শিরোনাম
◈ বিএনপির স্লোগানে, কথায়, কর্মসূচিতে ‘ডিসেম্বর, ডিসেম্বর' ◈ ‘পাকিস্তানি পাসপোর্টে লন্ডনে পাঠিয়ে তারেক রহমানকে হত্যা ছিল পরিকল্পনা’ (ভিডিও) ◈ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ ◈ বাংলাদেশ দ‌লের মধ‌্যমাঠ এখন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা: কোচ কাবরেরা ◈ জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগ (ভিডিও) ◈ বিসিবি সভাপতি ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করলো জাতীয় ক্রীড়া প‌রিষদ ◈ রাজস্ব ভবনে এনবিআর চেয়ারম্যানকে 'অবাঞ্ছিত' ঘোষণা ◈ সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচনে যেতে পারবো না, বললেন নাহিদ (ভিডিও) ◈ ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের পরিচয়পত্র পেশ  ◈ বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপে উপকূলে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি, ১৬ জেলায় জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

প্রকাশিত : ২৯ মে, ২০২৫, ১২:৩২ রাত
আপডেট : ৩০ মে, ২০২৫, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এ এক অন্য রকম আয়নাবাজী: ১২ বছর ধরে অন্যের নামে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি, অবশেষে ফাঁস হলো প্রতারণা

ভুয়া মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী

‘স্যার, আমি জাহালম। আমি আবু সালেক না…আমি নির্দোষ।’ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারকের উদ্দেশে তাঁকে বারবার বলতে দেখা যায়, ‘আমি আবু সালেক না।’ পরে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের পরিবর্তে জেল খাটেন জাহালম, আদালতে হাজিরাও দেন তিনি।

জাহালম ছিলেন পেশায় পাটকলশ্রমিক। পরে মুক্তি পান জাহালম, এ জন্য ক্ষতিপূরণও পান। ২০১৭ সালে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর তখন দেশজুড়ে বেশ আলোচনা তৈরি হয়।

একই রকম ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। তবে সেটি এক আসামির পরিবর্তে অন্যজনের জেল খাটার ঘটনা নয়। এবারের ঘটনাটি একজনের পরিবর্তে আরেকজনের চাকরি করে যাওয়ার, তা–ও এক যুগ ধরে। ছবি  পরিবর্তে এক যুগ ধরে একজনের পরিবর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করেছেন আরেক ব্যক্তি। অবশেষে তদন্তে ধরার পর সম্প্রতি সেই নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।

জানা যায়, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি হয় মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারীর। তবে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ না দিয়ে যোগ দেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। নিয়োগ পেয়েও মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ না দেওয়ায় সেই সুযোগটিকে কাজে লাগান বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মিঞা। আব্দুল ওয়ারেছ আনসারীর জায়গায় নিজের ভাগনেকে নিয়োগ দেন। এ জন্য ভাগনের নাম বদলে আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী রাখা হয়। আবদুল ওয়ারেছ আনসারী নামে শাহজাহান মিঞার ভাগনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাকরি করেন ১২ বছর, দুটি পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন যুগ্ম পরিচালক। সম্প্রতি এক তদন্তে এই তথ্য বেরিয়ে আসার পর মো. শাহজাহান মিঞাকে বরখাস্ত ও তাঁর ভাগনের নিয়োগ বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি নজরে আসায় তাঁর নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। আরও কেউ এমন সুযোগ নিয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, মামা মো. শাহজাহান মিঞার সহযোগিতায় ভুয়া নাম, পরিচয় ব্যবহার করে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরিতে যোগ দেন তাঁর ভাগনে। এ জন্য নিয়োগের ছবিও বদল করা হয়। সেই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবিও পরিবর্তন করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, গত আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়োগে অনিয়ম, কর্মকর্তাদের বয়স পরিবর্তনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তবে ব্যবস্থা নেওয়া হয় খুবই কম।

এদিকে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী প্রকৃত আব্দুল ওরায়েছ আনসারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৩ সালের দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক ও বিসিএস ৩১ ব্যাচে আমি নিয়োগপত্র পাই। আমি যোগদান করি প্রশাসন ক্যাডারে। কিছুদিন আগে আমার কয়েকজন বন্ধু জানান, আমার নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে একজন বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করছেন। এরপর শুনতে পেরেছি তাঁর নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। আইবাস ব্যবহার করে আমাদের (সরকারি চাকরিজীবী) বেতন হয়, যেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বেতনও এই ব্যবস্থার মাধ্যমে হলে বিষয়টা আগেই ধরা পড়ত।’ উৎস: প্রথম আলো।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়