ইমতিয়াজ মাহমুদ: বাংলাদেশের র্যাবের বিরুদ্ধে আমেরিকার স্যাঙ্কশন এসেছিলো সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির (the Senate Foreign Relations Committee) সিনিয়র সদস্য সিনেটর বব মেনেন্ডেজের নেতৃত্বে কয়েকজন সিনেটরের চিঠির প্রেক্ষাপটে। এই সিনেটর বব মেনেন্ডেজরাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো করেছিলো। ওয়াশিংটন পোস্ট এবং আমেরিকার অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় কাগজের আলোচিত খবর হচ্ছে, এই সিনেটর মেনেন্ডেজ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আমেরিকার প্রসেকিউটররা দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের জন্য ফৌজদারি মামলা শুরু করেছে।
সংক্ষেপে ওদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে যে, মেনেন্ডেজ আর ওর বর্তমান স্ত্রী (ঘটনার সময় তিনি ছিলেন মেনেন্ডেজএর প্রেমিকা, বিবাহ হয়েছে ২০২০ সালে) মিশরের জন্যে অস্ত্র সরবরাহ ও অন্যান্য কিছু সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তিন মিশরীয় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মূল্যবান উপহার ও বিপুল পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করেছেন। উপহারের মধ্যে রয়েছে সিনেটরের বাড়ির আসবাব ও ইন্টেরির সাজসজ্জা, বেশকিছু সোনার বার, মার্সিডিজ স্পোর্টস কার, বাড়ির জন্য ঋণের টাকা শোধ করে দেওয়া বা মর্টগেজ পেমেন্ট ইত্যাদি। আর লক্ষ লক্ষ ডলার নগদ অর্থ তো আছেই।
এই মেনেন্ডেজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা এই প্রথম নয়, এর আগেও মামলা হয়েছে। ৬৯ বছর বয়সী এই সিনেটর মেনেন্ডেজের পুরো রাজনৈতিক ক্যারিয়ারটা বড়ই চিত্তাকর্ষক। কিউবা থেকে আসা অভিবাসন গ্রহণকারী প্রায় হতদরিদ্র অবস্থা থেকে এই লোক ছোট ছোট স্থানীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে সিনেটর পর্যন্ত হয়েছেন। কিন্তু এই পুরো যাত্রায় মেনেন্ডেজের অর্থ ও বিত্তের উৎস সম্পর্কে সবসময়ই জনমনে প্রশ্ন ছিলো, এখনো রয়েছে। এখন তো দেখা যাচ্ছে যে এরা স্বামী-স্ত্রী মিলে বেশ কায়দা করে চমৎকার সব উপহার পাচ্ছেন।
বলে রাখি, মেনেন্ডেজের বিরুদ্ধে মামলায় চাঁদাবাজির ষড়যন্ত্রের অভিযোগও রয়েছে। এই খবরটা এসেছে আমেরিকার কাগজগুলোতে, আমি দেখছি। এর মধ্যেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, একজন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমেরিকা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপটা নিয়েছে, সেটা কি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে না? পুর্নবিবেচনা করুক বা না করুক, এই খবর যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্দারি করার নৈতিক ভিতটিকে খানিকটা দুর্বল করবে, তাতে সম্ভবত আড় কোনো সন্দেহ রইলো না। লেখক: আইনজীবী। ফেসবুকে ২৫-৯-২৩ প্রকাশিত হয়েছে।