শিরোনাম
◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি ◈ বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স: কীভাবে পাবেন, কী কী শর্ত মানতে হবে?

প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০১:৫৯ রাত
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেন অনিয়ম, অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে?

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: ‘কভার্ড ভ্যান আটকে ‘ছিনতাই’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার’Ñ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্সে মাদক আনতে গিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী আটক’ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস। কী লজ্জা! এইটা আমাদের জাতীয় লজ্জার ব্যাপার। এই ধরনের শিরোনাম আমাদের সংবাদে এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কী সাংঘাতিকÑ লেখাপড়া করতে আসা, জ্ঞানঅর্জন করতে আসা শিক্ষার্থীরা মারামারি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও আসক্তিতে জড়িয়ে যাচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে? এর কোনো গবেষণা কি আছে? অথচ পৃথিবীর অন্য যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটলে এর উৎস কারণ নির্ধারণের জন্য গবেষণা হতো। ইনফ্যাক্ট, গবেষণাই তো বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজের অন্যতম কাজ। আমরা কতো জিনিস নিয়ে গবেষণা করি অথচ নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের নানা সমস্যার সমাধান কল্পে এইসব সমস্যার কারণ উদ্ঘাটনে কোনো গবেষণা নাই। গবেষণা করবেইবা কারা। গবেষণা করলেইতো থলের বিড়াল বের হয়ে যাবে। কারণ অধিকাংশ কারণের উৎস হলো রাজনীতি এবং রাজনীতির কারণে শিক্ষায় কম বরাদ্দ দেওয়া। 

যারা লেখাপড়া করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশের সরকারের কর্তব্য এইটা নিশ্চিত করা যেন শিক্ষার্থীরা ভালো থাকার জায়গা পায়, ভালো খাবারের ব্যবস্থা থাকে, ভালো পরিবেশ থাকে। আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ তাদের ফুল রাইড স্কলারশিপের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সব জায়গায় করা হয়। অর্থাৎ এইটা নিশ্চিত করতে হবে যে আর্থিক সংকটের কারণে কোনো শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার যেন বেঘাত না ঘটে। 

কয়েকদিন আগে আমার অফিসে এক শিক্ষার্থী এসেছিলো এই কথা বলতে যে সে লেখাপড়া করতে পারে না। তাকে রাতে গেস্ট রুমে ডেকে নিয়ে যায়। নেতাদের নাম মুখস্ত করায়, তাদের চেনায়, তাদের দেখলে কীভাবে সালাম দিতে হবে ইত্যাদি আদপকায়দা শেখানোর নামে টর্চার করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে যাদের শিরদাঁড়া সোজা রাখা শেখার কথা, মুক্ত মনে মুক্ত চিন্তা করতে শেখার কথা সেই সময় উল্টো তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী একটা বিছানার জন্য তাদের মস্তক বন্ধক দিচ্ছে। মিটিং মিছিলে যাওয়ার বিনিময়ে থাকার জায়গা পাচ্ছে। আর একবার বন্ধক দিয়ে ওই পথে গেলে সেখান থেকে আর ফেরা হয় না। বর্তমান ছাত্ররাজনীতিতে রিক্রুট-এর এইটা একটা তরিকা। আর একটা তরিকা হলো শিক্ষার্থীদের আর্থিক অসঙ্গতির সুযোগ নিয়ে তাদের একটি মেসে থাকার জায়গা দেওয়া, টিউশন খুঁজে দেওয়া ইত্যাদির মাধ্যমেও রিক্র্যুট চলে। 

সরকার যদি জিডিপির ৫.৫ শতাংশ বরাদ্দ দিতো তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুযোগ-সুবিধা আরও অনেক বাড়াতে পারতো। সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং এলামনাইদের দায়িত্ব আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন অন্তত আর্থিক কারণে চোরাবালিতে পা না বাড়ায়। যেন লেখাপড়া করে সুনাগরিক হয়। পুরো দেশের সকল প্রকার অনাসৃষ্টির জন্য দায়ী হলো আমাদের সুশিক্ষার পরিবেশের অভাব। সমস্যাগুলো এতটাই সহজ সরল যে সমস্যার মূল বোঝার জন্য ইনফ্যাক্ট গবেষণারও প্রয়োজন নেই। সমস্যা হলো সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব যাদের ওপর তারাই সমস্যা সৃষ্টির স্থপতি। লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়