ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলায় মো. রিপন দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেফতার অন্য তিন আসামির দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আসামিরা হলেন, সোহাগ, হৃদয় ইসলাম ও রবিন। এছাড়া আসামি সুজন সরকারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৬ মে) ঢাকার দুটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন আসামি রিপনকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় রিপন দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
অন্যদিকে চার জনের মধ্যে তিন জনের বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড ও ১ জনকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান তার আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে রবিবার (২৫ মে) রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ মামলায় গত ১৩ মে দিবাগত রাতে ঢাকার গ্রিনরোড ও রাজাবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. তামিম হাওলাদার (৩০), পলাশ সরদার (৩০) ও সম্রাট মল্লিককে (২৮)গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। পরের দিন ১৪ মে তাদের কারাগার পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। গত ১৭ মে তাদের ৬ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। পরে ২৩ মে পুনরায় ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এ নিয়ে এ মামলায় মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৩ মে রাত পৌনে ১২টায় সাম্য তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু আশরাফুল আলম রাফি ও মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদকে নিয়ে মোটরসাইকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছিলেন। ফেরার পথে রমনা কালীমন্দিরের উত্তর পাশে পুরাতন ফোয়ারার কাছে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জন আসামি তাদের মোটরসাইকেল দিয়ে ভুক্তভোগী সাম্যের মোটরসাইকেল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তখন সাম্য ও তার দুই বন্ধু আসামিদের কাছে মোটরসাইকেল ধাক্কা দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, পরে অজ্ঞাতনামা আসামিরা সাম্য ও তার বন্ধুকে ইট দিয়ে আঘাত করেন। তাদের কিল, ঘুসি ও লাথি মেরে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এদের মধ্যে একজন আসামি সাম্যকে হত্যা করার উদ্দেশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ডান পায়ের রানের পেছনে আঘাত করে। তার বন্ধু মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদের ডান হাতের কজির ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন।
এরপর গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় সাম্য মাটিতে পড়ে গেলে এবং আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরবর্তী সময়ে সাম্যকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।