স্পোর্টস ডেস্ক : ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) সবশেষ মৌসুমেও উঠেছিল ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ। সেই আসরের একটি ম্যাচ নিয়ে বিসিবির অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট (আকু) তদন্ত করেছে। তদন্ত শেষ ব্যাটার মিনহাজুল আবেদীন সাব্বিরকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ঘটনায় ন্যূনতম পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় লিস্ট এ টুর্নামেন্ট ডিপিএলে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব বনাম গুলশান ক্রিকেটের ম্যাচ নিয়ে তদন্ত শেষে এই সুপারিশ করেছে এসিইউ। সেই ম্যাচে দুইটি বিতর্কিত আউট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
ম্যাচের ৩৬তম ওভারে ওপেনার রহিম আহমেদ লেফট-আর্ম স্পিনার নিহাদুজ্জামানের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে শট খেলার কোনো চেষ্টা না করেই সহজে স্টাম্পড হন। আরও বড় চমক আসে ৪৪তম ওভারে, যখন সাব্বির ব্যাট হাতে ক্রিজে থেকে বেরিয়ে এসে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন, আর গুলশানের উইকেটকিপার মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন অনায়াসে তাকে স্টাম্পড করে দেন।
আকুর সেই নথি অনুযায়ী ক্রিকবাজ জানিয়েছে, সাব্বির সন্দেহভাজন বুকমেকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং প্রস্তাব পেয়েও বোর্ডকে অবিহিত না করার মাধ্যমে বিসিবির অ্যান্টি-করাপশন কোডের একাধিক ধারা ভঙ্গ করেছেন।
মামলাটি এখন বিসিবির অ্যান্টি-করাপশন ট্রাইব্যুনালে গিয়েছে, যেখানে কোডের ধারা–৫ অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া চলবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা অন্তত পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা সুপারিশ করছি, যা আট থেকে দশ বছর বা তারও বেশি হতে পারে। এই অপরাধের গুরুত্ব ও ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবেই এমন প্রস্তাব। মোহাম্মদ আশরাফুলের আট বছরের শাস্তির মতো মামলাও এর নজির।'
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, সাব্বির নিয়মিতভাবে একটি বিদেশি নম্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন, যা বিদেশি বুকমেকার সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এতে আন্তর্জাতিক চক্র জড়িত থাকতে পারে এবং প্রয়োজনে আইসিসির আকু ও ইন্টারপোলের সহযোগিতা নেয়া উচিত। যদিও সাব্বিরের এই আচরণ ক্ষতিকর, তবে বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী লড়াইকে এটি আরও জোরালো করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনটি আরও বলেছে, 'এই ঘটনা একটি সতর্কবার্তা এবং ভবিষ্যতে দুর্নীতি প্রতিরোধে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার পথ তৈরি করবে।
শাস্তির পাশাপাশি, আকু বিসিবিকে কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে বলেছে, যেগুলো হচ্ছে–ড্রেসিংরুমে কঠোর যোগাযোগ নীতি, গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দুর্নীতি পর্যবেক্ষক নিয়োগ, বেটিং বাজারে রিয়েল টাইম পর্যবেক্ষণ যেন কোনো ধরণের অস্বাভাবিক কিছু ঘটলে তা দৃষ্টিগোচর হয়।
যদি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে নিষেধাজ্ঞা শেষে খেলায় ফিরতে চাইলে সাব্বিরকে পুনর্বাসন কর্মসূচিতে অংশ নিতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম–তরুণ খেলোয়াড়দের দুর্নীতির ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করা, যেটি অনেক আইসিসি সদস্য দেশেও অনুসৃত হয়। তথ্যসূত্র, সময়নিউজ