আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর): ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে যশোরের বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে ৭ হাজার ২১ কোটি ৫১ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। নির্ধারিত ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তা ৩১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা বেশি, যা প্রবৃদ্ধিতে দাঁড়ায় ৪.৭২ শতাংশ।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, আগের অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালে এই হাউসের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। আদায় হয়েছিল ৬ হাজার ১৬৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, অর্থাৎ অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হয় ২১৯ কোটি ৮ লাখ টাকা।
রাজস্ব প্রবৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, “চলতি অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ ৮ শতাংশ কমলেও রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩.৫১ শতাংশ। কাস্টমস কর্মকর্তারা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও উপস্থিত থেকে রাজস্ব আদায়ে তদারকি অব্যাহত রেখেছেন। রাজস্ব ফাঁকি রোধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।”
কাস্টমস কর্মকর্তারা মনে করছেন, শুল্কায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, সঠিকভাবে শুল্ক নির্ধারণ ও নজরদারি বৃদ্ধি রাজস্ব বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। তবে ব্যবসায়ী মহলের মতে, শুল্ক ফাঁকি ও পণ্যের মিথ্যা ঘোষণা বন্ধ হলে রাজস্ব আয় আরও বাড়তে পারে।
ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “ল্যাগেজ ব্যবসার আড়ালে অনেক সময় চোরাইপথে পণ্য আসছে। বৈধ পণ্যের সাথেও অনেকে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে শুল্ক ফাঁকি দিচ্ছে। এসব রোধ করা গেলে দ্বিগুণ রাজস্ব আদায় সম্ভব।”
আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, “পদ্মা সেতুর কারণে পরিবহন সহজ হওয়ায় আমদানিও সহজ হয়েছে। উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্যের আমদানি বেড়েছে, ফলে রাজস্ব আয়ও বেড়েছে।”
সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামসুর রহমান বলেন, “প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৬০০ ট্রাক পণ্য আমদানি ও ১৫০-২০০ ট্রাক রপ্তানি হচ্ছে। কাস্টমসের কঠোর নজরদারির ফলে শুল্ক ফাঁকি কমে গেছে এবং অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।”
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামিম হোসেন বলেন, “বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলছে। এতে ভবিষ্যতে কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে।”