শিরোনাম
◈ অর্থনৈতিক সংকটে সিংহভাগ মানুষ কোরবানি দিতে পারেনি: জিএম কাদের ◈ সুপার এইটে স্থান, ক্রিকেট দলকে রাষ্ট্রপতির অভিনন্দন ◈ ফিলিস্তিনসহ সুবিধা বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির ◈ শাসকগোষ্ঠী উল্লাসের ঈদ করছে আর বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় চলছে শোকের মাতম: রিজভী  ◈ কারাগারে গরু ও খাসি কোরবানি, বন্দিদের বিশেষ বিনোদনের ব্যবস্থা ◈ দেশবাসীকে ভয়ভীতি কোরবানি দেওয়ার আহ্বান মির্জা আব্বাসের ◈ এবারের ঈদ দেশের মানুষের কাছে একটা কষ্টের দিন: মির্জা ফখরুল ◈ ঈদুল আজহা উপলক্ষে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রীর ◈ ভারতে ফ্রিজে গরুর মাংস পাওয়ায় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ১১টি বাড়ি ◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৫০ বছরের পেট্রোডলার চুক্তি বাতিল করল সৌদি আরব

প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০২৪, ০১:৫২ রাত
আপডেট : ২৬ মে, ২০২৪, ০১:৫২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এই বন্দিদশা থেকে তাদের মুক্তি দাও!

স্বকৃত নোমান

স্বকৃত নোমান: একটা বার্তা পেলাম। এক তরুণের বার্তা। বার্তার শুরুতেই আমাকে ‘ভো-দা-ই’ সম্বোধন করেছে। তারপর করেছে মুণ্ডপাত। ছেলেটি সম্ভবত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমি স্মরণ করার চেষ্টা করলাম কখনো তার কোনো ক্ষতি করেছি কিনা। না, মনে পড়ল না। সে একবার রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে একটা দীর্ঘ লেখা লিখেছিল। রবীন্দ্রনাথ কেন খারাপ, নানা কুযুক্তি দিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করেছিল। লেখাটি পড়তে দিয়েছিল আমাকে। চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছিল আমি যেন তার যুক্তি খণ্ডাই। তার মতে, আমার কাছে খণ্ডানোর মতো কোনো যুক্তি নাই। আমি কোনো মন্তব্য করিনি। মূলত এটাই ছিল আমার দণ্ডনীয় অপরাধ। সে-কারণে পারলে সে আমার প্রাণ হরে নেয়।

আচ্ছা, রবীন্দ্রনাথ ভালো মানুষ, তা প্রমাণের চ্যালেঞ্জ আমি কেন গ্রহণ করব? আমি তো রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নই। তাঁর সাহিত্যকর্মের প্রকাশকও নই। বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারও নই। রবীন্দ্রনাথ তাঁর মান-সম্মান রক্ষার এজেন্ট হিসেবেও আমাকে নিয়োগও দিয়ে যাননি। তাঁর সাহিত্যকর্ম ভালো লাগে, গান ভালো লাগে―সেসব নিয়ে মজে থাকি। রবীন্দ্রনাথ ওকাম্পোর সাথে প্রেম করেছিলেন কিনা, ওকাম্পোর বুকে হাত দিয়েছিলেন কিনা, কাদম্বরী দেবীর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক ছিল কিনা, তাঁর জামাতা তাকে অপমান-অপদস্ত করত কিনা, তিনি বিড়ি খেতেন কিনা, মদ খেতেন কিনা, জুয়া খেলতেন কিনা―এসব জেনে আমার কী লাভ? তিনি অমুক সম্প্রদায়কে নিয়ে লিখেছেন কিনা, তমুক সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর ঘৃণা বা ভীতি ছিল কিনা―এসব জেনেই-বা আমার কী লাভ?

তা ছাড়া সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করা একটা বাচ্চা ছেলে, যে এখনো রবীন্দ্রসমুদ্রে অবগাহন করতে শেখেনি, সাহিত্য কী তা এখনো বুঝতে শেখেনি―তার কথার উত্তর কেন দেব? সে অবুঝ। সে তো আলন্সো কিহানা বা দন কিহোতের মতো উন্মাদ, যে হাওয়া-কলের বিরুদ্ধে লড়তে যায়। কয়েকটা ভোঁতা তরবারি তার হাতে উঠেছে। সেই তরবারি সে যত্রতত্র চালিয়ে দিচ্ছে। একবার ভাবছে না তার তরবারিতেই সে আহত হতে পারে। বয়সে সে আমার অনেক ছোট। আমাকে 'তুমি' সম্বোধন করেছে। 'তুই' বলেনি এটা ভাগ্য। মানুষের মধ্যে দ্বৈত সত্তা বিরাজমান। ভালো ও মন্দ। তরুণের বার্তাটি পেয়ে আমার মন্দ সত্তাটি জেগে উঠেছিল। চাইলে আমি তার ঠিকুজি-কুলজি বের করে নিতে পারি চব্বিশ ঘণ্টায়। আমাকে হ্যারেজের অপরাধে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারি। কিন্তু কেন নেব? কদিন ধরে দেখছি খোদ গৌতম বুদ্ধকে বিস্তর মানুষ ধুয়ে দিচ্ছে। কে যেন লিখেছে গৌতম বুদ্ধ মহামূর্খ। সেখানে আমি কোথাকার কোন ধইঞ্চা? ধইঞ্চা এক প্রজাতির গুল্ম, যা লাকড়ি ছাড়া আর কোনো কাজে লাগে না।

কেবল এই কামনা, হে সর্বভূতের অধিশ্বর, যদি তুমি থেকে থাকো, তবে ওদের চোখ খুলে দাও। আলোকেরই ঝরনাধারায় ওদের ধুইয়ে দাও। ওরা গর্তজীবী। গর্তেই ঘুরপাক খেয়ে কেটে যাচ্ছে তাদের জীবন। এই বন্দিদশা থেকে তাদের মুক্তি দাও। কিন্তু না, এই কামনা করেও কোনো লাভ নেই। কেননা আলো থাকলে অন্ধকারও থাকবে। দিন থাকলে রাতও থাকবে। পূর্ণিমা থাকলে অমাবস্যাও থাকবে। সমুদ্র থাকলে কুয়াও থাকতে হয়। কুয়োতে ব্যাঙ থাকতে হয়, গর্তে পোকামাকড় থাকতে হয়। ওটাই তাদের বসবাসের জায়গা। পৃথিবীর কোনো জায়গা ফাঁকা পড়ে নেই। সর্বত্রই জীব কিংবা জড়ের উপস্থিতি আছে। এটাই পৃথিবীর নিয়ম। আমার কিংবা তোমার কামনা দিয়ে এই নিয়ম বদলাবে না। শত জ্যোৎস্নার মাধুরী। ২৪.০৫.২০২৪। ফেসবুক থেকে 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়