৯ম জাতীয় বেতন স্কেল গেজেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে যেতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য তারা পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারের জন্য অপেক্ষা করবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি বলেছেন, নতুন পে স্কেল ২০২৬ সালের শুরু (জানুয়ারি/মার্চ/এপ্রিল) থেকেই কার্যকর হতে পারে। এর জন্য চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটেই প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখা হবে।
সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করতে ২৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খান-কে সভাপতি করে ‘জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫’ গঠন করা হয়েছে।
কমিশনকে সাধারণত ৬ মাসের মধ্যে সুপারিশ জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫ সর্বসাধারণের মতামত জানতে একটি প্রশ্নমালা উন্মুক্ত করেছে। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত আগ্রহী ব্যক্তিরা অনলাইনে এই প্রশ্নমালা পূরণ করে মতামত জানাতে পারবেন। এই প্রশ্নমালায় ন্যায়সংগত ও কার্যকরী বেতন কাঠামোর সুপারিশ প্রণয়নে সহায়ক চারটি প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই গেজেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে না।’
বর্তমানে সর্বোচ্চ (গ্রেড-১) ও সর্বনিম্ন (গ্রেড-২০) বেতনের অনুপাত প্রায় ১০:১। কমিশন নতুন কাঠামোতেও এই অনুপাত ৮:১ থেকে ১০:১-এর মধ্যে বজায় রাখার চিন্তা করছে কমিশন।
বর্তমানে বিদ্যমান ২০টি গ্রেড থেকে গ্রেডের সংখ্যা কমিয়ে ১৫টি বা ১২টি করার প্রাথমিক আলোচনা চলছে।
কমিশনের এক সদস্যের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, নতুন পে-স্কেলের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গ্রেডের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। এ ছাড়া বিদ্যমান পে-স্কেলের তুলনায় গড়ে কী হারে বাড়ানো হবে, সেটাও চূড়ান্ত নয়। তবে ওই সদস্য আভাস দেন—বর্তমানে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত ১০:১, যা নতুন কাঠামোতেও ৮:১ থেকে ১০:১-এর মধ্যে থাকবে। প্রতিবেশী দেশগুলোতেও এ ধরনের অনুপাত প্রচলিত।
ফলে বিদ্যমান ২০টি গ্রেড থেকে গ্রেডের সংখ্যা যদি কমানোও হয়, তার পরেও সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের ক্ষেত্রে একই অনুপাত বহাল রাখার সুপারিশ করবে কমিশন।
জানা গেছে, কমিশন চিকিৎসা ও শিক্ষা ভাতা বাড়ানোর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে একজন কর্মচারী চাকরির শুরু থেকে অবসর পর্যন্ত মাসে ১,৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। কমিশন এ ভাতা বাড়ানোর পাশাপাশি অবসরোত্তর সময়ের জন্যও বাড়তি সুবিধা রাখার পরিকল্পনা করছে। সন্তানদের শিক্ষা ভাতাও বাড়ানোর সুপারিশ থাকবে।