শিরোনাম
◈ ইরান কখনো আপস করবে না: খামেনি ◈ নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান, প্রস্তুত গুলশানের বাড়ি ◈ ইসরায়েলি গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক বিদেশে যেভাবে কাজ করে! ◈ ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা 'বিবেচনা' করছেন ট্রাম্প, যুক্তরাজ্যের ঘাঁটি থেকে বের হয়েছে আমেরিকার বোমারু বিমান ◈ দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস ◈ ইসরা‌য়ে‌লের হু‌শিয়া‌রি: যুদ্ধাপরাধ বন্ধ না করলে সাদ্দামের মতোই ইরা‌নের স‌র্বোচ্চ ‌নেতার জন্য ফাঁসির মঞ্চ প্রস্ত‌ত ◈ ইসরাইলে এখন পর্যন্ত যে হামলা হয়েছে তা সতর্কতামূলক, শিগগিরি শাস্তিমূলক অভিযান শুরু হবে: নতুন সেনাপ্রধা‌নের কড়া বার্তা  ◈ ইরান কি হরমুজ প্রণালি বন্ধ করতে পারবে, করলে বিশ্বে এর প্রভাব কেমন হবে? ◈ বাংলা‌দেশ ফুটবল দ‌লের  কোচিং স্টাফ বদ‌লে যা‌চ্ছে! ◈ অ‌স্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশের ড্রাফটে রিশাদ-মুস্তাফিজসহ ১১ বাংলাদেশি ক্রিকেটার

প্রকাশিত : ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১২:২১ রাত
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১২:২১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ এবং ভাববাদ

আহসান হাবিব

আহসান হাবিব: [১] কার্ল মার্ক্স বলেছিলেন, ‘জগৎকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব’। অতঃপর তিনি আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ। তাঁর আগে যা দাঁড়িয়েছিল উল্টোভাবে, অর্থাৎ  পা উপরে মাথা নীচে। দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ কথাটার মানে কী? এককথায় যেকোনো বস্তুর অস্তিত্বের মূলে হচ্ছে ‘বিপরীতের সহাবস্থান’। ‘বিপরীতের সহাবস্থান’ কথাটাই দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের মূল সত্য। এটাকেই কেন্দ্র করে চেতনা গড়ে ওঠে। এই অবস্থানের কারণ যদি কেউ মনে করে বহিরাগত, সে ভাববাদী, অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাসী। আর বস্তুর নিজস্ব সত্যে যে আস্থা রাখে, সে বস্তুবাদী। জ্ঞানের যেকোনো শাখার সত্য উন্মোচনে দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের বিকল্প নাই।

[২] সমাজকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন? একই পদ্ধতি: দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ। কেননা যে কেন সমাজ টিকে থাকে একটি সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থায় যার ভেতর ক্রিয়াশীল দুটি পরস্পর বিপরীতমুখী শক্তিসাম্যে। একটি ছাড়া অপরটির টিকে থাকা অসম্ভব। যেমন আমরা যে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অন্তর্গত, তার দুটি প্রধান উপাদান: একদিকে মালিক অন্যদিকে শ্রমজীবী। তারা পরস্পর বিপরীতমুখী। মালিক শোষণ করে, শ্রমজীবী শোষিত হয়। শোষিত হয় বলে সেটি টিকে থাকে না, তা নয়, থাকে এবং এই থাকার গভীরে আছে শর্ত। বিজ্ঞান এই শর্তগুলোকে ব্যাখ্যা করে। কার্ল মার্ক্স ঠিক এই কাজটাই করেছিলেন। তিনি পুঁজিবাদী সমাজের বৈজ্ঞানিকতা ব্যাখ্যা করেছিলেন। কাজটি জটিল এবং সকলের বোধগম্য নয়।

[৩] বোধগম্য নয় বলেই সমাজকে মানুষ ব্যাখ্যা করতে না পেরে হতাশায় নিমজ্জিত হয়। তারা স্রেফ পুঁজিবাদকে গালি দিতে থাকে, যেন এটা কোন আকাশ থেকে পড়েছে, এর কোনো বস্তুগত সত্য নেই। যেন পুঁজিপতি এই রাজনৈতিক বর্গটি আরোপিত। প্রকৃত সত্য হচ্ছে পুঁজিবাদকে ভাঙতে হলে তার নিয়ম জেনে এমন এক শক্তির সমাবেশ ঘটাতে হবে যা তাকে ভেঙে ফেলতে সক্ষম। যেমন আমরা যদি একটি ডিম ভাঙতে চাই, তাহলে তার টিকে থাকার পরস্পরপর আকর্ষণ ক্ষমতার চাইতে অধিক শক্তি প্রয়োগ করতে হবে।

কী সেই শক্তি? আর কিছু নয়Ñ শোষিত শ্রমজীবীদের রাজনৈতিক শক্তি যা পুঁজিবাদ নিজেই তৈরি করে। অর্থাৎ তাকে ভাঙার সব ইন্ধন তার নিজের ভেতরেই আছে। এটাও দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদেরই বৈশিষ্ট্য। টিকে থাকা এবং ভাঙার সব শর্তই বিদ্যমান থাকে। তবে বস্তুর রূপান্তরের বিজ্ঞান না জানলে কিছুই রূপান্তর করা যায় না। প্রকৃতি তার নিয়মে রূপান্তর ঘটিয়ে চলেছে কিন্তু মানুষকে তা করতে হলে তার নিয়ম জানতে হয়। আর এই নিয়ম মেনে চলে যে পদ্ধতি তার নাম দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ।

[৪] ভাববাদ দিয়ে কেন ব্যাখ্যা করা যায় না? কারণ তারা বস্তুর সহাবস্থানকে আরোপিত মনে করে। তারা মনে করে মানুষ কোনোকিছুই পারে না যদি না বহিঃস্থ কোন শক্তি এটা করে দেয়। প্রকৃতিতে যা কিছু ঘটে, তাদের মতে, ঘটে কোনো শক্তির ইশারায়। ফলে তারা রূপান্তরের কার্যকারণকে শনাক্ত করতে পারে না। তারা শুধু দেখে আর বিশ্বাস করে। যেন তারা কলুর বলদ। অথচ পৃথিবীতে যা কিছু মনুষ্যসৃষ্ট, তা সম্ভব হয়েছে বস্তুর বৈশিষ্ট্য জেনে এবং বুঝে। বিপরীতের সহাবস্থান ছাড়া কোন বস্তু টিকতে পারে না এই সত্য জানার পর শুরু হয় তার রূপান্তরকরণের যজ্ঞ। [৫] দারিদ্র, বৈষম্য, টাকা পাচার, বেকারত্ব, জলবায়ুর পরিবর্তন, মুদ্রাস্ফীতি, উন্নতি ইত্যাদি নিয়ে সমাজে শুধু হাহাকার শুনি। এইসব বদলাবার কোনো পদক্ষেপ দেখি না। দেখি না, কারণ সঠিক ব্যাখ্যা করার ক্ষমতার অভাব, অভাব রাজনৈতিক প্রজ্ঞার। লেখক: ঔপন্যাসিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়