মঈন চৌধুরী: আবুল মুনশি দিল্লিতে গেলো পড়াশোনা করতে। তার রুমমেট সঞ্জীব সুদ, দিল্লির ছেলে। আবুলের একমাত্র অসুবিধে হলো, সে হিন্দি ভাষা জানে না। বাংলার সঙ্গে এঙা উঙা লাগিয়ে কোনমতে চালিয়ে যাচ্ছিল সে, আর দুঃখ করতো কেন সে নিয়মিত হিন্দি সিরিয়াল দেখেনি। একদিন আবুল রুমে বসে আছে। হঠাৎ একটা বোলতা এসে ভোঁ ভোঁ করে চার পাঁচ চক্কর দিয়ে তার নাকে হুল ফুটিয়ে উড়ে চলে গেল। ব্যথায় আবুলের নাক ফুলে গোল আলুর মতো হলো। এমন সময় রুমে সঞ্জীব অবাক হয়ে আবুলকে জিজ্ঞেস করলো, ‘ক্যায়া হুয়া আবুল?’ আবুল শান্ত ভাবে উত্তর দিলো, ‘বোলতানে কামড়ায়া।’
সঞ্জীব কিছুই বুঝতে না পেরে আবার প্রশ্ন করলো, ‘বোলতা ক্যায়া হোতা হায়?’ এবার আবুল অসহায় উচ্চারণ, ‘হাম তো বোলতাকো বোলতা বোলতা, তুম বোলতাকো কেয়া বোলতা?’ এক বাক্যে পাঁচবার ‘বোলতা’ শুনে সঞ্জীব ভ্যাবাচেকা খেয়ে বললো, ‘হামলোগ বাত বোলতা ইয়ার। আবুল এবার একটু রেগেই উত্তর দিলো, ‘আমরা বোলতাকো বোলতাই বোলতা, বুঝতা হায়?’ সঞ্জীব আর কথা না বাড়িয়ে হাসতে হাসতে বাথরুমে চলে গেলো।
আমার এই গল্প বলার উদ্দেশ্য হলো, আমাদের অনেকেই আমাদের ভাষা বাংলাতেই অনেক আবোল তাবোল বলি। গত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘উই আর লুকিং ফর শত্রুজ’, আরেকজন বলেছিলেন, ‘আল্লার মাল আল্লায় নিছে’। এবারের সরকারের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বিল্ডিং নিয়ে নাড়াচাড়া আর ঝাকি দিলে বিল্ডিং ধসে পড়তে পারে’, আরেকজন বললেন, ‘ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাবার আগে তালা মেরে যাবেন, তাহলে চুরি হবে না?’ এখন বলে বাজেটের পর দশ বছরে দাম বাড়েনি, খেলা হবে, লোকজন বেহেস্তে আছে, বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া দেশে শান্তি আছে, এর চেয়ে ভাল আর নিরপেক্ষ ইলেকশন আর কি ভাবে হয়!, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি তাই বলি, ভবিষ্যতে যদি এমন কোন অর্থহীন বাক্য শোনেন তবে সাথে সাথে 'হাম বোলতাকো বোলতা বোলতা, তুম বোলতাকো কেয়া বোলতা' বাক্যটি স্বরণে এনে বাথরুমে চলে যাবেন। ২২-৫-২৪। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :