যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর ভারতের প্রধান টেক্সটাইল হাব তিরুপুর, নয়ডা ও সুরাটের বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মার্কিন বাজারে ভারতের রপ্তানি মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনস (এফআইইও)।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি এস সি রালহান বলেন, টেক্সটাইল ও পোশাকশিল্প এরই মধ্যে ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মতো স্বল্প ব্যয়ের প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে বাজার হারাচ্ছে। এখন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মার্কিন শুল্ক কার্যকর হলে ভারতীয় পণ্যের প্রতিযোগিতার ক্ষমতা আরও কমে যাবে।
ট্রাম্পের শুল্কের প্রতিবাদে মার্কিন পণ্য বয়কটের ডাক ভারতে
তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রায় ৫৫ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রগামী ভারতীয় রপ্তানি, যার পরিমাণ প্রায় ৪৭-৪৮ বিলিয়ন ডলার, এখন মূল্য অসুবিধার কারণে অপ্রতিযোগিতামূলক হয়ে পড়বে।
ঝুঁকিতে অন্য খাতও
এফআইইও সভাপতি আরও জানান, শুধু টেক্সটাইল নয়, চিংড়িসহ ভারতের সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিতেও বড় ধাক্কা আসছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৪০ শতাংশ ভারতীয় সামুদ্রিক খাদ্য আমদানি করে। ফলে এই শুল্ক বৃদ্ধি ভারতের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে দেবে, চাষিদের সংকটে ফেলবে এবং বিপুল মজুত ঝুঁকিতে পড়বে।
অন্যদিকে, কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি (সিআইটিআই) ভারত সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটির চেয়ারম্যান রাকেশ মেহরা বলেন, ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে শুধু রপ্তানি আয় নয়, ভারতে অসংখ্য শ্রমিকের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে। তাই সরকারের কাছ থেকে কাঁচামাল সরবরাহ, আর্থিক সহায়তা ও নীতি সহায়তা জরুরি।
সিআইটিআই প্রস্তাব করেছে, ঋণের মূলধন ও সুদ প্রদানে এক বছরের জন্য অবকাশ দেওয়া হোক। আর এফআইইও বলেছে, সংকট মোকাবিলায় স্বল্প সুদের ঋণ, রপ্তানি ক্রেডিট সহায়তা ও সুদ ভর্তুকির মতো সুবিধা বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য প্রয়োজন।
এফআইইও মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা ও ‘ব্র্যান্ড ইন্ডিয়া’ প্রচারণার মাধ্যমে বৈশ্বিক বাজারে নতুন করে ভারতীয় পণ্যের আকর্ষণ বাড়াতে হবে।
শিল্প নেতারা সতর্ক করেছেন, যদি দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া না হয় তবে শুধু টেক্সটাইল নয়, চামড়া, সিরামিক, কেমিক্যাল, হস্তশিল্প ও কার্পেট শিল্পও বড় ক্ষতির মুখে পড়বে। সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস