রাশিদুল ইসলাম: [২] সম্প্রতি মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ মুইজু। নির্বাচনের প্রচারণা চালানোর সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় আসলে তিনি দেশ থেকে ভারতের সেনাদের বিতাড়িত করবেন। ডিসি নিউজনাউ
[২] এবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মুইজু জানালেন, তার দেয়া সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে তিনি এখনও বদ্ধপরিকর। সোমবার রাতে বিজয় উদ্যাপনের সময় সমর্থকদের মুখোমুখি হন মুইজু। এসময় তিনি বলেন, মালদ্বীপের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি বিদেশি সেনাদের পক্ষে দাঁড়াবেন না। জনগণ আমাদের জানিয়ে দিয়েছে যে তারা মালদ্বীপে আর কোনো বিদেশি সেনা দেখতে চায় না।
[৩] মুইজুকে বরাবরই চীনপন্থি নেতা হিসেবে দেখা হয়। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চীনের সঙ্গে ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে ভারতের। মুইজুর নির্বাচনে জয় এবং তার ভারতবিরোধী অবস্থান নয়াদিল্লির জন্য গুরুতর আঘাত। গত শনিবার মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়েই কার্যত নির্ধারিত হয়ে গেছে যে চীন ও ভারতের মধ্যে কোন দেশ দ্বীপরাষ্ট্রটির ওপর সব থেকে বেশি প্রভাব ফেলতে পারবে।
[৪] বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।
[৫] তার বিরুদ্ধে মুইজুর অভিযোগ ছিল যে, তিনি ভারতকে সীমাহীন সুবিধা দিয়েছেন এবং কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই ভারতীয় সেনাদের মালদ্বীপে অবস্থানের অনুমোদন দিয়েছেন। মুইজুর দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসকে ব্যাপকভাবে চীনপন্থি হিসেবে দেখা হয়। তার নির্বাচনী প্রচারণার প্রধান বিষয়বস্তু ছিল মালদ্বীপের সার্বভৌমত্ব ইস্যু। তার দাবি, ভারতীয় সেনাদের অবস্থানের কারণে দ্বীপরাষ্ট্রটির সার্বভৌমত্ব হুমকিতে পড়েছে। দলটি বছরের পর বছর ধরে ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণা চালিয়ে আসছিল।
[৬] অন্যদিকে সোলিহর দাবি ছিল, মালদ্বীপে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি শুধু মাত্র দুই সরকারের মধ্যেকার চুক্তির অধীনে একটি ডকইয়ার্ড নির্মাণ করার জন্য এবং এতে তার দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের ঝুঁকি নেই। দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতা আবদুল্লাহ ইয়ামিন ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।
[৭] এসময় তিনি মালদ্বীপকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ করে তুলেছিলেন। চীনের এই বিশাল প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য রেলপথ, বন্দর এবং হাইওয়ে নির্মাণ করা। যদিও পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে চীন এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে নিজের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।