শিরোনাম
◈ গণঅভ্যুত্থান সরকারের কেউ কেউ ‘লুটপাট’ করে বেহুঁশ হওয়ার দশা: ইশরাক হোসেন ◈ যে কারণে পিআর পদ্ধতি চায় জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন ◈ ‘মেগাস্টার’ শব্দকাণ্ডে বিতর্ক: “আমি মানুষটা ছোট, অন্যকে ছোট করব কীভাবে” — জাহিদ হাসান ◈ এবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শিল্পকলার চারুকলা পরিচালক ◈ কেশবপুর পৌরসভার  সাবেক মেয়র রফিকুল গ্রেফতার ◈ বেনাপোল কাস্টমসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৬ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় ◈ পার্বত্য চট্টগ্রামের একশ স্কুলে এবছরই ই-লার্নিং চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার ◈ ডার্পা প্রযুক্তি : যেভাবে তারবিহীন বিদ্যুৎ আবিষ্কার করে অবাক করলো বিশ্বকে (ভিডিও) ◈ নির্বাচন নিয়ে আবার সন্দেহ, অনিশ্চয়তার কথা কেন আসছে? ◈ মর‌ক্কোর স‌ঙ্গে প্রী‌তি ম্যাচ খেল‌তে চায় বাংলাদেশ, ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রস্তাব

প্রকাশিত : ২৭ মার্চ, ২০২৪, ০২:২১ রাত
আপডেট : ২৭ মার্চ, ২০২৪, ০২:২১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছাত্র-অবস্থায় সারাক্ষণ পড়াশোনায় মগ্ন থাকা কি খারাপ কিংবা ক্ষতিকর কিছু?

অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল বাছিত

অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল বাছিত: সম্ভবত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের স্বার্থপরতা বাড়তে থাকে (কিছু ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে)। এখন ফেসবুক টাইম লাইনে অনেক কিছু দেখে  চুপ থাকি, দুই/চার বছর আগে হলেও ওই ইস্যু নিয়ে প্রতিবাদ করতাম, কিছু লিখতাম। বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনকারী ছেলেটিকে নিয়ে বেশ বড় রকমের আলোচনাই হলো, যিনি শুরু করেছেন বা যারা পরবর্তী সময়ে লিখেছেন তাদের অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে আমার পরিচিত। প্রত্যেকেরই মতামত জানানোর অধিকার রয়েছে যতোক্ষণ না তা অন্য কারো ক্ষতির/অপমানের কারণ হয়। একজন ছাত্র অফিসে এসে জানতে চাইলো, ছাত্র-অবস্থায় সারাক্ষণ পড়াশোনায় মগ্ন থাকা কি খারাপ কিংবা ক্ষতিকর কিছু? এসব প্রশ্নের উত্তর সরাসরি এক-কথায় দেয়া যায় না। 

প্রতিটি মানুষ আলাদা, তার পরিবার আলাদা, তার বেড়ে ওঠা আলাদা, তার বাস্তবতা আলাদা। শিক্ষক হিসেবে যতটুকু সম্ভব তাকে আমার অভিমত বুঝিয়ে বলতে চেষ্টা করলাম। আমাদের মতো সাধারণ পরিবারের ছেলে/মেয়েদের একটি বয়সে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও যারা কয়েক বছর এই নিরলস শ্রম দেয়, তারা পরবর্তী জীবনে অপেক্ষাকৃত ভালো থাকে, কিংবা তাদের ভালো থাকার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তখন চাইলেই অন্যকে সাহায্য করতে পারে, বিপদে পড়ে যাওয়া মানুষটির পাশে দাঁড়াতে পারে, কেউ কেউ পুরো পৃথিবীর মানুষের কল্যাণেও কিছু করে ফেলতে পারে, নিজের পরিবারের নিরাপত্তা দিতে পারে, নিজের জন্য সময় বের করতে পারে, সিনেমা দেখতে পারে, টেনিস, ফুটবল ক্রিকেট দেখতে পারে, গান শুনতে পারে, গল্প-উপন্যাস পড়তে পারে। 

সাধারণ পরিবারের ছেলে-মেয়েদের ছাত্র-বয়সের কোনো একটি সময়ের কয়েকটি বছর কঠোর পরিশ্রম খুব প্রয়োজন। কারো ক্ষেত্রে এই কয়েক বছর শুরু হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রস্তুতি থেকে, কারো ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজে কোনো বিষয়ে পড়াকালীন সময়ে, কারো ক্ষেত্রে মাস্টার্স কিংবা পিএইচডি ডিগ্রি চলাকালীন অবস্থায়। ‘কয়েকটি বছর কষ্ট করো, দেখবে বাকি জীবন অনেক ভালো থাকবে, আর কয়েকটি বছর কষ্ট করার মানসিকতা না থাকলে, সারাজীবন কষ্ট করবে’- ঠিক এই কথাটি বহুবার আমার থিসিস ছাত্রদের বলেছি, বারবার বলবো (আমি জানি, এদের অনেকেই আমার এই লেখা পড়ছে)। 

ভালো ছাত্র হয়ে, সবকিছু জেনে শুনে কেউ জন্মায় না, ভালো-মন্দ অভিজ্ঞতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই অর্জিত হয়। দুই-চার বছর সিনেমা না দেখলে কিংবা পৃথিবীর খবর কম রাখলে এমন মহাভারত ক্ষতি না হতে পারে, কিন্তু দুই/চার বছরের কঠোর পরিশ্রম তোমাকে পরিবর্তন করে ফেলতে পারে, সমাজের জন্য কিছু করার মতো অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে, নিজের একটি পৃথিবী তৈরি করে ফেলার মতো যোগ্য করে ফেলতে পারে। ছয় মাস, দুই বছর, চার বছর, কেউ পড়াশোনা কিংবা গবেষণায় ফোকাস থাকলে, আমি এর ক্ষতিকর দিক খুব বেশি দেখি না বরং উল্টোটাই দেখি। 

লেখক :  পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, বুয়েট এবং ফেলো, ইন্সিটিউটি অব ফিজিক্স, ইউকে 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়