সাঈদ ইফতেখার আহমেদ: অনেকের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘ইসলাম বিদ্বেষী’ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। কিন্তু আমি কখনো শুনিনি যে এ দেশে মুসলমানদের ঈদের নামাজ বা জুম্মার জামাতে পুলিশ পাহারা বসাতে হয়েছে। আবার এমনও শুনিনি যে, নারীদের পোশাকের কারণে এ দেশে মুসলমানদের ধর্ম পালনে সমস্যা হচ্ছে। মুসলমানদের প্রতি সরকারের অবস্থান বা নীতির কারণে, অথবা নারীর পোশাক নিয়ে সমস্যা হবার জন্য কোনো মুসলমানকে এ দেশ থেকে চলে যেতেও শুনিনি। বরং দেখা গেছে ‘ইসলামপন্থী’ বা মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতি যারা করেন, তাদের অনেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
অপর দিকে, অনেকের কাছে বাংলাদেশ হলো ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির’ দেশ। কিন্তু ছোটকাল থেকেই দেখে আসছি, প্রতি বছরই দুর্গাপূজা সম্পন্ন করবার জন্য পুলিশ পাহারার প্রয়োজন হচ্ছে। সম্প্রীতির দেশ হলে উৎসবে পুলিশ পাহারার প্রয়োজন হচ্ছে কেন? ধর্মীয় উৎসব এক্সক্লুসিভ উৎসব। এটি সর্বজনীন নয়। ধর্ম যার উৎসব তারই। স্বেচ্ছায় কেউ ভিন্ন ধর্মের উৎসবে যোগদান করতে পারেন, এটি তার নিজস্ব বিষয় এবং ব্যক্তিসাধীনতা। মূল বিষয় হলো যে যে ধর্ম পালন করুক না কেন, অন্য ধর্মালম্বীদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতাকে সম্মান করা। অন্য দেশ থেকে নেতিবাচক উদাহারণ টেনে এনে নিজ দেশের নেতিবাচক কাজকে জায়েজ না করা; সম্ভব হলে বিশ্বের সামনে ইতিবাচক উদাহারণ তৈরি করা।
সবাই তাদের ধর্মকে শ্রেষ্ঠ ধর্ম মনে করেন। ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ভর করে তাদের অনুসারীরা কী ধরনের আচরণ করছে তার উপর। কেননা ভিন্ন ধর্মের লোকজন আপনার ধর্ম গ্রন্থে কি লিখা আছে তা দেখতে যাবে না। আপনার ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ভর করছে আপনার কথায়, কাজে, আচরণে এবং সহিষ্ণুতায়। আপনি আচরণে শ্রেষ্ঠ হন, আপনার ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব এমনি প্রমাণিত হয়ে যাবে। বাংলাদেশে এখন শরৎ ঋতু। সবাইকে শরতের শুভেচ্ছা।
আপনার মতামত লিখুন :