ইমতিয়াজ মাহমুদ: বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের মেয়েদের যতোই দেখি ততোই মুগ্ধ হই। খেলার বিচার আপনারা করেন, সেটা করার জন্যে অনেক বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। আমি কেবল সংগ্রামী একদল তরুণীর বিজয় যাত্রা দেখি আর আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। কী সুন্দর উজ্জ্বল একেকটা মুখ। কী সুন্দর। কী দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সকল বাবা-মায়ের কাছেই তো নিজের মেয়েদের মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড়রা তো আসলেই সবচেয়ে সুন্দর। আর কী স্টাইল। আমাদের ঋতুপর্ণা আর তহুরার চুলের স্টাইল দেখেছেন? একজনের দীঘল লম্বা কেশ, আর আরেকজন খাটো করে কেটে রেখেছে। কী সুন্দর। আর শুধু তো চুলের স্টাইলই নয়, খেলেও কী চমৎকার। ৪ ডিসেম্বরের খেলায় ঋতুপর্ণার দ্বিতীয় গোলটা দেখেছেন? আর ঋতুপর্ণার বাড়িয়ে দেওয়া বলে তহুরার গোল। অফসাইডের জন্যে বাতিল হয়ে গেলো যে গোলটা, সেটাও।
সানজিদার গোলটা। আমি এমনিতে ফুটবলের সেরকম ভক্ত নই। কিন্তু ফুটবল খেলাও এতো সুন্দর হয়। এতো ছন্দোবদ্ধ হয়। আর আমাদের মেয়েদের প্রতি কৃতজ্ঞতার তো শেষ নেই। দেশের অবস্থা নিয়ে এমনিতে তো খুব আনন্দে নেই। দেশে গণতন্ত্র নেই। মাথার উপর ঝুলে আছে অর্থনৈতিক সংকটের আতঙ্ক। রাজনীতিবিদরা নির্বাচন ইত্যাদি নিয়ে এমন একটা অবস্থা করে রেখেছেনÑ এমন একটা তামাশা যে নিজেরই মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা নাগরিকরাই বোধহয় একেকটা ফালতু, ব্যর্থ ও ক্লাউন! এরকম অবস্থার মধ্যে আমাদের মেয়েরা একেকটা সুখবর এনে দেয়, মনে আশা জাগে, না এই দেশকে নিয়ে আশা ধরে রাখা অন্যায় নয়।
আমাদের এই মেয়েদের আমরা বিদেশে খেলতে পাঠাইনি টাকা নেই বলে। এটা আপনি বিশ্বাস করেন? আমাদের দেশের চোরেরাও নাকি একেজন শত কোটি টাকা চুরি করে। আমরা নাকি বিশ বালিশ কিনি সাতাশ হাজার টাকায় আর বালিশের কভার কিনি আঠাশ হাজার টাকায়। আর আমাদের তিরিশ-চল্লিশ লাখ টাকা নাই মেয়েদের বিদেশে খেলতে পাঠানোর জন্যে। আপনার বিশ্বাস হয় এসব কথা? অথচ সেই মেয়েরাই কিনা আমাদের জন্যে র্যাংকিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা দলকে অনায়াসে হারিয়ে দেয় হাসতে হাসতে। অভিনন্দন মেয়েরা। বাংলাদেশের মর্যাদা আমাদের মেয়েরা ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছে বারবার। অভিনন্দন। শুভেচ্ছা। নতমস্তকে সালাম করি তোমাদের। সালাম। লেখক: আইনজীবী। ফেসবুক থেকে