দেবদুলাল মুন্না: [১] আজকের দুনিয়ায় ‘মানবতাবাদী’র পক্ষে যদি কেউ ফিলসফিক্যালি বলেন, তবে সেটা হাস্যকরই। ‘মানতাবাদী’ কে হে? যদি ঘুরিয়ে বলি, মানব মাত্রেই তো মানবতাবাদী, তাইলে? ফুকো এই নিয়া প্রশ্ন তুলেছেন। মাসরুর আরেফিন তার ব্যখাও দিয়েছেন, কিন্তু তিনদিনের মাথায় বইয়ের নাম পালটানো ও আগের নামে ফিরে যাওয়া আমাকে স্বস্তি দিয়েছে।
[২] আমরা ভুলে যাই নাই, আন্দোলনের দার্শনিকরা ধর্মীয় নির্দেশনা ছাড়া স্রেফ যুক্তির সাহায্যে সদগুণ তৈরি হতে পারে বলে যে দাবি করেছিলেন, তা এডমুন্ড বার্ক এবং জোসেফ দে মাইস্ট্রোর মতো ধর্মীয় ও রাজনৈতিক রক্ষণশীলদের কাছে সমালোচিত হয়েছিল। তাঁরা একে মনুষ্য পূজার সাথে তুলনা করেছিলেন। মনুষ্যকে পূজা করার কিছু নাই।
[৩] অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারী মতে, ১৮১২ সালে একজন ইংরেজ ধর্মযাজক প্রথম ‘মানবতাবাদ’ শব্দটিক সেসব ব্যক্তিদের নির্দেশ করার জন্য ব্যবহার করেন যারা অলৌকিকতায় বিশ্বাস করতেন না।
[৪] একই সময়ে জার্মানীতে মানবকেন্দ্রিক দর্শনের অর্থে ‘মানবতাবাদ’ শব্দটি তথাকথিত বাম হেগেলবাদীরা ব্যবহার করেন। আর্নল্ড রুজ এবং কার্ল মার্ক্স স্বৈরাচারী জার্মান সরকারে গির্জার প্রভাবের তীব্র সমালোচক ছিলেন। শব্দটির বিভিন্ন অর্থ নিয়ে অনেক আগে থেকেই বিভ্রান্তি বিরাজমান হয়ে আসছে।
[৫] কার্ল মার্ক্স তো সামাজিক নৈতিকতার ও সমালোচনা করেছেন।
[৬] ফলত মাসরুর বইয়ের নাম পরিবর্তন না করে ‘মানবতাবাদীর বিপক্ষে’ রাখায় অভিনন্দন।
[৭] কিন্তু এতোবছর পর এই ক্লিশে টার্মের ব্যবহার কেন? আরও নতুন কোনো টার্ম আগে বসলে আরও ভালো হইতো মেইবি।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক