ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, দেশের কোনো বড় হুজুরকে যদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়, তবে তাকে রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে মদের লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি দেশীয় মদ তৈরি করে এবং বিদেশ থেকে মদ আমদানি করে লাইসেন্সও দেওয়া হয়।
ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা বলেছেন, আমি একেবারে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। বলা হচ্ছে যে উপদেষ্টারা সেফ এক্সিট (নিরাপদ প্রস্থান) চান। সেফ এক্সিট তো আমার প্রয়োজনই নেই।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে দৈনিক নয়াদিগন্তের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
খালিদ হোসেন বলেন, ‘নতুন সরকার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে আমন্ত্রণ জানালেও যাব না। আজ আমরা যারা ২২/২৩ জন (উপদেষ্টা) আছি, এটা অর্ডিনেন্স করে দিলে নেক্সট নির্বাচিত সরকার আমরা টেকনোক্র্যাট হিসেবে মন্ত্রিত্ব নেব না। এ রকম যদি একটা অর্ডিনেন্স সরকার করতে পারে এটা বেশি ভালো হয়।
ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, বারবার রাজনৈতিক নেতারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে বলছেন দুই-চার-পাঁচজন উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ মেইনটেইন করে আগামী সরকারে থাকতে চান। আমি আপনাদের বলি আগামী সরকারে যদি আমাকে ইনভাইট করে সম্মান জানায়, আমি তাদের প্রতি যথার্থ সম্মান জানিয়ে কেবিনেটের অংশ হব না। কোন গভর্নমেন্ট ক্ষমতায় আসবে জানি না। যারাই আসুক তারা যদি আমাকে সম্মান জানিয়ে ইনভাইট করে যে আপনি টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে আসেন, আমি যাব না।
খালিদ হোসেন বলেন, আমি আমার মন্ত্রণালয় থেকে কোটি কোটি টাকা মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা, প্যাগোডা, শ্মশান, মন্দির, চার্চেস সেমিটারিসে দিয়ে থাকি, এই টাকা কোত্থেকে আসে? এটা গভর্নমেন্ট ফান্ড, গভর্নমেন্ট অ্যালোকেশন। গভর্নমেন্টের টাকা কোথায় থাকে-সোনালী ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকে। ওখান থেকে আন্ডা-বাচ্চা বের হয়, ইন্টারেস্ট যদি আসে এগুলো আমরা বিতরণ করি। তো আপনি শরিয়ত পাবেন কোথায়? এটা তো শরিয়া নয়, এটাতো ইসলামিক স্টেট নয়। এটা কমপ্লিটলি সেকুলার স্টেট, লিগেছি ফ্রম দ্য ব্রিটিশ রেজিম। একটা কাঠামো, একটা কাঠামোর ভেতরে দেশ চলে আসছে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, শরিয়ত আমরা ব্যক্তিগতভাবে পালন করি। আপনি মন্দিরে যাবেন কি না, ইট ইজ আপ টু ইউ। আমি যতদিন দায়িত্বে থাকব যাওয়াটা আমার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে আমরা ঘরে চলে যাব। তখন আমি মন্দিরে যাব না, তখন এটা আমার ডিউটি নয়।
‘আমি চট্টগ্রাম থেকে এই মাত্র আসলাম, কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে গেছি। এই যে পারস্পরিক সম্প্রীতি সৌহার্দ্য এটা বহাল না থাকলে রাষ্ট্র অগ্রগতি লাভ করতে পারে না।’
খালিদ হোসেন বলেন, ফেসবুকে কত কথা লিখছে। এর ভেতরে একটা কথা লিখল- আমি মারা গেছি রেস্ট ইন পিস- সীমা থাকা উচিত। মানুষ মনে করছে, আসলে আমি মারা গেছি। আমি মারা যাব তো একদিন।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, আমরা ১৫ মাস কাজ করেছি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে আমরা আরও দুই-তিন মাস আছি। জাতি মূল্যায়ন করবে আমরা কী করতে পেরেছি কী করতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমি এক টাকার দুর্নীতি করিনি। সাড়ে আট কোটি টাকা আমি হাজিদের ফেরত দিয়েছি। এজেন্সির ৩৯ কোটি টাকা সৌদি আরবে ছিল, এগুলো এনে এজেন্সির মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছি। তবে ১৬/১৭ বছরের জঞ্জাল দেড় বছরের ভেতরে পরিষ্কার করা যায় না। উই আর ট্রাইং হার্ড। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আন্তরিকভাবে এবং একেবারে আমরা পরিচ্ছন্ন ট্রান্সপারেন্ট।