পাকিস্তানে বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে তিন শতাধিক। নিহতদের মধ্যে ৩০৭ জনই খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বাসিন্দা। এ ছাড়া, গিলগিট বাল্তিস্তানে পাঁচজন আর কাশ্মীরে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ জন। পাকিস্তানের দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
এর আগে, খাইবার পাখতুনখাওয়ায় ২২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। এখনো উত্তরাঞ্চলে আটকে রয়েছে বহু মানুষ। ভারী বৃষ্টি, বন্যা আর ভূমিধসের কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট। এ কারণে আটকে পড়াদের উদ্ধারে বেশি সময় লাগছে। হেলিকপ্টার দিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার মিশনের একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় হেলিকপ্টারে থাকা পাঁচজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
আল-জাজিরার সংবাদদাতা কামাল হায়দার জানান, বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টারটি একটি সামরিক আকাশযান ছিল। তিনি বলেন, ‘প্রত্যন্ত এলাকায় সহায়তা পৌঁছাতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টারটি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার ছিল।’
প্রবল বন্যা ও ভূমিধসের কারণে দেশটির উত্তরাঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। মানসেরা নামক একটি পর্যটক এলাকা থেকে প্রায় ১ হাজার ৩০০ পর্যটককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অঞ্চলটিতে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
আগামী কয়েক ঘণ্টা পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বাসিন্দাদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রাদেশিক সরকার বুনের, বাজৌর, সুয়াত, শাংলা, মানসেহরা এবং বাট্টাগ্রাম জেলাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুর্যোগকবলিত এলাকা ঘোষণা করেছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় মোট বাৎসরিক বৃষ্টির প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই হয় বর্ষাকালে। এই বৃষ্টি কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খুব দরকারি হলেও অনেক সময় বড় বিপর্যয় ডেকে আনে। এ মৌসুমে ভূমিধস আর আকস্মিক বন্যা প্রায়ই দেখা যায়। সাধারণত জুনে শুরু হয়ে সেপ্টেম্বরের শেষে বর্ষা থামে। ভারতের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে শুক্রবারও উদ্ধারকর্মীরা পাথর ও ধ্বংসাবশেষের নিচে জীবিতদের খুঁজে ফিরছিলেন। এর এক দিন আগে সেখানে প্রবল বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে প্রায় ২০০ জন।