তেহরানে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলায় ইরানের শীর্ষ পরমাণুবিজ্ঞানী সাইয়্যেদ মোস্তাফা সাদাতি-আরমাকি ও তাঁর পরিবারের সব সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসনিম। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বিজ্ঞানীর স্ত্রী, তিন সন্তান এবং শ্বশুর-শাশুড়ি।
তাসনিমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাদাতি-আরমাকি ছিলেন ইরানের বৈজ্ঞানিক অভিজাত শ্রেণির একজন সদস্য। সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, ইসরায়েল এই হামলায় ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক আবাসিক এলাকা ও সাধারণ নাগরিকদের টার্গেট করেছে।
এই হত্যাকাণ্ড ইসরায়েল কর্তৃক ইরানি বিজ্ঞানীদের টার্গেট করে পরিচালিত চলমান অভিযানের অংশ হিসেবেই ঘটেছে। গত ১৩ জুন ইরানে এক আকস্মিক হামলার মধ্য দিয়ে এই অভিযানের শুরু হয়েছিল। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এখন পর্যন্ত ইরানে এক ডজনের বেশি পরমাণু বিশেষজ্ঞকে হত্যা করার দাবি করেছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে আরেকটি ইরানি সংবাদমাধ্যম নূর নিউজ জানিয়েছে, মোহাম্মদ রেজা সাদেগি নামের আরও এক পরমাণুবিজ্ঞানী ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আগেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। সাদেগি ছিলেন তাঁর ক্ষেত্রের একজন শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ। ইসরায়েলের চ্যানেল-৯ জানিয়েছে, তিনি হচ্ছেন আইডিএফের হাতে নিহত ১৭তম ইরানি পরমাণুবিজ্ঞানী।
উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে হামলা চালায়। তারা দাবি করেছিল, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি অস্বীকার করে জানিয়েছে, এর পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।
তেহরানও ইসরায়েলের ওই অভিযোগ জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করে এবং এই হামলাকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে মন্তব্য করে। পরে ইরানও পাল্টা হামলা চালায়।
দুই দেশের সংঘাতের মাঝে ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রও সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় এবং তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় বি-২ বোমারু বিমান এবং টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এর জবাবে ইরান কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায়।
আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইরান ও ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। পরে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এই বিষয় নিশ্চিত করে। তবে হুঁশিয়ার করে দেয়, শত্রুর পক্ষ থেকে যেকোনো লঙ্ঘনকারী কর্মকাণ্ডে তারা দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাবে। সূত্র: আজকের পত্রিকা