রাশিদুল ইসলাম: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে খুনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ১৪ দিনের জন্যে জামিন পেয়েছেন। তার আইনজীবী গোহর খানের বরাত দিয়ে রয়টার্স এতথ্য জানিয়েছে। সিজিটিএন
বুধবার পুলিশ এক আইনজীবী খুনের মামলায় তাকে জড়ায়। ওই আইনজীবী ইমরানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে চেয়েছিলেন। ইমরান বলেছেন, তিনি প্রায় দেড়শটি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন, কিন্তু তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই মিথ্যা। বৃহস্পতিবার ইমরান সন্ত্রাসবিরোধী ও দুর্নীতিবিরোধী আদালত এবং রাজধানী ইসলামাবাদের আদালতে হাজির হয়ে ডজনের বেশি মামলায় আগাম জামিন চান। আইনজীবী খুনের মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ইমরানকে দুই সপ্তাহের আগাম জামিন দেয়।
পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তার বিরুদ্ধে হওয়া একের পর এক মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে আগাম জামিনের জন্য একাধিক আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) এই শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হলে তার সমর্থকরা ফের সহিংস বিক্ষোভ দেখাতে পারেন বলে আশঙ্কাও রয়েছে। ৭০ বছর বয়সী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। গত বছর আস্থাভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সময় থেকেই তার সঙ্গে পাকিস্তানের প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর বিরোধ দেখা যাচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটির ইতিহাসের প্রায় পুরোটা সময়ই সামরিক বাহিনী প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষে শাসন করেছে, আর রাজনৈতিক বিরোধের মীমাংসা হয়েছে আদালতে। দুর্নীতির অভিযোগে ইমরানকে গত ৯ মে ইসলামাবাদ আদালত চত্বর থেকে গ্রেপ্তার করার পর তার সমর্থকরা সামরিক বাহিনীর একাধিক স্থাপনায় ভাংচুর চালালে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকটে ভোগা, ২২ কোটি জনসংখ্যার পারমাণবিক শক্তিধর দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন উদ্বেগ শুরু হয়।
দিনকয়েক পর ইমরানকে মুক্তি দিলেও তার বিরুদ্ধে নতুন নতুন অভিযোগে মামলা হতে থাকে। গত বছর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আগাম নির্বাচনের দাবিতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া ইমরান অবশ্য বলছেন, তিনি গ্রেপ্তার হতে প্রস্তুত।
এদিকে বুধবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বলেছে, ৯ মে যে সহিংসতা হয়েছে তার পরিকল্পনাকারী ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। ইমরানের জায়গায় প্রধানমন্ত্রী হওয়া শাহবাজ শরিফ আগাম নির্বাচনের দাবিও প্রত্যাখ্যান করেছেন। দেশটিতে এ বছরের শেষদিকে এমনিতেই সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সেই নির্বাচনে তিনি যেন অংশ নিতে না পারেন সেজন্যই একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে বলেও ইমরানের অভিযোগ। সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিরোধ মীমাংসায় পিটিআইয়ের এই চেয়ারম্যান সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও সরকার সেই প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে।