শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারী, ২০২৩, ০১:০২ রাত
আপডেট : ২১ জানুয়ারী, ২০২৩, ০২:০৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মৃত্যুর আগে দেহের সবকিছুই দান করতে বলেছিলেন সারা ইসলাম

সারা ইসলাম - ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক: দুরারোগ্য টিউবারাস সিরোসিস রোগের সঙ্গে দীর্ঘ ১৯ বছর লড়াই করার পর অবশেষে পরপারে চলে গেছেন ঢাকার বাসিন্ধা সারা ইসলাম। তবে মরণোত্তর অঙ্গদানের এক অনন্য নজির স্থাপন করে গেছেন ২০ বছর বয়সী এই তরুণী। মৃত্যুর আগে তিনি তার দেহের সবকিছুই দান করে দিতে বলেছেন। তবে চিকিৎসকরা শুধু তার দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া কাজে লাগিয়েছেন। আরটিভি

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা পর্যন্ত বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সার্বিক নির্দেশনায় দেশে প্রথমবারের মতো মৃত ব্যক্তির দুটি কিডনি বিকল রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। সারার দুটি কিডনিতে দুইজন মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। আর তার দুটি কর্নিয়ায় দুইজনের চোখে আলো ফিরে এসেছে।

জানা গেছে, সারা ইসলামের দুটি কিডনির একটি মিরপুরের বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী শামীমা আক্তারের দেহে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিডনি অপারেশন থিয়েটারে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। আর অপর কিডনিটি কিডনি ফাউন্ডেশনে এক রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়।

প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপনে নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউর ইউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল। তিনি বলেন, ঢাকার বাসিন্দা সারা ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কে টিউমারসহ নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি দেহের সবকিছুই দান করে দিতে বলেছেন। তবে তার কিডনি ও কর্নিয়া নেওয়া হয়েছে। সারাকে বীরের মর্যাদা দেওয়া উচিত। মরণোত্তর কিডনি দানে উদ্বুদ্ধ করতে সারার এই দান মানুষের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, তিন দিন আগে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সারা বিএসএমএমইউতে ভর্তি হন। বুধবার সন্ধ্যায় তাকে ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা দেওয়া হয়। তার কিডনির সঙ্গে ম্যাচ করতে কয়েকজন কিডনি রোগীর তথ্য মেলানো হয়। এর মধ্যে ৩৪ ও ৩৭ বছর বয়সি দুই নারীর সঙ্গে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মিলে যায়। আত্মীয় না হওয়ায় এর বেশি মেলেনি। বাকিটা ওষুধ প্রয়োগে উপযোগী করা হয়েছে।

ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রথম অঙ্গদাতা সারা ইসলামের নাম বাংলাদেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে আমরা এ ধরনের দুই-একটি রোগীর ক্ষেত্রে সফল হতে গিয়েও অঙ্গদানে রাজী করাতে পারিনি। কিন্তু প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সফল হয়েছি। বাংলাদেশের চিকিৎসা শাস্ত্রের জগতে ইতিহাস সৃষ্টি করতে পেরেছি।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাহারা ইসলামের চিকিৎসার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক ডা. কামরুল হুদা। এ সময় রোগ নির্ণয় ও পরে অঙ্গদানের মহৎ উদ্যোগে সাহারার মা, স্কুল শিক্ষিকা শবনম সুলতানাকে উদ্বুদ্ধ করেন বিএসএমএমইউ’র আইসিইউ’র সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুজ্জামান সজীব।

শিক্ষিকা মা শবনম সুলতানা এবং বাবা শহীদুল ইসলামের জেষ্ঠ সন্তান সারা ইসলাম। সারার একটি ছোট ভাই আছেন। জন্মের ১০ মাস বয়সে দুরারোগ্য টিউবারাস সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হন সারা। তিনি এ রোগ নিয়ে প্রায় ১৯ বছর ধরে লড়াই করে গেছেন। এ লড়াই করার পথ পরিক্রমায় সারা ইসলাম অগ্রণী গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি এবং হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলভমেন্ট আল্ট্রারনেটিভে (ইউডা) ফাইন আর্টসে ভর্তি হন। সারা ইসলাম ফাইন আর্টসের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি একজন দক্ষ চিত্রশিল্পী ছিলেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সারা ইসলামের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। এরপর মরদেহ আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়