচনা চলছে জোরেশোরে। গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকেই বিষয়টি চর্চিত হচ্ছে। ইসলামি দলগুলোর নেতারা বারবার বৃহত্তম জোটের কথা বলছেন। ইতোমধ্যে তাদের মধ্যে বসাবসিও হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই জোট আলোর মুখে দেখার সম্ভাবনা কতটুকু সেটা নিশ্চিত করে কেউই বলতে পারছেন না। 

অনেকে আশার কথা বললেও এই জোট শেষ পর্যন্ত আদৌ বাস্তবায়ন হবে কি না সেটা নিয়ে সন্দিহান।  

আলোচনায় থাকা ইসলামি জোটে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, নেজামে ইসলাম পার্টি, ইসলামী খেলাফত আন্দোলন সবারই যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব করা হচ্ছে। বিচ্ছিন্নভাবে কয়েক দফায় বৈঠকও হয়েছে। তবে জোটের রূপরেখা নিয়ে এখনো ফলপ্রসূ কোনো আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়নি। 

ইসলামি এই জোটের দুটি ফরম্যাট আলোচনায় রয়েছে। একটি জামায়াতে ইসলামীসহ, আরেকটি জামায়াতে ইসলামীকে ছাড়া। বৃহৎ ইসলামি দল হিসেবে জামায়াতসহ জোট হলে এটি একটি শক্তিশালী জোটের আকার ধারণ করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত এমন একটি জোট বাস্তবায়ন হলে দেশের রাজনীতির গতিপথ পাল্টে দিতে পারে এই জোট। ইসলামপন্থীদের ভোট একবাক্সে জমা হলে রাজনীতিতে সমীহ করার মতো জায়গায় তারা পৌঁছাতে সক্ষম হবেন। 

তবে শেষ পর্যন্ত এই জোট কতটা বাস্তবে রূপ নেবে এটা নিয়ে খোদ ইসলামি দলের নেতারাই সন্দিহান। এর কারণ হলো, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে অন্যান্য দলগুলোর একটা আদর্শগত বিরোধ চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। আকিদাগত এই বিরোধকে পাশে রেখে অপরাপর ইসলামি দলগুলো শেষ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে জোটে কতটা আগ্রহী হবে সেটা নিয়ে রয়েছে সংশয়। 

তবে জামায়াতে ইসলামীকে বাইরে রেখেও আরেকটি ইসলামি জোটের আলোচনা চলছে। জামায়াত ছাড়া অন্যান্য দলের নেতারা ইতোমধ্যে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। তারা ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটে লড়তে চান বলে জানিয়েছেন। যদিও এই জোটের কোনো রূপরেখা কিংবা আদৌ বাস্তবায়ন হবে কি না সেটা এখনও চূড়ান্ত নয়। 

রাজনীতির মাঠে আলোচনা আছে, শেষ পর্যন্ত ইসলামি দলগুলোর বৃহৎ জোট হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, মাঠে সক্রিয় সবচেয়ে বড় দল বিএনপির জন্য এই জোট বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এজন্য বিএনপি শেষ পর্যন্ত এই জোট যেন বাস্তবায়ন না হয় এর সব চেষ্টাই করবে। ইতোমধ্যে বিএনপি জামায়াত বাদে বিভিন্ন ইসলামি দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। কিছু আসনে ছাড় দিয়ে কয়েকটি ইসলামি দলকে নিজেদের জোটে নেওয়ার চেষ্টা থাকবে দলটির। 

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও খেলাফত মজলিস- এই তিনটি দলের সঙ্গে বিএনপির বোঝাপড়ার গুঞ্জন শোনা যায়। যদিও দলগুলোর দায়িত্বশীল নেতারা এখনো এ ধরনের আলোচনার কথা স্বীকার করছেন না। তবে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, তারা প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা বাছাইয়ে কিছু আসন ফাঁকা রেখেছেন। ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা হলে কিছু আসন ছাড়তে প্রস্তুত তারা। শেষ পর্যন্ত ইসলামী ঐক্যজোটও এই তালিকায় আসতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। 

এদিকে জামায়াতে ইসলামী এক সময় বিএনপির প্রধান জোটসঙ্গী হলেও এখন বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। আগামী নির্বাচনে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির কোনো জোট হচ্ছে না এটা প্রায় চূড়ান্ত। চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশেরও বিএনপি জোটে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে দুটি বড় ইসলামি দল জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে মধ্যে স্বতন্ত্র জোট হতে পারে বলেও একটা আলোচনা আছে রাজনীতির মাঠে। যদিও কোনোটাই এখনো চূড়ান্ত নয়। 

আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য একটা সময় জানা গেছে। তবে নির্বাচন কোন ফরম্যাটে হবে, কেউ কোন জোটে বা বলয়ে থাকবে সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভোট যত কাছাকাছি আসবে সেটা তত পরিষ্কার হবে বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, আলোচনা জোরেশোরে হলেও শেষ পর্যন্ত ইসলামি দলগুলোর জোট হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, তাদের পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতা ও মতবিরোধ অনেক বেশি। তাছাড়া ছাড় দেওয়ার মানসিকতাও কম। আর ছাড় না দিলে জোট কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনাও কম। যদিও জোট কার্যকরের আশা কেউই ছাড়ছেন না।   

ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা একটা বৃহত্তম ইসলামি ঐক্য গড়তে চাই। এবং ইসলামকে ভালোবাসে এমন ছোট ছোট দল আমাদের সাথে আসতে চাইলে, আমরা তাদেরও আমাদের ঐক্যের মধ্যে শরিক করব। জামায়াতে ইসলামী যেহেতু ইসলাম নামে কাজ করে, সেহেতু তাদের সাথে ঐক্য করতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’ 

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘একটা আসনে, মনে করেন, আমাদের শক্তি বেশি, জনসমর্থন বেশি। কিন্তু যেকোনো কারণে দেখা গেল অন্য একটা দলকে আসনটি ছাড় দিতে হবে। ওই দল হয়ত তার প্রতীক নিয়ে গেলে ওইভাবে সুবিধা করতে পারবে না, সেক্ষেত্রে তিনি চাইলে আমরা তাকে আমাদের প্রতীক ব্যবহার করতে দেব। কোনো সমস্যা নেই।’

এ প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘ইনশাল্লাহ পরস্পরের মধ্যে বোঝাপড়া করে আমরা একটা সুন্দর নির্বাচনের দিকে যাব। যাতে দেশের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে, গণতন্ত্রের বিকাশের জন্য একটি দৃষ্টান্তকারী নির্বাচন হয়। অনেক বিষয়ে দল ভিন্ন হলেও, বোঝাপড়ার জায়গায় কিন্তু আমরা কাছাকাছি আছি। সেজন্য আমরা আশা করছি, ইসলামি দলগুলো একসাথে নির্বাচনে আসা।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়