শিরোনাম
◈ একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক কোন দিকে? নানা প্রশ্ন ◈ স্থলপথে কেন বাংলাদেশি পণ্যে নিষেধাজ্ঞা, জানাল ভারত ◈ খালেদা জিয়ার সঙ্গে কর্নেল অলির সাক্ষাৎ ◈ ভারতে কমেছে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার, বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে-সৌদি আরবে ◈ সাফ শি‌রোপা জেতা হ‌লো না বাংলা‌ে‌দে‌শের, ভার‌তের কা‌ছে টাইব্রেকারে হে‌রে গে‌লো ◈ ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা, দিলীপ ঘোষের হুঁশিয়ারি: ‘বাংলাদেশ টক্কর দিলে বাঁচবে না’ ◈ যে ‘৩ শর্তে’ সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুতদের বিক্ষোভ স্থগিত হয় ◈ আইসিসি’তে জয় শাহ: ক্রিকেটে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট করছে ভারত? ◈ সাবেক সেনাসদস্যদের বিক্ষোভ নিয়ে যা জানালেন আইএসপিআর ◈ ‘ইউনিফর্ম পড়ে আসছি, আমি কাপুরুষ না’- চাকরিচ্যুত সেনাদের উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২০ জুলাই, ২০২৩, ০১:২৫ রাত
আপডেট : ২০ জুলাই, ২০২৩, ০১:২৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যুদ্ধ কী?

মাসুদ রানা

মাসুদ রানা: মানব সভ্যতা বিকশিত হওয়ার পর, যে-সময় থেকে ইতিহাস লিখিত হচ্ছে, সে-সময় থেকে আজপর্যন্ত পৃথিবী কি কখনও যুদ্ধহীন ছিলো? উত্তরটি হচ্ছে: না, ছিলো না। যুদ্ধ অতীতে ছিলো, আজও আছে এবং অদূর ভবিষ্যতেও যুদ্ধ হবে, এমনকি সুদূর ভবিষ্যতেও না হওয়ার কোনো বস্তুনিষ্ঠ কারণ পরিদৃষ্ট নয়। এহেন যুদ্ধ সম্পর্কে আমাদের দার্শনিক উপলব্ধি কী? প্রথমেই প্রশ্ন আসে, যুদ্ধ কী? অক্সফৌর্ড ডিকশনারিতে যুদ্ধ তথা war-এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে: ‘a state of armed conflict between different countries or different groups within a country’ – অর্থাৎ, বিভিন্ন দেশের মধ্যে কিংবা একটি দেশে বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষের অবস্থাই হচ্ছে যুদ্ধ। উপরের সংজ্ঞাটি বুঝার ক্ষেত্রে চাবিশব্দটি হচ্ছে কনফ্লিক্ট (Conflict) বা সংঘর্ষ। তো, সেই কনফ্লিক্ট বিষয়টি কী? পুনরায়, অক্সফৌর্ড ডিকশনারি বলছে, কনফ্লিক্ট হচ্ছে a serious disagreement or argument – অর্থাৎ, সাংঘাতিক মতভিন্নতা বা বিতর্ক।

নাহ্! আমি এ-সংজ্ঞায় সন্তুষ্ট নই। কারণ, একই দেশে দু’দল সশস্ত্র মানুষের মধ্যে কিংবা পাশাপাশি দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সাংঘাতিক রকমের মতভিন্নতা থাকার পরও তারা পাশাপাশি অবস্থান করছে, কিন্তু সে-অবস্থানটিকে কি আমরা যুদ্ধ বলবো? না, নিশ্চয় না। মতভিন্নতাকে আমরা দ্বন্দ্ব বলতে পারি। কিন্তু দ্বন্দ্ব মানেই যুদ্ধ নয়। আমাদের সমাজে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বিশ্বাসের ভিন্নতা তথা দ্বন্দ্ব আছে, উপাস্যের ভিন্নতা তথা দ্বন্দ্ব আছে: কিন্তু এ-ভিন্নতা বা দ্বন্দ্ব নিয়েই তার পাশাপাশি অবস্থান করছে। এ-অবস্থান যুদ্ধ নয়।

তাহলে, যুদ্ধ আসলে কী? যুদ্ধের সংজ্ঞা বিকশিত করার আগে, তার একটি জেনেসিস দরকার, যার জন্য আমরা নির্ভর করবো যুক্তির ওপর। এখানে আমাদেরকে ব্যবহার করতে হবে বিশ্লেষণ পদ্ধতি। অর্থাৎ, আমাদেরকে দেখতে হবে যুদ্ধের ভেতরে কী কী আছে।

যুদ্ধে আসলে কী কাজ করা হয়? যুদ্ধে একপক্ষ তার প্রতিপক্ষকে প্রয়োজনে হত্যা করে হলেও পরাজিত বা অধীনস্থ করতে চায়। কিন্তু কেনো? কারণ, দুই পক্ষের মধ্যে রয়েছে এমন কোনো বস্তু বা বিষয় যা শেষবিচারে বস্তুগতভাবে ভোগ্য কিন্তু বিনাশ্রমে লভ্য নয় বলে উভয় পক্ষই একচ্ছত্রভাবে অধিকার করে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। অর্থাৎ, যুদ্ধ হয় কোনো কিছু নিয়ে, যার আকার ও প্রকার বস্তুগত কিংবা ভাবগতও হতে পারে, কিন্তু শেষপর্যন্ত তার তার্ৎ্য নিতান্ত বস্তুগত, যা বায়ুমণ্ডলের অফুরান অক্সিজেনের মতো অনায়াসে ভোগ করা যায় না, অথচ উভয় পক্ষের কাছে এটি একচ্ছত্রভাবে রক্ষণযোগ্য, অর্জনযোগ্য ও ভোগ্য অধিকার হিসেবে কাম্য। লক্ষ করুন, বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন এখনওপর্যন্ত অফুরান ও অনিয়ন্ত্রণযোগ্য প্রত্যক্ষিত হওয়ার কারণে এবং তা শ্বাস-নিঃশ্বাসের জন্য অনায়াস লভ্য বলে, তা নিয়ে যুদ্ধ হয় না। কিন্তু স্থল ও জল নিয়ে যুদ্ধ হয়। কারণ, স্থলে ও জলে য-বস্তুগত ভোগ্য রয়েছে, তার যোগান অফুরান হিসেবে প্রত্যক্ষিত নয়, যাকে আমরা অর্থনীতির ভাষায় স্কার্স বলি।

সহজ-করে বলতে গেলে বলা যায়, a war is a violent armed competition between two or more parties to retain or snatch the right to control anything they think worth staking their lives on – অর্থাৎ, যুদ্ধ হচ্ছে দুই বা ততোধিক পক্ষের মধ্যে কোনো কিছুর ওপর অধিকার ও নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার কিংবা কেড়ে নেওয়ার সহিংস ও সশস্ত্র প্রতিযোগিতা, যার জন্য তারা জীবন নিতে বা দিতেও প্রস্তত। ১৮/০৭/২০২৩। লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়