কামাল আহমেদ, ফেসবুক: জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেটি নেওয়া হয়েছে সেকশন ৭০৩১ (সি) এর আওতায়। কী আছে এই বিধিতে? ফরেন রিলেশন্স অ্য্ন্ডা রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন্স অ্যাক্টের এই বিধির উপ-শিরোনাম হচ্ছে: অ্যান্টি ক্লিপ্টোক্র্যাসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস। এতে বলা হয়েছে: বিদেশি সরকারের কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনসম্পর্কিত দুর্নীতিসহ উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে, কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকলে তারা যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশের অযোগ্য হবে।
এতে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, সাধারণভাবে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেই যে এ আইনটি প্রয়োগ করা হয়, তা নয়। বরং, দুর্নীতির সঙ্গে ক্ষমতার একটা ঘনিষ্ঠ যোগসূত্রের ওপর জোর দিতেই ’ক্লিপ্টোক্র্যাসি’ বিশেষণটি এখানে ব্যবহৃত হয়েছে।
জেনারেল আজিজ সম্পর্কিত বিবৃতিতে বাংলাদেশ প্রশ্নে তিনটি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়নের প্রতিফলন রয়েছে। এগুলো হচ্ছে, তাদের বিবেচনায় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের কার্যকরিতা ক্ষুণ্ন হয়েছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার ঘটছে এবং অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা বা আইনের শাসন অকার্যকর হয়ে পড়ছে। আর এসবই ঘটছে এমন ব্যক্তির মাধ্যমে যিনি বা যারা ক্ষমতাধর।
এর আগে র্যাব ও সোয়াতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার রাজনৈতিক প্রভাব ক্ষমতাসীন দল ও সরকার অনেকটাই সামলে নিতে পেরেছে। ওই দুই বাহিনীর সদস্যরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা সরকারের জন্য বড় কোনো সমস্যা তৈরি করেনি। কিন্তু সমস্যা হলো, নিষেধাজ্ঞা একবার আরোপ হলে তা থেকে যে সহজে মুক্তি মেলে না, তার প্রমাণ ইতিমধ্যে একাধিকবার মিলেছে। জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের পর দেড় যুগ ধরে নানা তদবিরেও কাজ হয়নি।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার প্রয়োজনে র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বেশিদিন থাকবে না বলে যারা আশা করেছিলেন, তাদের জন্য কোনো সুসংবাদ আসেনি। সোয়াতের বিরুদ্ধে লেহি অ্যাক্টের নিষেধাজ্ঞাও বহাল আছে। এভাবে নিষেধাজ্ঞার তালিকা দীর্ঘ হতে থাকলে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে ক্ষতি আদৌ কি আর সহনীয় পর্য়ায়ে থাকবে?
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :