আল-জাজিরা: ইসরাইলের রাজনৈতিক ভাষ্যকার ওরি গোল্ডবার্গ বলেছেন, ইসরাইল সরকার যুদ্ধবিরতির আগে ইরানে তার সকল লক্ষ্য অর্জন করার যে দাবি করেছে, তা হাস্যকর।
‘‘অন্তত বলতে গেলে এটা আসলেই স্পষ্ট নয় যে, ইসরায়েলের লক্ষ্য আসলে কী ছিল,’’ তেল আবিব থেকে আল জাজিরাকে বলেন গোল্ডবার্গ।
তিনি বলেন, গত সপ্তাহে আমরা ইসরায়েলকে পারমাণবিক কর্মসূচির শিরচ্ছেদ থেকে শুরু করে সরকার পরিবর্তন পর্যন্ত সবকিছু নিয়ে কথা বলতে শুনেছি।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলির কিছু ক্ষতি হলেও রাজনৈতিক ভাষ্যকার গোল্ডবার্গ বলেন, ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নাকি ধ্বংস করা হয়েছে তা এখনও ‘‘সম্পূর্ণ অস্পষ্ট’’। আর যেহেতু ইরান থেকে ইসরায়েলের প্রতি কখনও ‘‘আসন্ন, অনিবার্য’’ পারমাণবিক হুমকি ছিল না, তাই পরিস্থিতির মূলত কিছুই পরিবর্তন হয়নি।
গোল্ডবার্গ আরও বলেন, ইরানের আক্রমণে ক্রমবর্ধমান ক্ষতি এবং ট্রাম্প প্রশাসনের পূর্বাভাসযোগ্য চাপের কারণে ইসরায়েল সম্ভবত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।“ট্রাম্পের গাড়িতে ইসরায়েলি ঘোড়া বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নেতানিয়াহুর আর কোনও বিকল্প ছিল না,” বলেন গোল্ডবার্গ।
রাজনৈতিক এই ভাষ্যকার বলেন, নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে উদ্ধারে আসার জন্য বাজি ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ট্রাম্প তাই করেছেন এবং সেকারণে নেতানিয়াহু ট্রাম্পের লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করতে বাধ্য। তার (ট্রাম্পের) লক্ষ্য ছিল শেষ পর্যন্ত আঞ্চলিক চুক্তি নিশ্চিত করা এবং আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু না করা।
এদিকে, ইরানিরা আশা প্রকাশ করেছেন, ইসরায়েল বুঝতে পারবে যে, ইরানে আক্রমণ করা ছিল তাদের একটি ‘কৌশলগত ভুল’।তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্ল্ড স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ফোয়াদ ইজাদি আল জাজিরাকে বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে, ইসরায়েল ইরানে লেবাননের সাথে তার অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি করতে চায়।
‘‘যুদ্ধবিরতি দাবি করে কিন্তু যখন ইচ্ছা আক্রমণ করে এবং যাকে ইচ্ছা হত্যা করে। কিন্তু এই পরিকল্পনা কার্যকর হবে না,’’ বলেন তিনি।
ইরানি অধ্যাপক আরও বলেন, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলি সম্পূর্ণরূপে কার্যকর এবং আজ সকালে আমাদের কাছে ক্ষেপণাস্ত্রের শেষ রাউন্ড ছিল।..তাই ইরানি পক্ষ আশা করে, ইসরায়েলিরা বুঝতে পারবে যে, ইরানে আক্রমণ করা একটি কৌশলগত ভুল ছিল।
‘‘তারা সরকার পরিবর্তন করতে পারেনি, যদিও তারা প্রকাশ্যে এটির জন্য অনুরোধ করেছিল। তারা ইরানের ব্যালিস্টিক কর্মসূচি বন্ধ করতে পারেনি, এবং তারা ভেবেছিল যে ইরানি নেতাদের হত্যা করে সামরিক বাহিনী অকার্যকর হয়ে পড়বে। তা ঘটেনি," বলেন ইজাদি।