মনজুর এ আজিজ: [২] দেশে গত ১৮ মাসে ১৪ দফা জেট ফুয়েলের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি। দফায় দফায় জেট ফুয়েলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিমান ভাড়াও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা। গত রোববার আবারও ৬ টাকা বাড়িয়ে জেট ফুয়েলের দাম লিটার প্রতি ১০৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
[৩] এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় বিপর্যস্ত দেশের এভিয়েশন খাত যখন আবারও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে ঠিক তখনই জেট ফুয়েলের দাম বাড়ানোয় আকাশপথে ভ্রমণ আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। ফ্লাইট পরিচালনা খরচের ৪৬ শতাংশ পর্যন্ত জ্বালানিতে ব্যয় হয়। গত ১৮ মাসে জেট ফুয়েলের দাম ১৩০ শতাংশ বেড়েছে। অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে টিকিটের দাম বাড়াতে হচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলোকে। আর এতে পকেট কাটা পড়ছে যাত্রীদেরই।
[৪] বিপিসির তথ্য মতে, গত দেড় বছরে দেশে উড়োজাহাজের জ্বালানির দাম বেড়েছে ১৪ বার। ২০২০ সালের অক্টোবরে জেট ফুয়েলের দাম ছিল ৪৬ টাকা। ডিসেম্বরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণ করা হয় ৪৮ টাকা। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দাম বাড়িয়ে করা হয় ৫৩ টাকা। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৫৫ টাকা, মার্চে ৬০ টাকা আর এপ্রিলে নির্ধারণ করা হয় ৬১ টাকা। তবে মে মাসে লিটারে ১ টাকা কমানো হয়েছিল। জুনে আবার লিটারে ৩ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৬৩ টাকা। একইভাবে জুলাইয়ে ৬৬, আগস্টে ৬৭, অক্টোবরে ৭০ এবং নভেম্বরে ৭৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
[৫] চলতি বছরের জানুয়ারিতে এসে দুই দফায় ৪ টাকা কমানো হয়েছিল দাম। কিন্তু পরের দুই মাস ফেব্রুয়ারি ও মার্চে দুই দফায় ১৪ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৮৭ টাকা। গত ৬ এপ্রিল লিটারে ১৩ টাকা বাড়িয়ে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ ১৫ মে ৬ টাকা বাড়ানোর পর জেট ফুয়েলের দাম এখন লিটার প্রতি ১০৬ টাকা। এভাবে ১৮ মাসের ব্যবধানে দেশে জেট ফুয়েলের দাম বেড়েছে ৬০ টাকা।
[৬] ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, উড়োজাহাজ চালাতে জ্বালানিতেই একটি বড় অংশ খরচ হয়। ফলে জেট ফুয়েলের দাম বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে টিকিটের দাম। দেশের অ্যাভিয়েশন খাতকে সুরক্ষিত রাখতে জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন তিনি।