যারা আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে সহায়তা করেছিল এবং গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার ছিল; তাদের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ চান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তবে বিষয়গুলো আইনগত প্রক্রিয়ায় হওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশে ফেরা প্রসঙ্গে সোমবার (৯ জুন) এই মত দেন সারজিস।
থাইল্যান্ডে চিকিৎসা শেষে রোববার (৮ জুন) দেশে ফিরেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। দিবাগত রাত দেড়টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকায় পৌঁছান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ ও শ্যালক ডা. নওশাদ খান।
ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় কিশোরগঞ্জে আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে। তবে সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, নির্দোষরা যাতে শাস্তি না পান সেজন্যই এখন পর্যন্ত সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশন নেয়া হয়নি। তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সোমবার দুপুরে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চগড় শহরের চৌরঙ্গীমোড়ে এক টং দোকানে চা চক্র শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আবদুল হামিদ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে সার্জিস বলেন, ‘আমরাও জানতে পেরেছি আবদুল হামিদ দেশে এসেছেন। আমাদের জায়গা থেকে আমরা বলব, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার এবং অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার। যারা আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে সহায়তা করেছিল, গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার ছিল এবং যারা দোসর ছিল; তাদের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ চাই। তবে এটা যেন আইনগত প্রক্রিয়ায় হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সামগ্রিকভাবে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা অবজার্ভ করছি। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার অন্তত এই সকল প্রশ্নে তাদের জায়গা থেকে তাদের শক্ত অবস্থান সবসময় কাজের মাধ্যমে ব্যক্ত করবে।’
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের পতন হয়। এ ঘটনায় দলটির অনেক নেতাকর্মী দেশ ছাড়লেও আবদুল হামিদ দেশেই অবস্থান করছিলেন। এর পর ৯ মাস পর চিকিৎসার জন্য ব্যাংককের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন তিনি।
গত ৮ মে রাতে থাই এয়ারওয়েজের ব্যাংককগামী একটি ফ্লাইটে করে দেশ ছাড়েন আবদুল হামিদ। পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়। মামলাটিতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নাম রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সময় ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আবদুল হামিদ। উৎস: সময়নিউজটিভি।
