শিরোনাম
◈ আইপিএল আয়োজনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে আরব আমিরাত ◈ ভারত আসবে না বাংলাদেশ সফরে, হবে না এশিয়া কাপও ◈ এপ্রিলে  ১০১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে বিজিবি ◈ ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়: সারজিস আলম ◈ জনআকাঙ্খা ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জনতা পার্টি বাংলাদেশের ◈ ভারত-পাকিস্তান তৃতীয় দিনের মতো সংঘর্ষে জড়ালো, যুদ্ধাবস্থা সীমান্তজুড়ে ◈ 'আপ বাংলাদেশ' নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ◈ দেশে অনলাইন জুয়া সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে: অনলাইনে জুয়া বন্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ (ভিডিও) ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধের ডাক হাসনাতের (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১১ জুন, ২০২৩, ০২:২২ রাত
আপডেট : ১১ জুন, ২০২৩, ০২:২২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চিন্তা করতেছি ভিন্ন দিক

রহমান বর্ণিল 

রহমান বর্ণিল: আমেরিকার ধারণা, শেখ হাসিনা এই অঞ্চলের ছোট ছোট অর্থনীতির দেশগুলোকে রাশিয়া-চীনপন্থি করার লক্ষ্যে গোপনে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনাকে হুমকি মনে করছে আমেরিকা। ঘটনা যাইহোক তবে এটা সত্য যে উপমহাদেশীয় রাজনীতিতে শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক শক্তিশালী এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে উঠেছেন। স্পষ্টত এটা শেখ হাসিনা তথা বাংলাদেশের জন্য একটা অর্জন। তৃতীয় বিশ্বের একটা দেশ এবং সে দেশের একজন নেতাকে আমেরিকা এতটা মাথাব্যথার কারণ এমনি এমনি মনে করে না। আর কারণটাও যে খুব বেশি নিরর্থক নয়, সেটা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অর্থনীতিক প্রবৃদ্ধি, দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা দিকে চোখ রাখলে বোঝা যায়। 

আমি চিন্তা করতেছি ভিন্ন দিক। স্বাধীনতার আগে-পরে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব বিশ্বের মোড়ল দেশগুলোকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। কী নেতৃত্বে, কী কূটনৈতিক কৌশলে, কী রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর দূরদর্শী চিন্তায়, এমনকি দৈহিক গড়নেও নেতৃত্বস্থানীয় রাষ্ট্রসমূহের নেতাদের পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সামনে বেড়াল সাদৃশ্য দেখাতো! ঘুম হারাম করে দিয়েছিল আমেরিকা এবং আমেরিকা তৎকালীন প্রেমিকা রাষ্ট্র চীন, পাকিস্তানের। ফলশ্রুতিতে সেইসব রাষ্ট্রের যোগসাজশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। ইতিহাস বলে বঙ্গবন্ধুর হত্যার আগে পঁচাত্তরের কুশীলবরা নিয়মিত মার্কিন দূতাবাসের আসা-যাওয়া করতো। বঙ্গবন্ধু হত্যার সমস্ত পরিকল্পনা সম্পর্কে পূর্ব থেকে ওয়াকিবহাল ছিল তৎকালীন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রনীতি, কুটনৈতিক দক্ষতা এবং তার সত্যিকারের রাষ্ট্রনায়কোচিত ব্যক্তিত্বের কাছে হাস্যস্পদে পরিণত হচ্ছিল তৎকালীন বিশ্বশাসকেরা। এবারে রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব বিশ্ব মোড়লদের দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। শেখ হাসিনাকে থামিয়ে দিতে দেশি-বিদেশি প্রতিপক্ষ পঁচাত্তরের মতো কোনো ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।

নির্বাচন, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার; এগুলো একেকটা ছুতোমাত্র। বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকার মূল মাথাব্যথা হচ্ছে শেখ হাসিনার বোল্ড লিডারশিপ। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা কৌশলের জন্য বাংলাদেশে সামরিক ঘাঁটি করতে আমেরিকা বহুদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে। এই বিষয়ে শেখ হাসিনাকে কিছুতেই টলাতে পারছে না আমেরিকা। এছাড়াও আমেরিকা বাংলাদেশকে চীন-রাশিয়া বলয় থেকে বের করতে চাচ্ছে। শেখ হাসিনা আমেরিকার কাছে নতিস্বীকার করে তাদের এই বিষয়গুলো মেনে নিলে দেশের স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট হলেও শেখ হাসিনা যে ওয়াশিংটনের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

পৃথিবীর ৭০টি দেশে আমেরিকার প্রায় ৮শত সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। ১৭৯টি সেনা দেশে নিজস্ব মোতায়েন করে রেখেছে আমেরিকা। বিশে^র বিভিন্ন দেশে প্রায় আড়াই লাখ মার্কিন সেনা মোতায়েন করেছে দেশটি। বিশ^ব্যাপী আমেরিকা যে সামরিক জাল বিছিয়ে রেখেছে, শেখ হাসিনার কারণে সেই জালে এখনো জড়াতে পারেনি বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াশিংটনের মূল উদ্বেগের কারণ এটাই। বিএনপি-জামায়াতের মতো প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক ফিলোসোফির সঙ্গে আমেরিকার রাজনৈতিক ফিলোসোফির কোনো সাদৃশ্য নেই। সুতরাং বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতায় বসাতে ওঠে-পড়ে লাগারও আমেরিকার কোনো কারণ নেই। কারণ থাকতে পারে একটাই বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে আমেরিকার বাংলাদেশকে চালিত করতে পারবে, মানে তাদের স্বার্থগুলো হাসিল করতে পারবে।

শর্তসাপেক্ষে ভারতকে বাংলাদেশের একটা ট্রানজিট সুবিধা দিলে শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে বলে এদেশের বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন শুরু করে। শেখ হাসিনা মেরুদণ্ডহীন তাই ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারছে না বলে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রব ওঠে। অথচ আমেরিকাকে হিম্মত দেখিয়ে কথা বললে সেই স্বার্থান্ধগোষ্ঠী শেখ হাসিনার বিরোধিতা করে। একেবারে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিএনপির চিন্তার সক্ষমতা ঠিক এতোটুকুই। এই ঘিলু নিয়ে রাজনীতি করে বলেই দলটির আজ এই ছন্নছাড়া অবস্থা।  

বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা, গণতন্ত্র, জনগণের ভোটাধিকার এই আলোচনার বিষয়বস্তু নয়। আমেরিকার এমন আদাজল খেয়ে নামার কারণও এগুলো নয়। এগুলো হচ্ছে আসল স্বার্থগুলো উদ্ধারের একটা মোড়কমাত্র। পাকিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, লিবিয়ার দিকে তাকান। দেশগুলোর অভ্যন্তীরণ বিষয়ে নাক গালানোর সুযোগ পেতে পেতে আমেরিকা দেশগুলোকে ধ্বংস করে দিছে। এই লেখাটিকে জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে ফেলবেন না। সেসব ভিন্ন আলোচনা। এটা দেশের সার্বভৌমত্বের ব্যপার। আপনার রাজনীতিক মতাদর্শ যাইহোক, একজন সুনাগরিক হিসেবে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপনার ভূমিকা অবশ্যই আমেরিকার এই উপযাচক ভূমিকার বিরুদ্ধে থাকা উচিত। লেখক : কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়