শিরোনাম
◈ বিচারকাজে বাধা ও হুমকি: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ◈ স্বাভাবিক ছিল না চব্বিশের বন্যা : প্রধান উপদেষ্টা ◈ সংশোধন হচ্ছে আইন: সরকারি কর্মচারীকে তদন্ত ছাড়া আট দিনে চাকরিচ্যুত করা যাবে ◈ মুক্তিযোদ্ধা’র সনদ বাতিলের তালিকায় হাসিনা সরকারের সাত মন্ত্রী এমপি’সহ আরো যারা আছেন ◈ বিএনপি নেতা আমানের ১৩ ও তার স্ত্রীর ৩ বছরের সাজা বাতিল ◈ চীন-পাকিস্তানকে মাথায় রেখেই কী রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত? ◈ রেফারির গা‌য়ে বরফ ছুঁ‌ড়ে মারায় ৬ ম্যাচ নিষিদ্ধ হ‌লেন ‌রিয়াল ফুটবলার রুডিগার ◈ রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে সংলাপ: রাজনৈতিক দলগুলো কোন প্রস্তাবেই শতভাগ একমত হয়নি ◈ আর্সেনালের বিরু‌দ্ধে পিএস‌জির ক‌ষ্টের জয় ◈ ২০২৮ সাল থে‌কে ৯৪ ম্যাচের আইপিএল আয়োজনের পরিকল্পনা বি‌সি‌সআি‌ইর

প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৪০ বিকাল
আপডেট : ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আইনি লড়াইয়ে জয়, বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অঞ্জন যুক্তরাষ্ট্রেই থাকছেন

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অঞ্জন রায় কিছুদিন আগে এক ইমেইলের মাধ্যমে জানতে পারেন, দেশটিতে অবস্থান করে পড়ালেখা করার বৈধতা হারিয়েছেন তিনি। তবে আশাহত না হয়ে রুখে দাঁড়ান অঞ্জন। বর্তমানে আদালতের রায়ে নিজের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের বৈধতা ফিরে পেয়েছেন।

বুধবার এপির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে শিক্ষার্থী অঞ্জন রায়ের লড়াইয়ের গল্প। 

যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে ২০২৪ সালের আগস্টে পড়ালেখা শুরু করেন অঞ্জন রায়। গত ডিসেম্বরে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর তিনি জানুয়ারিতে মাস্টার্সের ক্লাস শুরু করেন। ২০২৬ সালের মে মাসে তার মাস্টার্স শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এ মাঝে বেধে যায় বিপত্তি। গত ১০ এপ্রিল ই-মেইলের মাধিমে জানতে পারেন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে পড়াশোনা করার বৈধতা হারিয়েছেন তিনি। যেকোনো সময় তাকে গ্রেপ্তার বা দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।

এ বিষয়ে অঞ্জন বলেন, আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। ভাবতে থাকি, এটা কীভাবে সম্ভব? এরপর আমি এক সহপাঠীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সেবা কার্যালয়ে যাই। সেখান থেকে ডেটাবেস যাচাই করে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে আমার বৈধতা বাতিল করার কারণ তারা জানেন না।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেও একটি ই-মেইল পাই। যেখানে বলা হয়, আমার ভিসা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং যেকোনো সময় আমাকে আটক করা হতে পারে। দূতাবাস সতর্ক করে, আমাকে বাংলাদেশে ফেরত না পাঠিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠিয়ে দিতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন।

সেই সময় দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবলেও পরবর্তীতে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে মনস্থির করেন অঞ্জন। নিজ বাড়িতে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ ভেবে তিনি তার এক আত্মীয়ের বাসায় চলে যান। ক্লাসে যাওয়া বন্ধ রাখেন। ইন্টারনেটও ব্যবহার করেননি।

তিনি বলেন, শিক্ষকরা আমার প্রতি সহানুভূতিশীল থাকায় ক্লাসে না আসার বিষয়টি বুঝতে পারেন।

অঞ্জন জানান, এ সপ্তাহে আদালতের রায়ে নিজের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের বৈধতা ফিরে পেয়েছেন। ফিরেছেন নিজের অ্যাপার্টমেন্টে। তারপরও অজানা আশঙ্কায় রুমমেটদের অনুরোধ করেছেন, কেউ তার খোঁজ করতে আসে কি না, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে।

অঞ্জনের মতো অনেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে সাফল্যের মুখ দেখেছেন। দেশজুড়ে ফেডারেল বিচারকরা বিশেষ নির্দেশ দিয়ে আপাতত শিক্ষার্থীদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত করছেন। সাময়িক হলেও এই উদ্যোগে স্বস্তি ফিরে এসেছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

আটলান্টায় ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় অঞ্জনসহ ১৩৩ জন বাদি রয়েছেন। বিচারকরা তাদের পক্ষে রায় দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন।

গত মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, যেসব বিদেশি নাগরিক দেশের স্বার্থবিরোধী কাজে নিয়োজিত, তাদের ভিসা বাতিল করা হবে। তাদের মধ্যে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলি গণহত্যাবিরোধী ও ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরাও অন্তর্ভুক্ত। তিনি জানান, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগও আনান হবে।

তবে ভিসা বাতিলের সংবাদ পেয়েছেন এমন অনেক শিক্ষার্থী দাবি করেন, তারা বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ছাড়া আর তেমন কিছুই করেননি। অনেকে স্পষ্ট করে বলতেও পারেননি কেন তাদেরকে এ ধরনের অভিযোগের আওতায় আনা হয়েছে।

অঞ্জন ও অন্যান্য বাদীদের পক্ষের আইনজীবী চার্লস কাক যুক্তি দেন, শিক্ষার্থীদের ভিসা বা বৈধতা বাতিলের কোনো এখতিয়ার সরকারের নেই। তিনি গত সপ্তাহে আদালতে দাবি করেন, সরকার ভয়-ভীতি দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের নিজ উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করতে চাইছে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়