শিরোনাম
◈ গরুর চামড়া ৮০০, ছাগলের ১০ টাকা ◈ সিলেটে ঈদ আনন্দ ভেসে গেল বন্যার জলে ◈ অর্থনৈতিক সংকটে সিংহভাগ মানুষ কোরবানি দিতে পারেনি: জিএম কাদের ◈ সুপার এইটে স্থান, ক্রিকেট দলকে রাষ্ট্রপতির অভিনন্দন ◈ ফিলিস্তিনসহ সুবিধা বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির ◈ শাসকগোষ্ঠী উল্লাসের ঈদ করছে আর বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় চলছে শোকের মাতম: রিজভী  ◈ কারাগারে গরু ও খাসি কোরবানি, বন্দিদের বিশেষ বিনোদনের ব্যবস্থা ◈ দেশবাসীকে ভয়ভীতি কোরবানি দেওয়ার আহ্বান মির্জা আব্বাসের ◈ এবারের ঈদ দেশের মানুষের কাছে একটা কষ্টের দিন: মির্জা ফখরুল ◈ ঈদুল আজহা উপলক্ষে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত : ২৭ মে, ২০২৪, ০৩:৪৬ রাত
আপডেট : ২৭ মে, ২০২৪, ০৩:৪৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

৪ জুন নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল : ভারতের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কোন দল আসছে?

কাজী এম. মুর্শেদ

কাজী এম. মুর্শেদ: ভারতের ভোটের ফলাফল আসবে ৪ জুন। ভোটের শুরু আর শেষ একরকম নেই। বিজেপির যে বাতাস ছিলো, কিছু বড় ভুলে আগের মতো সহজ হবে না, তবে যেহেতু ভোট লম্বা সময় ধরে, আগের দফার ভোট আবার করার সুযোগ নেই। ভারতের লোকসভার ম্যাজিক নম্বর হলো ২৭২। এই সংখ্যা যে দল তাদের সহযোগিসহ পাবে তারা সরকার গঠন করবে। মোদি ভোটের শুরুতে বলেছিলেন, এবার ৪০০ আসন জোট ছাড়াই পাবে। কিন্তু অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ভুয়া মামলায় আটকে বেশকিছু আসন হারানোর মতো ভুল মোদি করে বসেছেন। এখন মুক্ত হলেও কেজরিওয়ালকে আবার জেলে যেতে হবে। প্রথমে জানায় ১০০ কোটি রুপি চুরি করেছে, এরপর ১১০০ কোটি, সবশেষ ৩০০০ কোটি রুপি। সমস্যা হলো মোদি এই চুরির কিছুই প্রমাণ করতে পারেনি। ৫০/৬০ জায়গায় রেইড দিয়েও না। পরশু বললেন, কেজরিওয়াল অনুভবি চোর, মানে এক্সপার্ট চোর বলে ধরা যাচ্ছে না। 

তো ম্যাজিক নম্বর ২৭২ আসন। জোটসহ হয়তো পেয়ে যাবেন, তবে বড় মার্জিনে পাওয়া কঠিন। এখন হিসাব এমনই, নাও পাবার আশঙ্কা আছে। বিরোধী জোট যদি স্বতন্ত্র ও ছোট দল সাথে নেয়, তাঁদেরও সরকার গঠনের সম্ভাবনা আছে। ২৭২ তাঁরাও পেতে পারে। মোদির বয়স ৭৩ চলছে, সেপ্টেম্বরে ৭৪ হবে। ২০২৫ এর সেপ্টেম্বরে ৭৫ হলে তার পদ ছাড়তে হবে, বিজেপির সংবিধান এটাই। তাহলে তার উত্তরসূরী কে হবেন? এটা নিয়ে জল্পনা চলছে। অবশ্য যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে তখন যে বিজেপি সংবিধান বদলাবে না তার কারণ নেই। নাম দুজনের আসছে, অমিত শাহ ৫৯ বছর, মোটামুটি বছর ১৫ চালাতে পারবে। তবে মোদির খুবই ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে অনেকে তেমন পছন্দ করে না। অমিত শাহ নির্বাচনের রাজনীতি বোঝে, কিন্তু দেশ চালাবার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সেটা মোদিকে নিয়েও আছে। এতোদিন যেভাবে বিকাশ আর স্বচ্ছ সাথে হিন্দুত্ববাদিতা প্রমোট করে আম্বানি আদানির উপর চালিয়ে এসেছে, সেখানে গরিবদের একাংশের বিনামূল্যে শস্য ছাড়া তেমন কিছু করেনি। ১৫০ কোটির দেশে ৮০ কোটি দরিদ্রসীমার নীচে। অন্যদিকে উত্তর প্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের বয়স ৫১। খুবই কট্টর হিন্দুত্ববাদী হলেও রাজ্য চালাতে তার দক্ষতা প্রশংসনীয় হয়েছে। যোগীর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যেই দুর্নীতি ও মাফিয়াগিরি ছিলো, সেটা নিয়ন্ত্রণ করেছে, অনেকটা ফিলিপাইনের দুতার্তে মডেলে। তার ধর্মীয় কট্টরবাদিতা এতোটা না থাকলে হয়তো সামনেই থাকবেন। রুদ্র করনের মতো বেদিক এস্ট্রোলজারের মতে যোগী ২০২৭ সালে প্রধানমন্ত্রী হবেন। 

ভারতে একটা কথা প্রচলিত, গোদি মিডিয়া। বিভিন্ন মিডিয়া যেভাবে কথা বলে, বাংলাদেশের সম্পাদক সাংবাদিকরাও লজ্জা পাবে। এই গোদি মিডিয়া শব্দের শুরু গোদ বা কোল থেকে, আর মোদির সাথে মিলিয়ে গোদি মিডিয়া। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, উনি অন্য সকল ভারতীয়দের মতো বায়োলজিকালি জন্ম নেননি, পরমআত্মা বা ভগবান উনাকে সৃষ্টি করে ভারতের উন্নয়নের জন্য পাঠিয়েছেন। নিজেকে ব্রক্ষ্মার অবতার বলতেও ছাড়েননি। আবার নিজেকে চা-ওয়ালা বলে নিজের গরিব বাল্যকাল বেচতেও ছাড়েননি, এটাও বলেছেন দেশের জন্য তিনি গৌতম বুদ্ধের মতো সংসার ছেড়ে কাজ করেছেন। ইউটিউবাররা আজকাল গোদি মিডিয়া থেকে অনেক বেশি প্রভাবশালী, তারা মোদির ছোটবেলা থেকে সকল বাণী যাচাই করে দেখিয়ে দিয়েছে মোদির কথার পরতে পরতে মিথ্যাভরা। সেই চা-ওয়ালার স্কুলের টাই পরা ছবিও যেমন আছে, আরএসএসের জওয়ান হিসাবে ছবিও আছে। তার লাক্সারি দেখাতে সেই কোটের ছবিও আছে, স্ট্রাইপের বদলে তার নিজের নাম লেখা। কিন্তু গোদি মিডিয়া সব মানতে নারাজ। তারা চোখের সামনে দেখেছে সমালোচনা করার জন্য এনডিটিভি কীভাবে আদানি কিনে নেয়, এরপর দুর্নীতির মামলা দিয়ে মালিকদের জেলে পাঠায়। একটা প্রশ্ন দেখলাম একজন জিজ্ঞাস করলেন, মোদিজি সবসময় চিন্তা করি, আপনি কখনো একটু টায়ার্ড কেন হন না? উত্তর সেই জনতার জন্য কাজ করেন। 

৪ জুন হয় ভারতের অসাম্প্রদায়িক গণতন্ত্রের পূর্বের মর্যাদা ফিরে পেতে পারে, অথবা নাম বদলে ভারত হয়ে যেতে পারে। মোদির নির্বাচনে জিততে যে তিনটা বিষয় ছিলো রাম মন্দির, অখণ্ড ভারত আর বিকাশ বা উন্নয়ন সব ভেঙে পরছে। তার উত্তরাধিকারের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ  সামনে। তবে হিসাবে যা বুঝলাম পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর হয়তো আগামী বছর ভারতে যুক্ত হবে, সেটা ছয় মাস থেকে আগামী সেপ্টেম্বর। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকরকে প্রশ্ন করা হয় কাশ্মীরের এই অংশ কি জনগণ সহ না ছাড়া, তার উত্তর থেকে বুঝলাম উনি বাংলাদেশের টকশো থেকে ট্রেনিং নেন, প্রশ্ন যাই হোক, উত্তর নিজের মতো। ভারত অবশ্য বাংলাদেশের অনেক কিছুই অনুসরণ করে, এমনকি নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত মোদির মতন সাজানো, তারা যদি বলে ৪১.৮ শতাংশ ভোট পড়েছে, অবাক হবো না। ভোটের ফলাফল শুরুতে যা মনে করা হচ্ছিলো, এখন সেই অবস্থা নেই। আজকাল বিজেপির লোকজন কথা বলার সময় খুব সহজে উত্তেজিত হয়ে ওঠে।

লেখক: অর্থনীতি বিশ্লেষক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়