প্রবীর বিকাশ সরকার: মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক। কোথায় নেই রবীন্দ্রনাথ। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বহু জায়গায় তার নাম ও স্মারক ছড়িয়ে আছে। বাঙালি হই আর বাংলাদেশিই হই, বাঙাল হই আর ঘটি হই, ইস্টবেঙ্গল হই আর মোহনবাগান হই। এখনো বহির্বিশ্বে তার নামেই আমরা পরিচিত। আর দ্বিতীয় কারো পরিচয়ে বিদেশিরা চিনবে না বাংলা ও বাঙালিকে। আমেরিকা, ইউারোপ, অস্ট্রেলিয়া বা আফ্রিকা মহাদেশের কথা বাদই দিলাম, এশিয়ার যেকোনো রাষ্ট্রেই বাঙালি পরিচয়ের স্বীকৃতি মিলে তার ছবি ও নাম বললে পরে। আমি নিজেই তার প্রমাণ।
জাপানে এশিয়ার অনেক দেশের অভিবাসীদের সঙ্গে কাজ করার সুবাদে টেগোরের ছবি দেখিয়ে যখন বলেছি, এই মানুষটি বাঙালি জাতির কবি এবং এশিয়া মহাদেশের সর্বপ্রথম নোবেলজয়ী বিস্ময়ে তারা চোখ কপালে তোলেন। এলা বোঝো আমি কোন জাতির লোক। বুঝেশুনে কথা বলবে! শুধু তাই নয়, এই মানুষটি নানাবিধ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখো বিশ্বের প্রচলিত যেকোনো ভাষায় তার নাম ও কর্মকাণ্ডের কথা জানতে পারবে। এই মানুষটি একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ১৯২১ সালে যার শতবছর অতিক্রান্ত হয়ে আজ ইউনেসকোর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিশ্বঐতিহ্য। বিশ্বের বেশকিছু দেশে তার স্মারক ভাস্কর্য বিদ্যমান। স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে। বিদেশি অনেক ভাষায় তার কবিতা, প্রবন্ধ, নাটক, উপন্যাস অনূদিত হয়েছে। এমন উদাহরণ এই বিশ্বে একেবারেই কি বিরল নয়?
এক এশিয়ার দেশ জাপানেই রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কাজ করছি ৩০ বছর ধরে আজও তল খুঁজে পাচ্ছি না। কাজেই কোনো ধুয়া তুলেই তাকে মুছে ফেলতে পারবে না। কোনো বিদ্বেষ, কুৎসা, বিরূপ সমালোচনা করে তাকে এক চুল পরিমাণ কলুষিত করার ক্ষমতাধর জন্মগ্রহণ করেনি আজ পর্যন্ত। যার অপচেষ্টা করছে তারা এককথায় অসুস্থ, মনোবৈকল্যে পর্যবশিত, ব্যক্তিজীবনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সুন্দরকে সুন্দর বলা প্রকৃত মানুষের ধর্ম। সংবাদপত্রে ঢাকায় টেগোর সোসাইটি গঠিত হওয়ার সংবাদ পড়ে আনন্দিত, উদ্বেলিত এবং অনুপ্রাণিত হয়েছি। আন্তর্জাতিকতার যুগে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে টেগোর সোসাইটি নামকরণও যথার্থ হয়েছে। মাঙ্গলিক অভিনন্দন জানাই। প্রতীক্ষায় রইলাম কর্মকাণ্ড দেখার জন্য। নিশ্চয়ই আশাহত হতে হবে না। জাপান প্রবাসী লেখক ও গবেষক
আপনার মতামত লিখুন :