শিরোনাম
◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি ◈ গণপ্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন: ভোলায় নাহিদ ইসলাম  ◈ গৌরনদীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বদলি আদেশ ঘিরে অবরোধ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩

প্রকাশিত : ১৭ জুলাই, ২০২৪, ০৩:২৫ রাত
আপডেট : ০৯ মে, ২০২৫, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কারা রাজাকারের চেতনা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মগজে ঢুকাচ্ছে? 

নাদিম মাহমুদ

নাদিম মাহমুদ: হিসেব করে দেখলাম, আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কিংবা রাজাকার বিপক্ষে কথা বলছি, তাদের একটি বড় অংশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, যাঁদের যুদ্ধের পরপরই জন্ম কিংবা কিছু আগে। ফলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জানা কিংবা শোনার অভিজ্ঞতাটা কিছুটা দীর্ঘ। আজকে যে বাচ্চাগুলো রাস্তায় ‘রাজাকারদের’ ধারণকে স্লোগান দিচ্ছে তাদের বয়স ২০/২৪ বছর। তারা যখন জন্মগ্রহণ করে তখন এইদেশে রাজাকাররা মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন, জাতীয় পতাকা গাড়িতে উড়িয়েছেন। সেইসব স্মৃতি তাদের মস্তিষ্কে থাকবার কথা নয়, এমনকি ২০১৩ সালে রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার দেশবাসীর সেই আন্দোলন-সংগ্রামের স্মৃতিও কিছুটা গ্রে। ‘রাজাকার’ শব্দটি যে একটি জাতিসত্ত্বার জন্য চরম অপমানের, শব্দটির অভ্যন্তরে লাখ লাখ বাংলাদেশির হত্যার গল্প লুকিয়ে আছে, শব্দটির এপিঠেই যে ‘পরাজয়’ লেখা আছে সেটা বোঝাবার বা অনুধাবনের কোনো শক্তি তাদের নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরপরই ক্যারেন্ট আফিয়ার্স কিংবা এমপিথ্রি পড়ায় যারা ব্যস্ত, যাঁদের মুক্তিযুদ্ধের জ্ঞান ২৬ মার্চ, ১৪ ডিসেম্বর, ১৬ ডিসেম্বর দিবসগুলো কিংবা সেক্টর কমান্ডের নাম জানার মধ্যে সীমাবদ্ধ, সেই প্রজন্মের কাছে ‘রাজাকার’ শব্দটি হয়ে উঠেছে ‘স্বেচ্ছাসেবী’, রাজাকার শব্দটি হয়ে উঠেছে ‘দলিত-শোষণ-বৈষম্যের’ প্রতিবাদের ভাষা। 

কিন্তু কেন এমন হয়ে উঠছে, এই ‘রাজাকার’ শব্দটি তারা আজকের কোটা আন্দোলনে স্লোগানও ধারণ করেননি কিংবা বললেনি, এটি তো কয়েকয়ছর ধরে বলছে। কারা রাজাকারের চেতনা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মগজে ঢুকাচ্ছে? রাজাকার শব্দটিকে ‘জেনারালাইজড’ করার কৌশল নতুন নয়, মুক্তিযুদ্ধের সেই পরাজিত শক্তি যুগের পর যুগ ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বা আসছে। এটা তাঁদেরই সফলতা। আর ব্যর্থতা আপনাদের কাঁধে যে আপনারা পনের বছরেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সর্বজনীন করতে পারেননি কিংবা ইতিহাস বাচ্চাগুলোর মগজে দিতে পারেননি। এই ব্যর্থতা আপনাদের যারা সুবিধাবাধী মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের লালন-পালন করে বির্তকের জন্ম দিয়েছেন যে সুযোগটি ‘আসল’ রাজাকারের বাচ্চা-কাচ্চারা কাজে লাগাতে পারছে। এই দায় সরকার এড়াতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ বা পয়ত্রিশ বছর পর জন্ম নেয়া এক প্রজন্মের কাছে যুদ্ধের যে পটভূমি অন্তরে স্থান পাবে তার ভেদনক্ষমতা নিশ্চয় একাত্তর পূর্ব কিংবা পরবর্তীদের চেতনা এক হবে না? বাস্তবতা আমাকে-আপনাকে মানতে হবে, আজকে যারা নিজেদের স্যাডো ‘রাজাকার’ বলছেন তাদের চিন্তার দানবতা কিংবা মানবিকতা মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিদের চেয়ে সত্যিই কি ভিন্নতা রয়েছে কিংবা আদৌ থাকবে? এই সংখ্যা কি কমবে নাকি বাড়বে? বৈষম্যের শিকার হয়ে যারা নিজেদের ‘রাজাকার’ বলতে পারে, তাদের মস্তিষ্ককে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়’ পারফিউসড করা বড্ড কঠিন, বড্ড সময় সাপেক্ষ। রাগ-অভিমান করে তাদের ভুল পথে ছেড়ে দিলে ক্ষতির আঁচটা যে নিজের শরীরেই লাগবে। আর কোনো ঢালাও মন্তব্য নয়, আপনি-আমি চাইলেও তাদের এই সমাজ বা রাষ্ট্র থেকে ইলিমিনেট করতে পারবেন না কিংবা অস্বীকারও নয়। এই বাচ্চাগুলো এক সময় দেশ চালাবে, তাদের ভুল পথে না ঠেলে দিয়ে দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে ভাবুন, তাদের ক্লাসে ফেরান, দেশপ্রেমের অনুষঙ্গ কিংবা উদাহরণ তৈরি করুন, যা থেকে তারা শিখবে কীভাবে বৈষম্যকে গিলে ফেলে দেশটাকে ভালোবাসা যায়। ১৫-০৭-২৪। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়