শামীম আহমেদ : পৃথিবীতে স্বাধীন দেশের সংখ্যা ১৯৫টি। এর প্রায় প্রতিটা দেশের কিছু মানুষ আইন মানতে চান না, যেখানে সেখানে প্লাস্টিকের ব্যাগ, চিপসের প্যাকেট, চুইংগাম ফেলতে চান। এর মধ্যে ৭০ ভাগ দেশের মানুষ এই কাজ করেন না, কারণ করলে কঠিন সাজার মুখোমুখি হতে হয়। আর বেশকিছু দেশে ছোটকাল থেকে স্কুলে, পরিবারে, সমাজে দেশকে ভালোবাসা বলতে কেবল জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া কিংবা পতাকা উত্তোলন শেখানো হয় না; দেশকে ভালোবাসতে হলে দেশের ও দেশের মানুষকে যত্ন নেওয়া শেখানো হয়। তাই মানুষ ব্যবহৃত চিপস, চুইংগাম ইত্যাদি পকেটে করে ঘরে গিয়ে গেলে। উভয় ক্ষেত্রে মূল দায়িত্বটা পালন করে সরকার। যথাযথ শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে স্কুলে এবং যথার্থ আইনের শাসন নিশ্চিত করে সমাজে ন্যায্যতা বজায় রাখা নিশ্চিত করেন, মানুষকে নিয়ম-কানুন মানতে মূলত উৎসাহিত এবং কিছু ক্ষেত্রে বাধ্য করেন। এর বাইরে নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়নের কাজ তো আছেই।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পর, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ৩২ বছর পর পৃথিবীর ৩৫ তম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশের রাজধানীতে দুই ঘণ্টা বৃষ্টি হলে যদি রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যায় এবং সেই পানিতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে থাকার কারণে ৯ জন মানুষ বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়, ৪ জন মানুষ মারা যায় এবং তারপরও যখন কেউ কেউ এর জন্য সাধারণ মানুষের রাস্তায় পলিথিন ফেলাকে দায়ী করে, তখন তাদের মন-মানসিকতা এবং বিবেকের অবস্থান আমাকে বিস্মিত করে। আমি আশা করি আপনারা সরকারের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচ্ছেন, না হলে নিজের বিবেককে জুতার তলে পিষে আপনারা এমন অমানবিক কথা কীভাবে বলেন? পলিথিন, প্যাকেট, চুইংগাম যদি মানুষ রাস্তায় ফেলে সেটার দায়ও সরকারের কারণ তারা একটি যথাযথ শিক্ষা ব্যবস্থা, আইনের শাসন সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেনি। অবশ্য যে দেশে প্রতিদিন ২০ জন মানুষ মশার কামড়ে মারা যায়, অথচ সরকার ও বিরোধীদল কেবল মাত্র ক্ষমতায় যাওয়া ও ক্ষমতায় থাকা নিয়ে উচ্চবাচ্য করে, সেখানে ভিন্ন কী আশা করা যায়, সেটি বলা মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। লেখক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ