শিরোনাম
◈ পিআর পদ্ধতি কী, কেন প্রয়োজন ও কোন দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে?" ◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি

প্রকাশিত : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০২:১৯ রাত
আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০২:১৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাঙালিত্বর শত্রু: হিন্দুত্ববাদ ও ইসলামবাদ

মাসুদ রানা

মাসুদ রানা: আমি যখন ইসলামবাদীদের ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সাংস্কৃতিক স্বৈরতান্ত্রিকতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে লিখি, তখন স্বভাবতঃই ইসলামবাদীরা তা পছন্দ করে না। তারা নেতিবাচক মন্তব্য করেন এবং এদের মধ্যে অনেকেই আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেন। বিপরীতে, যারা ইসলামবাদী নয়, তারা এটি পছন্দ করেন, প্রশংসা করেন, ইতিবাচক মন্তব্য করেন। তবে, তারা যে সবাই ধর্মনিরপেক্ষ, তা নয়। তাদের মধ্যে কিছু হিন্দুত্ববাদী ও কিছু ইসলাম-বিদ্বেষীও থাকে। এটি আমি বুঝি।

আবার, যখন আমি হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্কীর্ণতা, বর্ণবাদিতা, অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি অহিংস অবজ্ঞা ও সংস্কৃতির নামে হিন্দুত্ববাদী আরোপণের বিরুদ্ধে লিখি, তখন হিন্দুত্ববাদীরা ও অসাম্প্রাদায়িকতাবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ইসলামবাদীদের চেয়েও তীব্র আক্রমণ চালায়। এক-সময়ে মার্ক্সবাদী রাজনীতি করে অবশেষে হতাশ হয়ে যারা ইসলামবাদী কিংবা হিন্দুত্ববাদী হয়েছে, তাদের আক্রমণ হয় তীব্র। আমি যখন পয়লা বৈশাখের নববর্ষের সর্বজনীন উৎবকে ধর্মনিরপেক্ষ রাখার জন্যে ধর্মীয় প্রতীক-মুক্ত রাখার পক্ষে লিখলাম, তখন বাসদ-করা এক নব্য ও কট্টর হিন্দুত্ববাদী আমার ওপর তীব্র আক্রমণ চালালো।

আবার, আমি যখন ঈদপোলক্ষে বাসদের গরু জবাই তথা কুরবানি করে ভোজ-উৎবের বিরুদ্ধে লিখলাম, তখন সকল হিন্দুত্ববাদী আমার প্রশংসায় মেতে উঠলো, আর ইসলামবাদীরা আমার মণ্ডুপাত করলো। আসলে, আপনি যদি প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালী হোন, আপনার হবেন নিঃসঙ্গ। কারণ, বাঙালী জাতির মধ্যে প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ ধারা নেই। অধুনা অসাম্প্রদায়িক নামের একক খিচুরি ধারা আছে,যা সচেতন বা অবচেতনভাবে হিন্দুত্ববাদ-প্রভাবিত। তারা সংস্কৃতির নামে হিন্দুত্বের জয়গান ও ভজনা করে।

হিন্দুত্ববাদের বিপরীতে যা ইসলামবাদী বার রাজাকারি পরিচয় গোপন করে সচতুরভাবে ক্রিয়া করে, বাঙালী-মুসলমান, বাংলাদেশী আত্মপরিচয় ইত্যাদি বলে বৃহত্তর ও অখণ্ড বাঙালীত্বের ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক অভিন্নতার বিরোধিতা করে। এরা বস্তুতঃ নব্য পাকিস্তানবাদী, যার বাংলাদেশকে একটি মুসলিম-রাষ্ট্র  হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। দুঃখজনকভাবে সমগ্র বাঙালী জাতি পুনরায় ধর্মীয় লাইনে বিভক্ত এবং আত্মপরিচয়ে বিভ্রান্ত। এটি সাংঘাতিক  উদ্বেগের বিষয়। বিশেষতঃ সম্ভাব্য প্রাক তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ-কালে বাঙালী জাতির এই আত্মপরিচয়গত বিভ্রান্তি ও বিভক্তি এর ভাষিক, সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক অস্তিত্বের জন্যে এক বিশাল হুমকি তৈরি করেছে।

আমি জানি, প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালীর সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, এদের সংখ্যা কম হলেও, এদের যৌথ প্রয়াস সমগ্র জাতিকে অভিন্ন আত্মপরিচয়ে ঐক্যবদ্ধ করে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার বোধ ও প্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে। সরিয়াসলি বলছিঃ ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালী, এক হোন – এক্ষুণি! বিলম্বে যে ক্ষতি হবে, তা হয়তো আপনারা এখন কল্পনাও করতে পারবেন না। আমি সাবধান করে দিচ্ছিঃ ১৯৪৭ সালে আমার যে আমাদের বাংলা দেশের পশ্চিম খণ্ড হারিয়ে বাংলাদেশ পেয়েছে এবং ১৯৭১ সালে সেখানে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছি, আমার দীর্ঘ পূর্বদৃষ্ট তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হলে এর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে।

আর, যদি ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালীত্বের ভিত্তিতে সমগ্র জাতিকে রিকনসাইল করা যায়, বাঙালী জাতির জন্যে আগামীতে এক অভাবনীয় সুযোগ তৈরি হবে। আমার কথা যদি কারও কাছে অর্থপূর্ণ হয়ে ন্যুনতম আবেদন তৈরি করে, তাদের প্রতি অনুরোধ করবোঃ আসুন, ঐক্যবদ্ধ হই! ২৬/০৯/২০২২। লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়