শিরোনাম
◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি ◈ গণপ্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন: ভোলায় নাহিদ ইসলাম  ◈ গৌরনদীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বদলি আদেশ ঘিরে অবরোধ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩

প্রকাশিত : ১৬ মে, ২০২৪, ০২:৪০ রাত
আপডেট : ১৬ মে, ২০২৪, ০২:৪০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আপনি কেন আমেরিকার নাগরিকত্ব নেননি, এমন প্রশ্নে আমেরিকার সব পত্রিকা চার্লি চ্যাপলিনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো!

সংগৃহীত : আপনি কেন আমেরিকার নাগরিকত্ব নেননি। এই প্রশ্নে আমেরিকার সমস্ত পত্রপত্রিকা চার্লি চ্যাপলিনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। চার্লির দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। আমেরিকার পত্রিকাগুলো চার্লির কালজয়ী চলচ্চিত্র মসিয়ে ভের্দু যাতে কেউ না দেখে তার জন্য প্রচার চালাতে লাগলো। এসব বাধা অতিক্রম করেই চার্লির অন্যান্য সৃষ্টির মতন এই চলচ্চিত্রটি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে লাগলো। যেসব প্রেক্ষাগৃহে মসিয়ে ভের্দু চলছে তাদের ভয় দেখিয়ে এই চলচ্চিত্রের প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া হলো। প্রশ্ন একটাই চার্লি আমেরিকার নাগরিকত্ব নেননি, উনি দেশদ্রোহী, দেশপ্রেমিক নন। চার্লির উত্তর সংক্ষিপ্ত নাগরিকত্ব একটা দেশে থাকার আবশ্যক শর্ত নয়। আর চার্লি সরবে দেশপ্রেমের নিন্দা করেন। চার্লি দেশপ্রেমকে মনে করেন মানুষের সাথে মানুষের বিভেদ বাড়ায়,অপর মানুষের প্রতি ঘৃণার অন্যতম কারণ এই দেশপ্রেম। মসিয়ে ভের্দুর আগে গ্রেট ডিক্টেটর চলচ্চিত্রে হিটলারের দেশপ্রেমকে অসামান্য ভাবে নগ্ন করে এর অন্তস্থ ঘৃণাকে উন্মোচিত করেছেন। উন্মোচনের সাথে সাথে এই ঘৃণা,অত্যাচার, রক্তপাতকে অস্বীকার করে ঘৃণা হীন, হিংসা হীন এক নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখিয়েছেন যেখানে দেশপ্রেমের পরীক্ষা দিতে হয়না। মডার্ন টাইমস চলচ্চিত্র নিয়ে আমেরিকার কারো কারো ভুরু কুঁচকে ছিল।

চার্লি কি কমিউনিস্ট? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। গ্রেট ডিক্টেটর চলচ্চিত্রে এই প্রশ্ন আরো গভীর হলো। মসিয়ে ভের্দুতে তুলে ধরলেন সেই খুনি মসিয়ে ভের্দুর অসামান্য উক্তি, একজন দুইজনকে হত্যা করলে তাঁকে রাষ্ট্র,সমাজ খুনি হিসাবে ফাঁসি দেবে, কিন্তু কোনো যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করলে তাঁকে রাষ্ট্র, সমাজ বীর হিসাবে সম্মান করবে। খুনের সংখ্যা হলো নির্নায়ক বিচার করার number is the matter? এই প্রশ্নটাই আরও বেশি করে চার্লিকে আমেরিকা বিরোধী কম্যুনিস্ট হিসাবে চিহ্নিত করতে লাগলো যখন চার্লি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি আক্রমণে আক্রান্ত সোভিয়েতের জীবন পণ লড়াইয়ের সমর্থনে দাঁড়ালেন, মিত্র পক্ষের দেশগুলোকে অনুরোধ করলেন যুদ্ধের দ্বিতীয় ফ্রন্ট খুলতে। শুধু অনুরোধ নয় সভাগুলিতে আমন্ত্রিত বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখলেন দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলার দাবী নিয়ে। মিত্র পক্ষের নীরবতার বিরুদ্ধে চার্লির সারা আমেরিকায় ঘুরে ঘুরে আবেদন করতে লাগলেন জনমতের জন্য। শ্রমিকদের সভাতেও চার্লি উপস্থিত। অনেক জায়গায় বক্তব্য রাখলেন শ্রোতাদের কমরেড সম্মোধনে। হিটলারের উত্থান থেকেই চার্লি হিটলারকে মনে করতেন একজন ক্ষমতালিপ্সু, বর্বর জোকার। গ্রেট ডিক্টেটর চলচ্চিত্রে এই ভাবনার প্রতিফলন হয়েছে।

চার্লির আত্মজীবনীতে উল্লেখ আছে, আমেরিকার পত্রিকাগুলিতে,সরকারের প্রশাসনে তখন ব্যাপক পরিমাণে নাৎসিবাদীদের অনুপ্রবেশ ঘটে গেছে। এরাই নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছে আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে। চার্লি বারবার যখন আবেদনে বলছেন, এই মহাযুদ্ধে সোভিয়েতের পতন হয়ে যদি হিটলারের জয় হয় তবে সমস্ত মানব সভ্যতার পক্ষে সেটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। তাই এই মুহূর্তের আবশ্যিক কর্তব্য নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে সোভিয়েতের সমর্থনে দাঁড়ানো। চার্লির এই ভাষ্যকেই আমেরিকার কর্তৃপক্ষ, পত্রিকাগুলি চার্লির দেশপ্রেমকে নিয়ে, নাগরিকত্বের প্রশ্ন নিয়ে আক্রমণ শুরু করে। চার্লি নিজের বিশ্বাসে অটল। নিজেকে বিরাট দেশপ্রেমিক হিসাবে তুলে ধরার কোন চেষ্টা করলেন না। আমেরিকার নাগরিকত্ব নেওয়ার কোনও চেষ্টাই করলেন না। বুঝতে পারছিলেন আমেরিকার দেশপ্রেমের বিকারের প্রলাপ শুরু হয়ে গেছে। এই বিকারগ্রস্থ রাষ্ট্র আর সমাজে কোনো শিল্প সৃষ্টি সম্ভব নয়। আমেরিকা থেকে গোপনে সপরিবারে পাড়ি দিলেন ইংল্যান্ডে। সেখান থেকে সুইজারল্যান্ড। আমৃত্যু সুইজারল্যান্ডে থেকেছিলেন কোনো দেশের নাগরিক না হয়ে। বিশ্বের সমস্ত মানুষকে ভালবেসে গেছেন তাঁর চলচ্চিত্রে , বাস্তব জীবনে, দেশপ্রেমের বিরুদ্ধে চিরকাল সরব থেকে।Ñশঙ্কর দাশ। ফেসবুক থেকে 

 
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়