শিরোনাম
◈ গরুর চামড়া ৮০০, ছাগলের ১০ টাকা ◈ সিলেটে ঈদ আনন্দ ভেসে গেল বন্যার জলে ◈ অর্থনৈতিক সংকটে সিংহভাগ মানুষ কোরবানি দিতে পারেনি: জিএম কাদের ◈ সুপার এইটে স্থান, ক্রিকেট দলকে রাষ্ট্রপতির অভিনন্দন ◈ ফিলিস্তিনসহ সুবিধা বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির ◈ শাসকগোষ্ঠী উল্লাসের ঈদ করছে আর বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় চলছে শোকের মাতম: রিজভী  ◈ কারাগারে গরু ও খাসি কোরবানি, বন্দিদের বিশেষ বিনোদনের ব্যবস্থা ◈ ঈদুল আজহা উপলক্ষে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রীর ◈ ভারতে ফ্রিজে গরুর মাংস পাওয়ায় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ১১টি বাড়ি ◈ দলীয় নেতাদের সঙ্গে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় 

প্রকাশিত : ২৭ মে, ২০২৪, ০৩:১২ রাত
আপডেট : ২৭ মে, ২০২৪, ০৩:১২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একটা সুন্দর জীবনের জন্য কতো টাকা দরকার?

ড. কামরুল হাসান মামুন

ড. কামরুল হাসান মামুন: এমপি আনারের নৃশংস হত্যা ও হত্যা শেষে লাশকে টুকরা টুকরা করে ফেলার সংবাদের সঙ্গে এমপি আনারকে নিয়ে ডেইলি স্টারের একটা রিপোর্ট পড়ে আমার হাত পা শীতল হয়ে গেছে। এই রিপোর্ট থেকে এটা স্পষ্ট যে এই এমপি তার পদ ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করে স্বর্ণ চোরাচালানের প্রটেক্টর কাজ করে অর্থ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। যা বোঝা যাচ্ছে একপর্যায়ে একাই ১০০ কোটি টাকার মাল নিজের করে নিয়েছেন এবং এটিই হয়েছিল কাল। যার সাথে যুগলবন্দী হয়ে চোরাচালান কারবারে সহযোগিতা করতেন তাকে ক্ষেপিয়ে তুলেছেন। টাকার জন্য মানুষ এতটা নৃশংস হতে পারে? একটা সুন্দর জীবনের জন্য কত টাকা দরকার? তাহলে এমপি আনারের নামে যে বিএনপি আমলে খুনসহ অন্যান্য আরো গুরুতর মামলা হয়েছিল সেগুলো একদম হওয়ার উপরে ছিল না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তাকে একদম সাদা দিলের মানুষের সার্টিফিকেট দিয়ে তিন তিনবার এমপি বানালেন। এরকম কতজন আনার বাংলাদেশে আছে?

এর আগে পুলিশের সাবেক পুলিশ প্রধানের বিপুল জায়গা জমি অর্থবিত্তের খবর পত্রিকায় আসে। আবার সেই সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের খবর আসে। দেখলাম পুলিশের চাকরিতে ‘বাজিমাত, সম্পদের কুমির ডিআইজি শিমুল সংবাদে প্রকাশ  শিমুলদের ছিল সামান্য একটি টিনের ঘর। পুলিশে চাকরি পাওয়ার পর ফুলে ফেঁপে ওঠে শিমুলের সম্পত্তি। ১৯ তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিলেও প্রিলিমিনারি পাস করতে পারেননি। এরপর ২০ তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদে চাকরি পান পুলিশে। সেই শিমুল এখন শত শত কোটি টাকার মালিক। সেকি একা?

এরকম আরো কত শিমুল, কত আনার আছে যাদের নাম হয়তো জানি না। এর আগে জেনেছি এস আলম কীভাবে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। জেনেছি সামিট গ্রুপের মালিক আজিজ খান কীভাবে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। বেক্সিমকোর সালমান রহমান আর আজিজ খানা কত লক্ষ কোটি টাকার ডলার নিয়ে গিয়ে বিদেশে বিনিয়োগের নামে নিয়ে গিয়ে দেশকে আজ দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করিয়েছে। শুধুই কি এরা? সামান্য এক ছাত্র নেতা সেও গাড়ি বাড়ির মালিক হয়ে যাওয়ার সংবাদ গত পরশু পড়লাম। সংবাদে জানলাম সেক্রেটারি হওয়ার পর বদলে গেল সৈকতের লাইফ স্টাইল। হলের ৬টি গণরুমে শতাধিক শিক্ষার্থী তার অনুসারীদের দখলে বহিরাগত নিয়ে থাকেন হলের তিনটি রুমে চালকসহ রয়েছে ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার। আরও ভয়াবহ সংবাদ হলো সিপিডির সংলাপে অভিমত অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের ব্যাংক খাতের অবস্থা দিন দিন নাজুক হচ্ছে। এই নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ ব্যাংকের মালিক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। যেন বাংলাদেশ ব্যাংক সমবায় সমিতি। কী ভয়াবহ সংবাদ। এমন একজনকে গভর্নর বানানো হয়েছে যে দক্ষিণ এশিয়ার গভর্নরদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ স্কোর করেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা এই গভর্নরকে ‘ডি’ দিয়েছে। মানে প্রায় ফেল। তারপরেও তাকে না সরানো মানে এইসবই ইচ্ছেকৃত। 

এদিকে শিক্ষা ও গবেষণার মান নিম্নগামী। নতুন শিক্ষাক্রম চালু করে দেশের মূল ধারার শিক্ষাকে ১৪টা বাজানোর সমস্ত আয়োজন শেষ। যারা এটি করেছেন তারা জানে যে মলাট পাল্টালেই পণ্যের মান বেড়ে যায় না। কারিকুলাম বদলানোর আগে এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ বাদ রেখে মলাট বদলানোর পরিকল্পনা কার মাথা দিয়ে আসলো? ভালো শিক্ষক নেই। কারণ ভালো বেতন ও সম্মান নেই। ভালো অবকাঠামো নেই। প্রতিষ্ঠান ভালো চালানোর ভালো প্রশাসন নেই। শিক্ষা ও গবেষণায় যথেষ্ট বরাদ্দ নেই। অথচ এইগুলো নিয়ে কোনো কথা নেই। এতদিন ধরে নতুন শিক্ষাক্রম থেকে দেশকে বাঁচানোর কত চেষ্টা করছি। এটাও পারছি না। মনে হচ্ছে এই সরকার খারাপ কাজ করতে বদ্ধ পরিকর। কী করলে অন্তত একটা ভালো কাজ করে একটু ভালো থাকা যায় বলুনতো? এসব ভাবলে প্রচণ্ড অস্থির লাগে। বিদেশ ছেড়ে দেশে ফিরে এসেছিলাম ভেবেছিলাম দেশের জন্য কিছু করবো এবং অন্যরা করবে তা দেখব। আপন দেশটাকে ভালো করার প্রত্যয় নিয়ে অনেক চেষ্টা করছি। কিন্তু দেশ ভালো করতো একা একজনের কাজ না। এটা একটা কালেক্টিভ কাজ। আজকে এতদিন পর মনে হচ্ছে আমি এতদিন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। লেখক: অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়