শিরোনাম
◈ মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো ৯৮ বাংলাদেশিকে ◈ ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা করতে আসিনি, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আগে বললেন ট্রাম্প ◈ ছেলেদের স‌ঙ্গে খে‌লে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেবে নারীরা ◈ রোজগারের স্বপ্নে সৌদি আরব গিয়ে ‘না খেয়ে’ হাসপাতালের গেটে প্রাণ হারালেন সাফিউল ◈ ধসে পড়লো মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের সমাধিস্থলের ভেতরের ভবন, নিহত ৫ ◈ কেউ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে: প্রধান উপদেষ্টা ◈ শেখ মুজিবের ত্যাগকে স্বীকার করি, কিন্তু তিনি জাতির পিতা নন: নাহিদ ইসলাম ◈ যানজটে স্থবির কুমিল্লা নগরী: নাগরিক দুর্ভোগ চরমে ◈ সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে চট্টগ্রামের যুবকের মৃত্যু ◈ মেঘনায় ইলিশের সংকট, বিপাকে অর্ধলক্ষ জেলে পরিবার!

প্রকাশিত : ১৫ আগস্ট, ২০২৫, ০৮:২৫ রাত
আপডেট : ১৬ আগস্ট, ২০২৫, ০১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রোজগারের স্বপ্নে সৌদি আরব গিয়ে ‘না খেয়ে’ হাসপাতালের গেটে প্রাণ হারালেন সাফিউল

বাবা, মা ও স্বজনদের আহাজারি যেন থামছেই না গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কামারদহ ইউনিয়নের রসুলপুর বালুপাড়া এলাকার মারা যাওয়া প্রবাসী সাফিউল ইসলামের পরিবারে। গ্রাম মাতিয়ে বেড়ানো ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব, হাস্যোজ্জ্বল প্রাণবন্ত যুবকের অকাল মৃত্যুতে গোটা গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

জানা যায়, দিনমজুর বাবার দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠা যুবক সাফিউল ইসলাম পরিবারের সচ্ছলতার জন্য গত বছরের ১ মে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ ও স্থানীয়ভাবে ১ লাখ টাকা সুদের ওপর টাকা নিয়ে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব পাড়ি জমান তিনি। কিন্তু সৌদি আরব গিয়ে চাকরি না পেয়ে হতাশায় পড়েন সাফিউল। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় বিভিন্ন জায়গায় চাকরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি।

 সাফিউলের পরিবার সূত্র জানায়, চাকরি না পেয়ে ও তার কাছে অর্থ না থাকায় মসজিদে মসজিদে সামান্য খাবার সংগ্রহ করে কখনো রাস্তায় আবার কখানো ফ্লাইওভারের নিচে দীর্ঘ ১৫ মাস অতিবাহিত করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। গত ২৮ জুলাই সৌদি আরবের একটি হাসপাতালের গেটে চিকিৎসা ও খাবারের অভাবে মারা যান।
 
পরিবারের সচ্ছলতার জন্য বিদেশ পাড়ি দেয়া ছেলের অকাল ও মর্মান্তিক মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না তার বৃদ্ধ বাবা-মা এবং গ্রামবাসী। মৃত্যুর খবরে গোটা গ্রামজুড়ে চলছে কান্নার রোল।
 
 বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) মারা যাওয়া সাফিউলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শেষবারের জন্য ছেলের মরদেহ দেখতে ও দালালের শাস্তি চেয়ে বারবার অচেতন হয়ে পড়ছেন তার মা মোছা. মহিলা বেগম ও বাবা মো. জলিল শেখ। তারা বলেন, পরিবারের সচ্ছলতার জন্য একমাত্র আয়ের উৎস ছেলেকে ঋণ করে চাকরির জন্য বিদেশ পাঠিয়ে আজ ছেলেকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। আমাদের ছেলের মরদেহ এখন দেশে আনবো কীভাবে!
 
স্থানীয়রা জানান, একই গ্রামের প্রবাস ফেরত মিস্টারের মাধ্যমে গত বছরের মে মাসে এক সঙ্গে বিদেশ যান সাফিউল ও রনি নামের দুই যুবক। সঠিক কাগজপত্র না থাকায় চাকরি না পেয়ে অর্থ ও খাবারের অভাবে তাদের দুজনের মধ্যে সাফিউল মারা যান ও রনি একই অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের এমন অবস্থার বিষয়ে মিস্টারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও কোনো সুরাহা করেননি তিনি। উল্টো তাদের দিয়েছেন হুমকি। দরিদ্র পরিবারটি অর্থভাবে এখন সাফিউলের মরদেহ দেশে আনতে পারছেন না।
 
সাফিউলের প্রতিবেশী মনির মিয়া জানান, সাফিউলের মৃত্যুর খবরে গোটা গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দালাল মিস্টারের প্রলোভনে পড়ে সাফিউলের মর্মান্তিক অকাল মৃত্যু হয়েছে। সাফিউলের মতো অনেক যুবক মিস্টারের প্রলোভনে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে। দালাল মিস্টারের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
 
ঘটনার পর থেকে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন দালাল। অভিযোগের বিষয়ে জানতে তার বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাকে।

গাইবান্ধা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মো. নেশারুল হক জানান, সাফিউলের মরদেহ দেশে আনতে তার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকারি সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। দ্রুত মরদেহ দেশে আনতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দালালের মাধ্যমে যাতে কেউ বিদেশ না যান, সেই জন্য সবাইকে সর্তক থাকতে হবে।
 
মৃত্যু সাফিউল ইসলাম গোবিন্দগঞ্জের কামারদহ ইউনিয়নের রসুলপুর বালুপাড়া গ্রামের দিন মজুর জলিল শেখের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিল সে। উৎস: সময়নিউজটিভি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়