ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের সমাধিস্থলের ভেতরে অবস্থিত একটি ভবন ধসে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এ দুর্ঘটনায় বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে অন্তত ১২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকায় একটি দরগাহর ছাদের কিছু অংশ ধসে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। দরগাহ শরীফটি ১৬ শতকের ধর্মীয় স্থাপনা ও বাগানের একটি জটিল ভবনের ভেতরে অবস্থিত, যেখানে মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের সমাধি রয়েছে।
যাচাই অযোগ্য একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ২৫-৩০ বছরের পুরনো ভবনটির ছাদ ধসে পড়ার সময় স্থাপনার ভেতরে ১৫-২০ জন ছিলেন, যার মধ্যে দরগাহর ইমামও ছিলেন।
এদিকে, আরেক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লির নিজামউদ্দিন এলাকায় সম্রাট হুমায়ুনের সমাধির একটি অংশের ছাদ ধসে পড়ে। ওই সময় সেখানে অন্তত ১০ জন আটকা পড়েন।
ভারতীয় বার্ত সংস্থা পিটিআইয়ের তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে দিল্লি ফায়ার সার্ভিসে একটি ফোন আসে। সেখানে বলা হয়, সমাধিস্থলের একটি গম্বুজের অংশ ভেঙে পড়েছে। তবে হিন্দুস্তান টাইমসকে কিছু সূত্র জানায়, মূলত সমাধি চত্বরের বাইরে অন্য একটি ভবনের ছাদ ধসে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিষ্ণু কুমার পিটিআইকে বলেন, আমি হুমায়ুনের সমাধিতে কাজ করি। হঠাৎ শব্দ শুনে আমার সুপারভাইজার দৌড়ে আসেন। আমরা দ্রুত লোকজন ও প্রশাসনকে খবর দিই। ধীরে ধীরে আমরা আটকে পড়া মানুষদের বের করে আনি।
কর্তৃপক্ষ জানায়, দিল্লি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ উদ্যোগে উদ্ধার অভিযান চলছে। দক্ষিণ-পূর্ব জেলার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিসিপি) হিন্দুস্তান টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন, ধসে পড়া ছাদের নিচ থেকে মোট ১০ থেকে ১২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিসিপি আরও জানান, স্টেশন হাউজ অফিসার (এসএইচও) ও স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা খবর পাওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও ‘ক্যাটস’অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে আসে। পরে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফও) উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয়।
এই স্মৃতিস্তম্ভটি ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি একটি সমাধিসৌধ, যা পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
হুমায়ুন ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট। তার পুরো নাম ছিল নাসির-উদ-দিন মুহাম্মদ হুমায়ুন। তিনি তার বাবা বাবরের মৃত্যুর পর ১৫৩০ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস