সুমন্ত আসলাম: দেড় ঘণ্টা ধরে একনাগারে কথা বলে যাচ্ছে বউ, কতদিন বাজারে যাও না, মনে আছে। বাসায় কোনো মাছ নেই, মাংস নেই, তরি-তরকারি কিচ্ছু নেই। কলেজে পরীক্ষা চলছে, সকালে যাই, চারটা পর্যন্ত ডিউটি দিতে হয়। বাসায় ফিরে মেয়ের পড়া নিয়ে বসতে হয়। এর মাঝে বাজারে যাবো কখন? কথার ঝড়ের ফাঁকে ফ্রিজটা খুললাম, নিচের অংশের দ্রব্য কমেই গেছে খানিকটা, কিন্তু উপরের অংশের দ্রব্যসমূহের যা দৃশ্যমান, তাতে আরও সাত দিন দুপুর-রাতের টেবিল সাজিয়ে দেওয়া যাবে নিশ্চিন্তে। ভ্রু কুঁচকিয়ে বউ তাকালো আমার দিকে, ‘ওখানে কী দেখো? আমি যা বলি তাই শোনো’। ‘শুনছি না কেবল, দেখছিও’। ‘কী দেখছো’!
‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আমি খালি ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকি, সংসারের কোনো চিন্তা নেই, বাজারের কী হালচাল জানা নেই আমার, আরও কতো কী’। আমি একটু থেমে বলি, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং তা বোঝার ও সয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ার মাঝেই যে অপার শান্তি, সেটা কেবল আমি বুঝলাম, আমেরিকা বুঝলো, কিন্তু আমাদের যারা ভালোবাসার কথা শোনান প্রতিদিন, তারা বোঝে না, সম্ভবত জানেও না’।
বউ কী বুঝলো জানি না, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আপাতত বন্ধ করে দিলো সে চুপচাপ। একটু পর কিচেনে কী একটা ভাঙ্গার শব্দ হলো। আমি আরও বুঝে গেলাম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলে ভাঙচুর শুরু হয়ে যায় একসময়, ভয়ংকর কিছু শব্দ হতে থাকে প্রতিবাদের। ফেসবুক থেকে