শিরোনাম
◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন

প্রকাশিত : ০৪ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৩:১৭ রাত
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৩:১৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কথার রাজনীতিতে কে এগিয়ে, পিছিয়ে পড়ছে কারা? 

অজয় দাশগুপ্ত, সিডনি থেকে 

অজয় দাশগুপ্ত, সিডনি থেকে: রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিদেশে বসেও টের পাই। প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন জনসভায় উত্তাল দেশের চিত্র দেখতে পাচ্ছি। বিএনপি যে কোমর বেঁধে নেমেছে, সেটা স্পষ্ট। গোড়াতেই বলে রাখি, এখন দেশের রাজনীতি নিয়ে মানুষের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। সাধারণ মানুষের ভেতর রাজনীতিবোধ কাজ করে না। তাদের মূল কাজ খেয়ে পরে বেঁচে থাকা। একটা কথা মানতেই হবে, মাঝে কয়েক বছর দেশের অবস্থা বেশ ভালোই চলছিল। মনে হচ্ছিলো, আর কোনোকালে হয়তো বিরোধী দল নামে কিছুর দরকারই পড়বে না বা পড়লেও তার নাম বিএনপি হবে না। কিন্তু এখন তা মনে হবার আর কোনো কারণ নেই। এই যে বিএনপির বেরিয়ে আসার পেছনে তাদের শ্রম বা কাজ যতোটা তার চেয়ে বেশি দায়ী আওয়ামী লীগ তথা সরকারি দলের ব্যর্থতা। একের পর এক দুর্নীতির ঘটনা ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে পড়া তার ওপর করোনা। সব মিলিয়ে চাপের মুখে সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যতীত আর কারো প্রতি মানুষের বিশ্বাস আছে বলে মনে হয় না। তিনি একা ধরে রেখেছেন সবকিছু। 

বলাবাহুল্য এ কারণে  নানা ভাবেই তাঁকে একা করে তোলা হয়েছে। তাঁর সাথে চলার মতো যোগ্য নেতা নেতৃত্ব দলে বিরল। অন্য দিকে লাগামহীন এককমুখী সমাজ ও রাজনীতি বিএনপি জোট আমলের সব কষ্ট-দুঃখ বা অনাচার ক্রমাগত ভুলে গেছে মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের চাওয়া পাওয়ার ফারাক যতো বাড়ে ততো তারা সরকারের ওপর অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে। দেশে সেটাই ঘটছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের কথাবার্তা লাগামহীন বাক্যে কি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তা তারা বোঝেন বলে মনে হয় না। 

আদর্শিকভাবে বিএনপি সমর্থন করা আমাদের জন্য কঠিন। যতকাল তারা বঙ্গবন্ধু চার জাতীয় নেতা সহ ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হবে, যতকাল ১৫ আগস্টের খুনিদের নেপথ্যে মদদ বা সমর্থন দেবে ততকাল তাদের দলের জন্য অনুরাগও হারাম। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি দায়বদ্ধতা এখন কথার কথা মনে হতে পারে। কিন্তু এটাই দেশ জনতার ভিত্তি। সে জায়গাটুকু আপাতত অদৃশ্য বা নিষ্ক্রিয়। যার কারণ সরকারি দলের উদাসীনতা। এই যে বিএনপির প্রত্যাবর্তন এবং জেলায়-জেলায় মানুষের ঢলের পেছনে নিজেদের ব্যর্থতা খোঁজার চেষ্টা না করলে উত্তরণ হবে কঠিন। কথা মানুষের যেমন সম্পদ তেমনি তার বৈরীও বটে। জিভের মতো ধারালো অস্ত্র দুনিয়ায় নেই। সে জন্য কথা বলার সময় সাবধানে সতর্ক ভাবে বলা উচিত। দুই প্রধান দলের সাধারণ সম্পাদকের কথা যদি বিশ্লেষণ করা যায় দেখবো মির্জা ফখরুল এগিয়ে। কাদের সাহেব একজন ঝানু ছাত্র নেতা। আমাদের যৌবনে ছাত্রলীগের হয়ে দেশ কাঁপাতেন তিনি। কাদের- চুন্নু তখন সারাদেশে পরিচিত। তাদের ওপর সাধারণ ছাত্রদের ভরসা ছিল আকাশ সমান। কালক্রমে চুন্নু ভাই ছিটকে পড়লেও কাদের সাহেব আছেন। তাঁর পরিচিতি ও ব্যক্তিত্বের প্রতি যথাযথ মর্যাদা তিনি কি আদৌ দিতে পারছেন? 

ডয়েচ ভেলে নামে জার্মানির বাংলা রেডিও অথবা অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি এখন বেশ জনপ্রিয়। উপস্থাপক খালেদ মুহিউদ্দীন দেশের বাইরে থাকায় প্রশ্ন নির্বাচনে স্বাধীনতা ভোগ করেন। সে কারণে অনুষ্ঠানটি জনপ্রিয়। সম্প্রতি তার সাথে আলাপচারিতায় মির্জা ফখরুল প্রমিত বাংলায় শুদ্ধ উচ্চারণে যে সব কথা বলেছেন যেভাবে রবীন্দ্রনাথের কবিতা কোট করেছেন তাতে চমৎকৃত হবার বিকল্প নেই। বিএনপি সমর্থন না করলেও তাঁর প্রতি তাঁর কথার প্রতি অনুরাগ জন্মাবে মানুষের। এটা পজিটিভ দিক। আমাদের দেশের নেতারা সাধারণত উত্তেজিত থাকেন। চড়া গলায় কথা বলেন। সে জায়গায় ফখরুল সাহেবের পরিমিত আলাপ মনে দাগ ফেলতেই পারে। আমি কারো সমালোচনা বা নিন্দা না করেই বলবোÑ এমন করে দুই দলের নেতাদেরই কথা বলা উচিত। তাতে মানুষ বিচার বিবেচনা করার জন্য সুযোগ পাবে বেশি। নয়তো পাল্লা একদিকে ভারী হয়ে উঠবে। কথার রাজনীতিতে এটুকু বোঝা এখন সময়ের চাহিদা। লেখক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়